Small Business Ideas: চপ-তেলেভাজা বিক্রি করেই স্বনির্ভরতার দিশা দেখাচ্ছেন হিমাংশু সেন।
তাও আবার মাত্র ১ টাকায়। পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের পাঁচড়া গ্রামের বাসিন্দা হিমাংশু সেন। পাঁচড়া দক্ষিণপাড়ায় তাঁর বাড়ির কাছেই রয়েছে তাঁর প্রসিদ্ধ চপ-তেলে ভাজার দোকান। প্রতিদিন দুপুর ৩ টায় তাঁর চপের দোকান খুলে যায়। তারপর থেকেই পরিবারের সবাই মিলে দোকান চালান। দোকানের এক ধারে বসে গ্যাসের উনানে গরম তেলের কড়াইয়ে ফুলুরি, সিঙ্গারা, ভেজিটেবল চপ, আলুর চপ ভাজেন হিমাংশু। এছাড়াও দোকানে ঘুগনি এবং অল্পস্বল্প করে রসোগোল্লা, পান্তুয়া, ল্যাংচা এবং মাখা সন্দেশও মেলে। তবে চপ বিক্রিই তাঁর মূল ব্যবসা।
দোকান খোলার কিছু সময় পর থেকেই খরিদ্দারের ভিড় বাড়তে শুরু করে। খরিদ্দার সামলান হিমাংশুবাবুর স্ত্রী বন্দনাদেবী, ছেলে কাশীনাথ ও পুত্রবধূ শম্পা। চপ ভাজা থেকে শুরু করে ঘুগনি বিক্রি এই দুই কাজ থেকেই রাত ৯টা পর্যন্ত সেন পরিবারের কেউ এক মুহুর্তও অবসর পান না। ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে হিমাংশুবাবু ১ টাকা টাকা মূল্যেই প্রতি পিস চপ-তেলেভাজা, বিক্রি করে চলেছেন। গ্যাস-সহ নিত্য প্রয়োজনীর দ্রব্যের আস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির বাজারেও চপ-তেলেভাজার দাম এক পয়সাও বাড়াননি তিনি।
দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক বৃদ্ধির বাজারে ১ টাকা পিসে চপ-তেলেভাজা বিক্রি করে লাভের মুখ দেখার রহস্যটা কী ? এই প্রশ্নের উত্তরে হিমাংশু সেন বলেন, "আমাদের পরিবার এক সময়ে আর্থিকভাবে অত্যন্ত দুর্বল ছিল। রোজগারের বিকল্প কোনও পথ সেভাবে খুঁজে না পেয়ে আমার বাবা বিশ্বনাথ সেন অনেক বছর আগে বাড়ি লাগোয়া জায়গায় চপের দোকান খুলে বসেন। এলাকার মানুষের আর্থিক পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে সেই সময় ৮০ পয়সা পিস দরে চপ-তেলে ভাজা বিক্রি করা শুরু করেছিলেন। এরপর বেশ কয়েক বছর মাত্র ২০ পয়সা দাম বাড়িয়ে ১ টাকা পিস দরেই চপ-তেলেভাজা বিক্রি করে চলেছি। শুধু এক প্লেট ঘুগনির দাম ২ টাকা।"
আরও পড়ুন- Abhishek Banerjee: পাখির চোখ ২০২৬! তৃণমূলে খোলনলচে বদল চান অভিষেক, প্রস্তাব পাঠিয়েছেন দলনেত্রীকে
আরও পড়ুন- West Bengal Weather Update: কবে থেকে বঙ্গে শীত? কী বলছে হাওয়া অফিস? বঙ্গোপসাগরে ফের নিম্নচাপ
প্রতিদিন ১০ কেজি বেসনের চপ-তেলেভাজা’ বিক্রি হয় হিমাংশু বাবুর দোকানে। শুধু ১০ কেজি বেসনই নয়। এর সঙ্গে প্রতিদিন লাগে ১ বস্তা আলু, ৫ কেজি মটর, হাজার টাকার সরষের তেল সহ অন্যান সামগ্রী। হিমাংশু বাবু জানান, এইসব সামগ্রী কিনে দোকান চালানোর জন্যে প্রতিদিন তার প্রায় ৩৫০০ টাকার মতো খরচ হয়। ১ টাকা পিস দরে চপ- তেলেভাজা আর ২ টা প্লেট দরে ঘুগনি বিক্রি করেও গড়ে প্রতিদিন ৫০০- ৭০০ টাকা লাভ থাকে।
জামালপুর পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি ভূতনাথ মালিক বলেন, "চপ-তেলেভাজার দোকান করেও স্বনির্ভর হওয়া যায়, এটা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তা নিয়ে তখন কম ব্যাঙ্গ-বিদ্রুপ করেনি বিরোধীরা। বিরোধীদের সেই সব কটাক্ষের জবাব হিমাশুবাবুই দিয়ে দিয়েছেন। তিনি প্রমাণ করে দিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী ভুল কিছু বলেননি।"