/indian-express-bangla/media/media_files/2025/02/01/Pc0Gvwxas5iTL2vmRSaa.jpg)
তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
দুর্গাপুরে বেসরকারি মেডিকেল কলেজের ছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় যখন মমতা সরকারকে কোনঠাসা করার চেষ্টা করছে বিজেপি তখনই গোটা ঘটনার নিন্দা জানিয়ে অপরাজিতা বিল নিয়ে কেন্দ্রের উদাসীনতার প্রশ্নে বিজেপিকে নিশানা অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের। গোটা ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মোট তিনজনকে গ্রেফতার করেছে আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের আধিকারিকরা। একাধিক স্থানে অভিযান চালিয়ে এই তিনজনকে আটক করেছে। এর আগে বেশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছিল। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আজই তাদের আদালতে পেশ করা হবে। এই গ্রেফতারের পরই মামলার তদন্ত আরও ত্বরান্বিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এক্স হ্যাণ্ডেলে এক পোস্টে অভিষেক লিখেছেন, ‘এই ধরণের নৃশংস অপরাধের জন্য প্রয়োজন কঠোর আইন। কিন্তু সেই দায়িত্ব থেকে নরেন্দ্র মোদী সরকার হাত গুটিয়ে নিয়েছে। অপরাজিতা বিল বিধানসভা থেকে পাশ হয়ে এক বছরের বেশি সময় কেটে গেলেও, তা এখনও আইনে পরিণত হল না। এটা ধর্ষকদের প্রতি ও ধর্ষণের মত ঘটনাকে নীরব সমর্থন। অপরাজিতা বিল নিয়ে কেন্দ্রের নীরবতা যা ধর্ষণের মত ঘটনায় সম্মতির সমতুল্য। সমাজের সবচেয়ে অমানবিক মানুষদেরকে আমাদের কন্যা, বোন ও মায়েদের শিকার করতে উৎসাহিত করেছে। “নারী সুরক্ষা” নিয়ে মুখে বড় বড় বুলি আওড়ে বাস্তবে বিল সংস্কারের পথ অবরুদ্ধ করা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত নয় তো কি?’
Heinous crimes like rape demand the harshest condemnation, and the toughest laws. Yet the @narendramodi Govt. has chosen delay over duty. More than a year since the Aparajita Anti-Rape Bill was proposed, the @BJP4India at the Centre has done nothing to convert words into law.… pic.twitter.com/Me6TNdvcAx
— All India Trinamool Congress (@AITCofficial) October 11, 2025
এদিকে আজ রবিবার দুর্গাপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন অভয়া মঞ্চের সদস্যরা। কথা বলবেন নির্যাতিতার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে। দুর্গাপুরের ঘটনা প্রসঙ্গে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “এই ঘটনা অত্যন্ত লজ্জাজনক। পশ্চিমবঙ্গ মহিলা কমিশনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এমন নৃশংস ঘটনায় কমিশন নীরব কেন? রাজ্যের নারীরা নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন"।
বিজেপি নেতা ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার এক্স-এ এক পোস্টে লিখেছেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গকে ধর্ষক ও অপরাধীদের জন্য নিরাপদ আশ্রয়স্থল করে তুলেছেন।” তিনি উল্লেখ করেছেন, আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার পর দুর্গাপুরে দ্বিতীয় ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। তিনি অভিযোগ করেছেন, ওড়িশার ওই মেডিকেল ছাত্রীকে ক্যাম্পাস থেকে তুলে নিয়ে কাছের জঙ্গলে গণধর্ষণ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, গ্রাম থেকে শহর, হাসপাতাল থেকে বাড়ি—কোথাও নারীদের নিরাপত্তা নেই।"
আরও পড়ুন-বাংলায় SIR নিয়ে ব্রেকিং আপডেট, দিনক্ষণ নিয়ে কী জানালো নির্বাচন কমিশন?
বিজেপি আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য বলেন, এই নৃশংস ঘটনার ফলে দুর্গাপুর জুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। মানুষ দ্রুত বিচার এবং জবাবদিহিতার দাবি করছে। তিনি দাবি করেন, এই ঘটনা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের অধীনে আইন-শৃঙ্খলার ব্যর্থতার স্পষ্ট প্রতিফলন। তিনি এই ঘটনার স্বচ্ছ এবং নিরপেক্ষ তদন্তেরও দাবি জানিয়েছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার রাত ৮টা থেকে ৮:৩০ মিনিটের মধ্যে নির্যাতিতা কলেজ ক্যাম্পাস থেকে তার বন্ধুর সঙ্গে ডিনারের জন্য বের হন। ফেরার পথে তিনজন অজ্ঞাত পরিচয় যুবক তার পথ আটকায়। অভিযুক্তরা ছাত্রীর মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে জঙ্গলে টেনে নিয়ে যায়, যেখানে তাকে গণধর্ষণ করা হয়। তারা তাকে কাউকে কিছু বললে ভয়াবহ পরিণতির হুমকি দেয় এবং মোবাইল ফেরতের জন্য টাকা দাবি করে। ইতিমধ্যে পুলিশ নির্যাতিতা তরুনীর বয়ান রেকর্ড করেছে। পুলিশ তার সহপাঠীকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে। পাশাপাশি গোটা ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। প্রমাণ সংগ্রহের জন্য ঘটনাস্থলে একটি ফরেনসিক দল পাঠানো হয়েছে। জাতীয় মহিলা কমিশনের একটি দলও দুর্গাপুরে পৌঁছেছে। কমিশনের সদস্য অর্চনা মজুমদার জানান, বাংলায় নারীর বিরুদ্ধে অপরাধ বেড়েই চলেছে এবং পুলিশ এই ধরনের ঘটনায় যথাযথ ভূমিকা নিচ্ছে না, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।
আরও পড়ুন- 'বাংলা এখন ধর্ষকদের স্বর্গরাজ্যে',দুর্গাপুর গণধর্ষণ নিয়ে মমতা সরকারকে বেনজির আক্রমণ