Dilip Ghosh Jagannath Temple Digha: মুখ্যমন্ত্রীর আমন্ত্রণে দীঘার জগন্নাথ মন্দিরে সস্ত্রীক দিলীপ ঘোষ। উদ্বোধনের পর বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ সস্ত্রীক জগন্নাথ দর্শনে রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি। এদিন বিকেলে স্ত্রী রিঙ্কুকে নিয়ে মন্দিরে প্রবেশ করেন রাজ্য বিজেপির দাপুটে নেতা।
রাজ্য সরকারের আমন্ত্রণকে সম্মান জানিয়েই আজ উদ্বোধনের দিনই দীঘার ঐতিহাসিক জগন্নাথ মন্দিরে পৌঁছে গেলেন সস্ত্রীক দিলীপ। মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস তাঁকে উত্তরীয় পরিয়ে সম্বর্ধনা জানান। দিলীপ ঘোষ আগেই জানিয়েছিলেন উদ্বোধনের দিন তিনি জগন্নাথ মন্দির পরিদর্শন করবেন। কথা রাখলেন তিনি। উলুবেড়িয়া থেকে সরাসরি স্ত্রী রিঙ্কুকে নিয়ে বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ জগন্নাথ মন্দিরে আসেন রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষ। ঘুরে দেখেন মন্দির চত্ত্বর। এরপরই সরাসরি মন্দিরের গর্ভগৃহে প্রবেশ করেন তিনি।
এদিকে একদিকে যখন হাইকোর্টের অনুমতিতে কাঁথিতে সনাতনী সমাবেশ করছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তার মাঝেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমন্ত্রণে দীঘার জগন্নাথ মন্দির দর্শনে রাজ্য বিজেপির আরেক দাপুটে নেতা দিলীপ ঘোষ। এপ্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বিরোধী দলনেতা বলেন, " কোন ব্যক্তি কী করবেন, কী বলবেন বা বলবেন না তার কোন মন্তব্য আমি করব না। আমি একজনের মিথ্যাচারকে আমি কাউন্টার করি তার নাম মমতা বন্দোপাধ্যায়"।
দীঘার জগন্নাথ মন্দিরে পা রাখলেও কাঁথিতে শুভেন্দুর সভা মাড়ালেন না দিলীপ ঘোষ। এ প্রসঙ্গে সাংদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি বলেন, "আমাকে তো সেখানে কেউ আমন্ত্রণ জানাননি। দিঘায় আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। শ্যামপুরেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তাই গিয়েছি।"তিনি আরও বলেন, "অক্ষয় তৃতীয়ায় অজস্র অনুষ্ঠান হয়। সব জায়গায় কি যাওয়া সম্ভব? আমি যেখানে আমন্ত্রণ পেয়েছি সেখানেই যাচ্ছি।"
এদিকে আজ দিলীপ ঘোষের দীঘার জগন্নাথ ধামে যাওয়া নিয়ে সংবাদ মাধ্যমের সামনে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। তিনি বলেছেন, " ওনার ওখানে যাওয়াকে দল সমর্থন করেনা। দিলীপ দার ওখানে যাওয়াটা ব্যক্তিগত ব্যাপার। যখন একদিকে হিন্দুরা মার খেয়েছে মুর্শিদাবাদে, বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে, মন্দির ভাঙ্গা হয়েছে তখন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ওখানে যাওয়া মানে আমার মনে হয় গোটা বিষয়টা ইগনোর করা। আমাদের অনেকের আমন্ত্রণ ছিল। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা যাব না। শুনেছি দিলীপ দার স্ত্রীকে আলাদাভাবে আমন্ত্রণ করা হয়েছিল।"
উল্লেখ্য অক্ষয় তৃতীয়ার দিন দুপুর ৩টে বেজে ১৫ মিনিটে মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরেই দীঘায় জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধন হয়। সকালে যজ্ঞের পর ভাত, ডাল মিষ্টি সহ ৫৬ ভোগ নিবেদন। আজই দর্শনার্থীদের খুলে যাচ্ছে মন্দির। ৩ বছর ধরে যারা মন্দির নির্মাণে কাজ করেছে সকলকে ধন্যবাদ জানান মুখ্যমন্ত্রী। সকলের সহযোগিতা না পেলে মন্দির নির্মাণ সম্ভব ছিল না, উল্লেখ মমতার। সকালে মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতেই বিগ্রহের প্রাণ প্রতিষ্ঠা হয়। মন্দিরের দ্বারোদ্ঘাটন করে বিশেষ আরতি করেন মুখ্যমন্ত্রী। দীঘার জগন্নাথ মন্দিরের দায়িত্বে ইসকন।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধন করে বলেন, 'মন্দিরের শীর্ষে রয়েছে বিষ্ণুর অষ্টধাতুর চক্র। ৫০০ এর বেশি গাছ লাগানো রয়েছে মন্দিরে। দীঘার জগন্নাথ মন্দির হাজার হাজার বছর ধরে তীর্থস্থান হিসাবে মাথা উচু করে দাঁড়িয়ে থাকবে। এই মন্দির ধর্মীয় তরঙ্গ সৃষ্টি করবে"। মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, ইসকন দায়িত্ব নিয়ে প্রতিদিনের ভোগ সেবা করবে। দীঘায় প্রতিদিন দারুমূর্তি পুজিত হবে। সারা বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার বার্তাও দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, "মন্দিরের প্রসাদ ও ছবি বাংলার প্রতিটি বাড়ি বাড়ি যাবে"।
গতকালই মহাযজ্ঞ হয়েছে দিঘার মন্দিরে। পূর্ণাহুতি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কলিঙ্গ শৈলীতে তৈরি জগন্নাথ দেবের মন্দিরটি পুরীর মন্দিরের আদলেই তৈরি হয়েছে। বেলা ৩টে বেজে ১৫ মিনিটে দিঘায় জগন্নাথ মন্দিরের দ্বারোদঘাটন করেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপরেই মন্দির সাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়।