Kali Puja 2024: প্রায় ৫০০ বছরের পুরনো এই কালীপুজো। প্রাচীন এই কালী পুজোকে কেন্দ্র করে হাড় হিম করা রহস্যে ঘেরা একাধিক কাহিনী লুকিয়ে রয়েছে। লোক মুখে শোনা যায়, একটা সময় ডাকাতি করতে যাওয়ার আগে ডাকাতরা গভীর জঙ্গলের মধ্যে থাকা এখানকার দক্ষিণা কালীর মন্দিরের সামনে এসে নর বলি দিত। কেউ কেউ বলেন, এক সময়কার প্রবল প্রতাপশালী রঘু ডাকাত এই কালী মন্দিরে এসে সাধনা করে গেছেন।
হুগলি জেলার পাণ্ডুয়ার সিমলাগড় দক্ষিণা কালী মন্দির (Dakshina Kali Temple)। বহু পুরনো এই কালী মন্দির ঘিরে এলাকায় নানা জনশ্রুতি রয়েছে। এখানকার স্থানীয়দের কেউ কেউ বলেন, শেরশাহsj জিটি রোড তৈরির আগে থেকে এখানকার কালীপুজো (Kalipuja) শুরু হয়ে গিয়েছিল। একটা সময় এই গোটা এলাকা গভীর জঙ্গলে ভরা ছিল। ডাকাত দল দাপিয়ে বেড়াত গোটা এলাকায়।
শোনা যায়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সেনাবাহিনীর চলাচলের জন্য এই এলাকার রাস্তার গুরুত্ব বাড়তে থাকে। ঠিক সেই সময় থেকেই স্থানীয় মানুষজনও নিজেদের ভয়-ডর কাটিয়ে মন্দিরে পুজো দেওয়া শুরু করেন। দক্ষিণা কালীর মন্দিরের ওপর মানুষের বিশ্বাস প্রবল ভাবে বাড়তে শুরু করে। এলাকার প্রবীণরা জানিয়েছেন, লক্ষণ ভট্টাচার্যের পরিবারের আদি পুরুষের আমল থেকেই এই দক্ষিণা কালীর মন্দিরে কালীপুজো শুরু হয়েছিল। এই মন্দিরে দেবী কালিকা পূজিতা হন দক্ষিণা কালী রূপে। আগে এই এলাকার নাম ছিল হরিহরপুর। পরে সিমলাগড় কালীর নামে এলাকার নাম হয়েছে সিমলাগড়। এখানকার কালীমাতা শ্মশানে কালি, ডাকাত কালী নামেও পরিচিত।
আরও পড়ুন- TMC Mla: 'বিচারপতিরা সবাই বিজেপির লোক', মমতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের আশঙ্কা দাপুটে তৃণমূল বিধায়কের
এলাকায় আরও জনশ্রুতি, ভট্টাচার্য পরিবারেরই সদস্য নটোবর ভট্টাচার্য মা কালীর পুজো করতে গিয়ে মন্দিরের সামনে নর-মুণ্ড থাকতে দেখেছিলেন। পুজো না দিয়েই তিনি সেদিন ফিরে গিয়েছিলেন। এরপর দিন চারেক পুজো নাকি বন্ধ ছিল। কথিত আছে, মা কালী স্বয়ং এই নটোবরের স্বপ্নে এসেছিলেন।
আরও পড়ুন- Cyclone Dana Updates: আতঙ্ক বাড়াচ্ছে ঘূর্ণিঝড় 'ডানা', আছড়ে পড়েই তছনছ করবে বাংলা?
কেন তিনি পুজো বন্ধ করলেন তা জানতে চেয়েছিলেন। নটোবর কালী মাতার কাছে মন্দিরে নর বলি বন্ধের আর্তি জানিয়েছিলেন। এলাকাবাসীদের বিশ্বাস, তারপর থেকেই স্বয়ং দেবীর ইচ্ছাতেই এই মন্দিরে নরবলি দেওয়া বন্ধ হয়ে যায়। এখন এই মন্দিরে ছাগ বলির প্রথা চালু রয়েছে। কালীপুজোর দিনগুলিতে সিমলাগড়ের এই দক্ষিণা কালীর মন্দিরে দূর-দূরান্ত থেকে ভক্তরা এসে ভিড় জমান।
কীভাবে যাবেন সিমলাগড় দক্ষিণা কালীর মন্দিরে?
বর্ধমান-হাওড়া মেইন লাইনের লোকাল ট্রেনে গেলে সিমলাগড় স্টেশনে নামতে হবে। এখান থেকে হেঁটে যাওয়া যেতে পারে। মিনিট ১০-১৫ সময় লাগবে। অথবা সিমলাগড় স্টেশনে নেমে টোটো ভাড়া করে নিতে পারেন। মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই পৌঁছে যাবেন। সড়ক পথে গেলে পাণ্ডুয়ার পরেই জিটি রোডের ধারে মন্দিরটি পড়বে। বর্ধমানের দিক থেকে গেলে রাস্তার ডান দিকে পড়বে এই মন্দির।