Donald Trump-Harvard University: হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাময়িক আন্তর্জাতিক ছাত্রছাত্রীদের ভর্তি প্রক্রিয়ার উপর স্থগিতাদেশ জারি করল ট্রাম্প প্রশাসন। বড় পদক্ষেপ সংকটে ৬,৮০০ আন্তর্জাতিক পড়ুয়া।
হার্ভার্ডে পড়ার স্বপ্ন ভেস্তে গেল ভারতীয় পড়ুয়াদের। তহবিল বন্ধের পর ট্রাম্প সরকারের আরও একটি বড় পদক্ষেপ। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় আপাতত আর আন্তর্জাতিক ছাত্রছাত্রীদের ভর্তি করতে পারবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে হিংসা ছড়ানো, চিনের কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে যোগসাজশ এবং ইহুদিবিদ্বেষের মতো গুরুতর অভিযোগ তুলে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র দপ্তর। চিঠিতে স্পষ্ট বলা হয়েছে, “হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় সহিংসতা ছড়ানো, ইহুদিবিদ্বেষে মদত দেওয়া এবং চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে যোগাযোগ রাখার অভিযোগে তদন্তাধীন। বিদেশি ছাত্র ভর্তি করানো কোনও অধিকার নয়, এটি একটি বিশেষ সুবিধা মাত্র।”
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের এক বড় পদক্ষেপে আন্তর্জাতিক পড়ুয়াদের ভর্তি প্রক্রিয়া আপাতত বন্ধ হয়ে গেল বিশ্বের অন্যতম সেরা বিশ্ববিদ্যালয় হার্ভার্ডে। হোমল্যান্ড সিকিউরিটির তরফে জানানো হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়টির স্টুডেন্ট অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ ভিজিটর প্রোগ্রাম (SEVP) সার্টিফিকেশন আপাতত স্থগিত করা হয়েছে এবং আগামী ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে কোনও আন্তর্জাতিক পড়ুয়া আর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারবেন না।
এই সিদ্ধান্তের ফলে হার্ভার্ডে পড়াশোনা করা ৬,৭৯৩ জন আন্তর্জাতিক পড়ুয়া চূড়ান্ত অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছেন। তাঁদের মধ্যে একটি বড় অংশই ভারতীয়। এখন তাঁদের হয় অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থানান্তর হতে হবে, নয়তো তাঁরা হারাতে পারেন আমেরিকায় থাকার আইনি অধিকার। হার্ভার্ডের বিরুদ্ধে ইহুদিবিদ্বেষ, হিংসাত্মক কার্যকলাপ এবং চিনা কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে যোগাযোগ রাখার মতো গুরুতর অভিযোগ এনেছে ট্রাম্প প্রশাসন।
অভিযোগে বলা হয়েছে, বিদেশি ছাত্রদের থেকে বিপুল পরিমাণ ফি আদায় করে তহবিল বাড়াচ্ছে হাভার্ড, যা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশ্য এবং নীতির পরিপন্থী। তবে চিঠিতে এটাও উল্লেখ করা হয়েছে, হাভার্ড যদি ৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করে এবং অভিযোগের যথাযথ জবাব দেয়, তাহলে স্টুডেন্ট অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ ভিজিটর প্রোগ্রাম (SEVP)-এর সার্টিফিকেশন পুনরায় কার্যকর হতে পারে। সেক্ষেত্রে আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে আবারও বিদেশি পড়ুয়াদের ভর্তি নিতে পারবে হার্ভার্ড।
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় এই সিদ্ধান্তকে “অবৈধ” এবং “সংবিধান-বিরোধী” বলে অভিহিত করেছে। এক বিবৃতিতে তারা জানিয়েছে,"আমরা আন্তর্জাতিক ছাত্র ও গবেষকদের স্বাগত জানাতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই সিদ্ধান্ত আমাদের প্রতিষ্ঠান ও দেশের ক্ষতি করবে।" অর্থনীতির অধ্যাপক জেসন ফারম্যান বলেন, “এই সিদ্ধান্ত প্রতিটি স্তরেই ভয়াবহ। আন্তর্জাতিক ছাত্রছাত্রী ছাড়া হার্ভার্ড কল্পনাই করা যায় না।”বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৭.২% ছাত্রই আন্তর্জাতিক। তাঁদের মধ্যে অনেকেই ভিসা, ইনটার্নশিপ এবং শিক্ষার ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।
স্বরাষ্ট্র সচিব ক্রিস্টি নোয়েম স্পষ্ট ভাষায় জানান, "বিদেশি ছাত্র ভর্তি করানো কোনও অধিকার নয়, এটি একটি বিশেষ সুবিধা।" তিনি আরও দাবি করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে হামাসপন্থী ও আমেরিকা-বিরোধী প্রচারের আঁতুড়ঘর হয়ে উঠেছে। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে। যাঁরা ইতিমধ্যেই ডিগ্রি সম্পন্ন করেছেন, তাঁদের স্নাতক ডিগ্রি প্রদান করা হবে। তবে যাঁরা এখনও পাঠ সম্পন্ন করেননি, তাঁদের অন্যত্র স্থানান্তরিত হতে হবে। প্রসঙ্গত, গত ১৩ মে ট্রাম্প প্রশাসন হার্ভার্ডকে দেওয়া সরকারি অনুদান হ্রাস করে। প্রশাসনের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়টি ইহুদি-বিরোধী আন্দোলনের কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠেছে এবং ক্যাম্পাসে হামাসপন্থী কার্যকলাপও চলছে। হোয়াইট হাউস আরও জানায়, একাধিক শীর্ষস্থানীয় মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয় একই ধরনের তদন্তের মুখোমুখি।