Junior Doctor's Protest: রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে যখন তরুণী চিকিৎসক ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার বিচারের দাবিতে মুহূর্মুহু স্লোগান চলছে তখন পাশ থেকে কার্নিভালের আসরের অনুষ্ঠানে হাজির থেকে মা দুর্গা ফিরে যাচ্ছেন। রেড রোডে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে রাজ্য সরকারের দুর্গাপুজোর কার্নিভাল। সেখান থেকে পাঁচশো মিটারের মধ্যে চিকিৎসকদের আয়োজনে দ্রোহের কার্নিভাল। আদালতের অনুমতি নিতে হয়েছে চিকিৎসকদের। এদিন বহু সাধারণ মানুষও হাজির হয়েছিলেন এই আন্দোলনে।
ঘড়ির কাঁটায় ঠিক তখন দুপুর দেড়টা। আনশন মঞ্চের সামনে একটু একটু করে ভিড় জমতে শুরু করেছে। যাঁরা বহু দূর থেকে এসেছিলেন তাঁদের অনেকে সকালেই হাজির হয়েছিলেন। অনশন মঞ্চের চৌকির একপাশে বসেছিলেন কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা রিমিতা চট্টোপাধ্যায়। বয়স ৭৫। বাইরে তখন পুলিশ ব্যারিকেড ঠেলতে ব্যস্ত। ব্লক করতে হবে রাস্তা। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় রণসজ্জার ব্যস্ততা। নিমিষেই কাতারে কাতারে মানুষ হাজির হয়েছিলেন ধর্মতলা চত্বরে। যান চলাচল বন্ধ রাখতে হয়।
রিমিতা চট্টোপাধ্যায় বলেন, "আমরা এসেছি সকাল এগারোটায়। মনে এমন যন্ত্রণা যে ঘরে থাকতে পারলাম না। ছুটে চলে এলাম। রাজ্য সরকার কী করে কার্নিভাল করে?" পুলিশকে লক্ষ্য করেও মাঝেমধ্যে স্লোগান চলতে থাকে। অপর্ণা সেন, চৈতী ঘোষাল, উষশী চক্রবর্তী, মানসী সিনহা, দেবলীনা দত্তরাও এদিন হাজির হয়েছিলেন।
আদালত অনুমতি দেওয়ার পর জনতাই ব্যারিকেড খুলে দেয়। প্রথমে বয়স্ক মহিলা ব্যরিকেডে ধাক্কা দেয়। ঢাক-ঢোল বাজাতে বাজাতে রানি রাসমনি রোডে ঢুকতে থাকে আন্দোলনকারীরা। চলতে থাকে স্লোগান।
চারিদিকে যান চলাচল স্তব্ধ হয়ে যায়। তখন রাণি রাসমনি রোডে একদল স্লোগান দিচ্ছে তো, একদল ঢাকঢোল বাজাচ্ছে। উড়ছে জাতীয় পতাকা। সবার মুখে প্রধান স্লোগান আরজি করে ধর্ষণ ও খুনের বিচার চাই। উই ওয়ান্ট জাস্টিস। এদিকে, আজ রেড রোডে পুজো কার্নিভালে ডিউটি পড়েছিল কলকাতা পুরসভার মেডিক্যাল টিমের সদস্য চিকিৎসক তপব্রত রায়ের। রেড রোডের পুজো কার্নিভালে 'অনশনকারী' লেখা ব্যাজ পড়ে গিয়েছিলেন ওই চিকিৎসক। ওই ব্যাজ পড়ার জন্যই ওই চিকিৎসককে পুলিশ আটক করে নিয়ে যায় থানায়, এমনই অভিযোগ।
আরও পড়ুন- Fake Call: পিৎজা অর্ডার-গানের আবদার, কারও চাই বান্ধবী, আজব উৎপাতে 'চিৎপাত' সরকারি কর্মীরা!
এরপর ময়দান থানায় নিয়ে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টার তাঁকে শুধু আটকে রাখা হয়। দুপুর থেকে প্রায় রাত অব্দি থানাতেই আটকে ছিলেন ওই চিকিৎসক। ততক্ষণে ময়দান থানায় জড়ো হয়ে গিয়েছেন দ্রোহের কার্নিভালে অংশ নেওয়া বহু প্রতিবাদী মুখ, সঙ্গে ছিলেন চিকিৎসকদেরও অনেকে। শেষমেষ রাতেই থানা থেকে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপরেও বেশ কিছুক্ষণ ধরে ময়দান থানার সামনে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন আন্দোলনকারীরা। তপব্রত রায় নামে ওই চিকিৎসককে পুলিশ অনৈতিকভাবে আটক করেছিল বলে অভিযোগ আন্দোলনকারীদের। পুলিশকে ক্ষমা চাওয়ানোর দাবিতে চলতে থাকে বিক্ষোভ।