/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/12/modi-mamata-2025-10-12-09-22-48.jpg)
'বাংলা এখন ধর্ষকদের স্বর্গরাজ্যে',দুর্গাপুর গণধর্ষণ নিয়ে মমতা সরকারকে বেনজির আক্রমণ
দুর্গাপুরে বেসরকারি মেডিকেল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রীকে গণধর্ষণ কাণ্ডে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রকাশ্যে বিবৃতির দাবি জানাল বিজেপি।
রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “এই ঘটনা অত্যন্ত লজ্জাজনক। পশ্চিমবঙ্গ মহিলা কমিশনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এমন নৃশংস ঘটনায় কমিশন নীরব কেন? রাজ্যের নারীরা নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন, অথচ সরকার নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে।” তিনি আরও বলেন, “দুর্গাপুরের ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীর বিবৃতি চাইছি। আমাদের সবাই পথে নামবে। নারী সুরক্ষা নিয়ে আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে এসেছি, ভবিষ্যতেও করব। বাংলার মা–বোনরা ঐক্যবদ্ধ হোন। বাংলায় কোনও মহিলা সুরক্ষিত নন। মা–বোনরা দেবী দুর্গার ভূমিকা নিন।”
নারী সুরক্ষা নিয়ে ফের প্রশ্নের মুখে বাংলা। আরজি কর কান্ডের বছর পার হতে না হতেই রাজ্যের আরও এক মেডিকেল কলেজে চিকিৎসক পড়ুয়াকে গণ ধর্ষণের ঘটনা। আর এনিয়ে উত্তাল রাজ্য-রাজনীতি। বিজেপি নেতা ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার এক্স-এ এক পোস্টে লিখেছেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গকে ধর্ষক ও অপরাধীদের জন্য নিরাপদ আশ্রয়স্থল করে তুলেছেন।” তিনি উল্লেখ করেছেন, আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার পর দুর্গাপুরে দ্বিতীয় ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। তিনি অভিযোগ করেছেন, ওড়িশার ওই মেডিকেল ছাত্রীকে ক্যাম্পাস থেকে তুলে নিয়ে কাছের জঙ্গলে গণধর্ষণ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, গ্রাম থেকে শহর, হাসপাতাল থেকে বাড়ি—কোথাও নারীদের নিরাপত্তা নেই।
বিজেপি আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য বলেন, এই নৃশংস ঘটনার ফলে দুর্গাপুর জুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। মানুষ দ্রুত বিচার এবং জবাবদিহিতার দাবি করছে। তিনি দাবি করেন, এই ঘটনা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের অধীনে আইন-শৃঙ্খলার ব্যর্থতার স্পষ্ট প্রতিফলন। তিনি এই ঘটনার স্বচ্ছ এবং নিরপেক্ষ তদন্তেরও দাবি জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন- ইটবৃষ্টি, মারধর, পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর, তোলপাড় ফেলা ঘটনায় বিরাট 'অ্যাকশন' পুলিশের
এদিকে, তৃণমূল কংগ্রেসের মন্ত্রী শশী পাঁজা বিজেপিকে নিশানা করে গোটা ঘটনাকে রাজনৈতিক রঙ দেওয়ার চেষ্টার তীব্র নিন্দা করেছেন। তিনি বলেছেন, মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের ঘটনা নিয়ে রাজনীতি করা উচিত নয়। তিনি জানান, নির্যাতিতার পরিবার ওড়িশা থেকে এসেছেন। তারা পুলিশি তদন্তের উপর আস্থা রেখেছেন। মন্ত্রী আরও বলেছেন, কলকাতা দেশের অন্যতম নিরাপদ শহর এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার নারী ক্ষমতায়নের জন্য কাজ করে চলেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার রাত ৮টা থেকে ৮:৩০ মিনিটের মধ্যে নির্যাতিতা কলেজ ক্যাম্পাস থেকে তার বন্ধুর সঙ্গে ডিনারের জন্য বের হন। ফেরার পথে তিনজন অজ্ঞাত পরিচয় যুবক তার পথ আটকায়। অভিযুক্তরা ছাত্রীর মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে জঙ্গলে টেনে নিয়ে যায়, যেখানে তাকে গণধর্ষণ করা হয়। তারা তাকে কাউকে কিছু বললে ভয়াবহ পরিণতির হুমকি দেয় এবং মোবাইল ফেরতের জন্য টাকা দাবি করে। ইতিমধ্যে পুলিশ নির্যাতিতা তরুনীর বয়ান রেকর্ড করেছে। পুলিশ তার সহপাঠীকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে। পাশাপাশি গোটা ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। প্রমাণ সংগ্রহের জন্য ঘটনাস্থলে একটি ফরেনসিক দল পাঠানো হয়েছে। জাতীয় মহিলা কমিশনের একটি দলও দুর্গাপুরে পৌঁছেছে। কমিশনের সদস্য অর্চনা মজুমদার জানান, বাংলায় নারীর বিরুদ্ধে অপরাধ বেড়েই চলেছে এবং পুলিশ এই ধরনের ঘটনায় যথাযথ ভূমিকা নিচ্ছে না, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।
আরও পড়ুন- বাংলায় SIR নিয়ে ব্রেকিং আপডেট, দিনক্ষণ নিয়ে কী জানালো নির্বাচন কমিশন?