Hooghly News: শখের বসেই যেন অসাধ্য সাধন, বাঁশেই গড়েন অবাক স্থাপত্য! তাকলাগানো রেপ্লিকা চোখ জুড়োবে

Hooghly News: বহু বছর ধরে এই কাজ করে চলেছেন চন্দননগরের গণেশ ভট্টাচার্য। একবার কোনও জিনিস চোখে দেখলে তা একেবারে হৃদয়ে যেন গেঁথে নেন।

author-image
Uttam Dutta
New Update
Hooghly News,Ganesh Bhattacharya,Bamboo,হুগলির খবর,গণেশ ভট্টাচার্য

শিল্পী গণেশ ভট্টাচার্য ও তাঁর অপূর্ব কিছু শিল্পকলা।

Hooghly News: বাঁশ দিয়ে অপূর্ব সব কাজ! তাঁর নিপুণ হাতের অনন্য শিল্পকলার তারিফ না করে পারে না আট থেকে আশি! বাঁশ দিয়ে যে এতকিছু বানানো যায় তা বোধ হয় চন্দননগর হরিদ্রাডাঙায় না এলে বোঝাই যেত না। এখানকারই বাসিন্দা বছর চল্লিশের গণেশ ভট্টাচার্য। তাঁর হাতে বাঁশের তৈরি নানা সামগ্রীর কদর এখন তুঙ্গে। এমনকী সেই সব সামগ্রীর বিক্রিতেই সংসার চালাচ্ছেন এই ব্যক্তি। এককথায় তিনি একজন বাঁশ শিল্পী। হাতে কলমে এই কাজ তিনি কারও কাজ থেকে শেখেননি। কেবল মনের জোরে নতুন কিছু করার তাগিদে পড়াশোনার পাট চুকিয়েই একাজে নেমে পড়েন গণেশ। 

Advertisment

আজ তাঁর হাতের কাজ দেখলে তাক লেগে যাবে সকলের। অসাধারণ নৈপুণ্যতায় ছোট ছোট বাঁশের টুকরো দিয়ে গণেশ বানিয়েছেন  নবনির্মিত সংসদ ভবন, জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি, হাতে টানা রিকশা, আগ্রা ফোর্ট, তাজমহল, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল, চন্দননগর ডুপ্লেক্স মিউজিয়াম, ব্যান্ডেল চার্চ,মক্কা মসজিদ, রেল ইঞ্জিন, টাইটানিক জাহাজ, আইফেল টাওয়ার, কলকাতার ট্রাম, হাওড়া ব্রিজ, দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দির, কালীঘাটের কালী মন্দির, লালকেল্লা, ডাবল ডেকার বাস। 

এছাড়াও প্রায় ১৫০০-এরও বেশি জিনিসের রেপ্লিকা বানিয়েছেন গণেশ ভট্টাচার্য। তাঁর কথায়, "চারদিক এবং উপরটা দেখে নিলে যে কোনও বস্তু বানিয়ে ফেলতে পারি। আসাম বাঁশ দিয়েই আমার কাজ।" বাঁশ জলে পচিয়ে সেটা রোদে শুকিয়ে কেটে কেটে তিনি তৈরি করেন তাঁর শিল্প। কোনও পেরেকের কাজ নেই। এক বিশেষ ধরনের আঠা তিনি বেঙ্গালুরু থেকে আনেন। কাঠের টুকরো আঠায় জুড়ে জুড়ে তৈরি হয় অনবদ্য সব রেপ্লিকা। সেরকম কোনও বাহ্যিক প্রচার তিনি করেন না। তবে সামাজিক মাধ্যমে যেটুকু প্রচার তাতেই তাঁর জিনিস বিক্রি হয়ে যায়। তাঁর বাড়িতে গেলেই দেখা যাবে তিনি কাজ করে চলেছেন।

আরও পড়ুন- Siliguri Bengal Safari Park: ঘাড়ে কামড়, বেঙ্গল সাফারি পার্কে মৃত্যু তিন রয়্যাল বেঙ্গল শাবকের

Advertisment

আরও পড়ুন- West Bengal News Live: রাজ্যসভার ভোটে প্রার্থীর নাম ঘোষণা তৃণমূলের, জহরের ইস্তফায় ফাঁকা হয় আসন

আরও পড়ুন- Bangladesh Unrest: মৌলবাদী বর্বরতায় বাংলাদেশে বিপন্ন হিন্দুরা, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হস্তক্ষেপ দাবি অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির

এত কাজের মধ্যে তাঁর সেরার সেরা কাজ 'রেল গাড়ি' বানানো। প্রায় ২৩ রকম ইঞ্জিন তিনি বানিয়েছেন। সম্প্রতি বালুরঘাটের এক রেস্তোরাঁয় একটি ট্রেনের রেপ্লিকার অর্ডার পেয়েছেন। এই রেলগাড়িটি চলবে এবং সেটি ব্যবহৃত হবে খাবার সার্ভের কাছে। খরচ পড়ছে ৭০ হাজার টাকা। কাজও চলছে জোরকদমে। গণেশের আক্ষেপ, বাঁশ শিল্প প্রায় অবলুপ্তির পথে। কয়েকজন এখনও কাজ করে যাচ্ছেন। তিনিও সেই পথের পথিক। এটা ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্পের মধ্যে পড়ে। কিন্তু সেভাবে সরকারের সাহায্য তাঁরা পাচ্ছেন কোথায়! শত প্রতিকূলতার মধ্যে থেকেও তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। ২০ বছর আগে শুরু ২৫০ টাকা পুঁজি নিয়ে। প্রথম বিক্রি ছিল বাঁশের তৈরি চায়ের কাপ। দেখতে দেখতে ২০টা বছর পার হয়ে গেল। বৃদ্ধা মা, স্ত্রী ও দুই কন্যাকে নিয়ে গণেশের পরিবার। 

দু'চোখে স্বপ্ন আরও নতুন কিছু করার, যেখান থেকে সবাই তাঁকে আরও চিনবে। বিশেষ করে রেল ইঞ্জিনের প্রতি ভীষণ দুর্বলতা তাঁর। গণেশের ইচ্ছে, তিনি নিজে একটি সংগ্রহশালা তৈরি করবেন। যেখানে ১৮৫৩ সাল থেকে শুরু করে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ভারতীয় রেলের সমস্ত ইঞ্জিনের রেপ্লিকা থাকবে। তিনি সারা দেশে বিভিন্ন রেল ইঞ্জিন কারখানা ঘুরে দেখেছেন। গণেশ বলেন, "এখনও অবধি প্রায় শ'খানেকের ওপর রেল ইঞ্জিন পরিবর্তিত হয়েছে। আমি প্রত্যেকটির রেপ্লিকা বানাতে চাই। ছবি আমি পেয়ে যাব গুগুল সার্চ করে। রেল থেকে যদি আগ্রহ দেখায় তাহলে আমি প্রস্তুত।"

Hooghly hooghly news news in west bengal news of west bengal