Gift exchange festival at Burdwan University on the day after Saraswati Puja: প্রতিবারের মতো এবারেও সরস্বতী পুজোর (Saraswati Puja) পরের দিন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলাপবাগ ক্যাম্পাসে একই ছবি। বসন্তের এই দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক ছাত্র ও ছাত্রীরা তত্ত্বের ডালি সাজিয়ে অনন্য এক উৎসবে মেতে উঠলেন। সেই ৭০-এর দশক থেকে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে চলে আসছে এই তত্ত্ব আদান-প্রদান রীতি। মধুর এই রেওয়াজ তুলে দিতে সায় নেই কারও। তাই অতীতের সেই রেওয়াজ অক্ষুন্ন রেখেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা তত্ত্ব আদান-প্রদান উৎসবে মেতে উঠেছিলেন এবারেও।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলাপবাগ চত্বরে রয়েছে একগুচ্ছ ছাত্রাবাস এবং ছাত্রীনিবাস। প্রতি বছর সরস্বতী পুজোয় আনন্দ উৎসবে মেতে ওঠেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। গত কয়েক দশক ধরে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে আসছে ছাত্র ও ছাত্রীদের মধ্যে তত্ত্ব আদান-প্রদান রীতি। ছাত্ররা ও ছাত্রীরা ছাত্রাবাস-ছাত্রী নিবাসে গিয়ে চকোলেট, মিষ্টি, ফুল ইত্যাদি উপহার দিয়ে আসেন। অনেকে বলেন, এভাবেই আসলে উপহারের মোড়কে অনেকেই চুপিচুপি মনের কথাটিও পেড়ে ফেলন সাধের মানুষটির সামনে। এককথায় ভালোলাগা আর ভালোবাসার সম্পর্কগুলির একটি বীজ বপন করে দেয় বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের এই 'সোনালী রেওয়াজ'।
গোলাপবাগ ক্যাম্পাসে রয়েছে গার্গী, নিবেদিতা, সরোজিনী এবং মীরাবাঈ প্রভৃতি নামের ছাত্রীবাস (হোস্টেল)। আর রয়েছে চিত্তরঞ্জন, অরবিন্দ, নেতাজি, বিবেকানন্দ এবং রবীন্দ্র নামের ছাত্রাবাস। এমনিতে সারা বছর ছেলেদের হোস্টেলে মেয়েদের আর মেয়েদের হোস্টেলে ছেলেদের ঢোকার ক্ষেত্রে কড়াকড়ি থাকে। ব্যতিক্রম শুধুমাত্র সরস্বতী পুজোর এই ক'টা দিন। সত্তরের দশক থেকে রীতি মেনে সরস্বতী পুজোর পরের দিনে ছাত্র-ছাত্রীরা একে অপরের আবাসে যাওয়ার ছাড়পত্র পান। তত্ত্ব আদান-প্রদানের জন্যই এই ছাড়। পরস্পরের আবাসে উপহারের ডালি সাজিয়ে পৌঁছে যান ছাত্র ছাত্রীরা।
আরও পড়ুন- Chinmoykrishna Das: ফের চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের জামিন আর্জি খারিজ, বাংলাদেশ সরকারকে হলফনামা জমার নির্দেশ
মঙ্গলবার সকালে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলাপবাগ ক্যাম্পাসে বেলা গড়াতেই দেখা গেল সেই ছবি। সুন্দর সাজে সেজে ছাত্রীরা হাতে ফুল, মিষ্টি ও উপহার নিয়ে রওনা দিয়েছিলেন ছাত্রাবাসের উদ্দেশে। তত্ত্ব নিয়েই সটান তাঁরা পৌঁছে গিয়েছিলেন ছাত্রাবাসে। ঠিক একই কায়দায় ছাত্ররাও তত্ত্ব হাতে পৌঁছে গিয়েছিলেন ছাত্রীনিবাসে। রীতিমতো ঢাক, কাঁসর, ঘন্টা বাজিয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা তত্ত্ব আদান-প্রদান উৎসবে মেতে উঠেছিলেন।
আরও পড়ুন- South 24 Parganas News: ৬৫ বছরের বৃদ্ধাকে মদ খাইয়ে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ, হাড়হিম কাণ্ডে তোলপাড়
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে এই রীতি ঠিক কবে বা কেন চালু হয়েছিল তা স্পষ্ট করে আজও কেউ বলতে পারেন না। তবে অনেকেই মনে করেন, সত্তরের দশকে এই রীতি চালু হয়। এর কারণ হিসেবে মনে করা হয়, বছরের অন্য সময় ছাত্রী আবাসে ছাত্রদের ঢোকার সুযোগ থাকে না। শুধুমাত্র সরস্বতী পুজোর সময় এক আবাসন থেকে অন্য আবসনে যাওয়ার 'রুদ্ধদ্বার' খোলা হয়। এই সুযোগেই সরস্বতী পুজোর আবহে তত্ত্ব আদান-প্রদানের মাধ্যমে মনের মানুষের একটু কাছাকাছি আসার সুযোগও তৈরি হয়ে যায়। যদিও ছাত্র-ছাত্রীদের মতে, “এদিনের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বন্ধুত্বের সম্পর্ক আরও নিবিড় হয়।" তত্ত্ব আদান-প্রদানে অংশ নেওয়া জ্যোতি ঘোষ, প্রিয়াঙ্কা কুণ্ডু ,সায়ন্তন দাসগুপ্তরা বলেন, “সরস্বতী পুজোকে সামনে রেখে এবছর তত্ত্ব আদান প্রদান খুব ভালো ভাবে করা গেছে।"
আরও পড়ুন- Soumitra Khan: বাংলার কত মানুষ নেশা করেন? কেন্দ্রের রিপোর্ট তুলে ধরে রাজ্যকে নিশানা সৌমিত্রের