Abhishek's proposal to reshuffle the tmc organizational level in municipal areas: "দলে থাকতে গেলে ব্যক্তিগত স্বার্থকে পিছনে ফেলে মানুষের স্বার্থে কাজ করতে হবে। তাঁদের মতামতকেই গুরুত্ব দেবে দল।" তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এমনই সুপারিশ পাঠিয়েছেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শহর কলকাতা বাদে রাজ্যের সমস্ত পুরসভা এলাকায় সাংগঠনিকস্তরে ব্যাপক রদবদলের প্রস্তাব দলনেত্রীকে লিখিত আকারে পাঠিয়েছেন অভিষেক। যদিও এব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই। ২০২৬-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলে খোলনলচে বদল চান তৃণমূলের প্রধান সেনাপতি, এমনই মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
পুজোর সময়টায় বিদেশে ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। চোখের অস্ত্রোপচারের জন্য তাঁকে বিদেশে যেতে হয়েছিল। একটানা বেশ কিছুদিন জনসমক্ষে দেখা যায়নি তাঁকে। আরজি কর কাণ্ড নিয়ে যখন উত্তাল বাংলা সেই সময় অভিষেকের অনুপস্থিতি বারবার নজর কেড়েছে। জানা গিয়েছে, রাজ্যের পুরসভা এলাকাগুলিতে দলের সাংগঠনিক স্তরে ব্যাপক রদবদলের সুপারিশ করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
কলকাতা বাদে রাজ্যের সমস্ত পুর এলাকায় সাংগঠনিক পদে এই রদবদলের সুপারিশ তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে লিখিত আকারে পাঠিয়েছেন। একই সঙ্গে বেশ কিছু জেলায় দলের সভাপতি পদে বদলেরও সুপারিশ করেছেন অভিষেক। অভিষেকের এই সুপারিশ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই।
মোটের উপর ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচন কি পাখির চোখ করে এগোতে চাইছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। প্রতিবছর ধর্মতলা একুশে জুলাই তৃণমূলের শহীদ সবার পরপরই দলের সাংগঠনিক তরে ব্যাপক রদবদল ঘটানো হয়। এবার তা হয়নি। সুতরাং এই পরিস্থিতিতে অভিষেকের দেওয়া সুপারিশ তৃণমূল নেত্রী গ্রহণ করার একটা বড় রকমের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
আরও পড়ুন- West Bengal Weather Update: কবে থেকে বঙ্গে শীত? কী বলছে হাওয়া অফিস? বঙ্গোপসাগরে ফের নিম্নচাপ
২০২৬ সালে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। এমনিতেই আরজি কর কাণ্ড-সহ নানা ইস্যুতে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল এখন বেশ খানিকটা ব্যাকফুটে রয়েছে। বিরোধীদের উপর্যুপরি আন্দোলনে কোনও কোনও জায়গায় বেশ কোণঠাসাও লেগেছে জোড়াফুলকে। এই পরিস্থিতিতে দলের সাংগঠনিকস্তরে ব্যাপক বদল এনে বিরোধীদের পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছোঁড়ার ভাবনা মাথায় রয়েছে অভিষেকের। এমনও মনে করছেন কেউ কেউ।
এর আগে ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে রাজ্যজুড়ে জনজাগরণ কর্মসূচি হাতে নিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। জেলায়-জেলায় ব্লকে-ব্লকে ঘুরে জনজাগরণ কর্মসূচি করেছিলেন সর্বভারতীয় তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক। ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগেও তেমনই কোনও কর্মসূচি নিতে পারেন অভিষেক। এতে একদিকে যেমন সাধারণ মানুষের আরও কাছে পৌঁছোনো যাবে, তেমনই দলেরও একেবারে তৃণমূলস্তরের নেতা-কর্মীদের ভাবনাও কাছ থেকে বোঝার সুযোগ মিলবে, এই বিষয়টি মাথায় নিয়েই তেমন কোনও কর্মসূচি নিতে পারেন অভিষেক। রাজনৈকতিক মহলের একাংশ এমনটাই মনে করছেন।
বৃহস্পতিবারই ৩৮-শে পা দিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকাল দিনভর দলের নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি অগণিত সমর্থকদের কাছ থেকে জন্মদিনের শুভেচ্ছাবার্তা পেয়েছেন ডায়মন্ড হারবারে তৃণমূল সাংসদ। জন্মদিনে দূর-দূরান্ত থেকে কলকাতায় আসা দলের কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে মিশে গিয়েছিলেন অভিষেক। তাঁদের আনা কেক কেটেছেন হাসিমুখে। অটোগ্রাফ বিলিয়েছেন, সঙ্গে মিটিয়েছেন সেলফির আবদার। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির সামনে গতকাল তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।