New Update
/indian-express-bangla/media/media_files/2025/01/14/4NMZFMN134LfFD1t7TAM.jpg)
Poush Sankranti: ঢেঁকিতে চাল কোটার কাজে মেতেছেন মহিলারা।
Poush Sankranti: ঢেঁকিতে চাল কোটার কাজে মেতেছেন মহিলারা।
in occassion of poush sankranti dhenki is uses in rural area of purba bardhaman: কথায় আছে 'ঢেঁকি স্বর্গে গিয়েও ধান ভাঙে'। তবে সেই সবই এখন গল্পকথা। হালফিলের সময়ে যন্ত্রের ব্যবহার বহুলাংশে বেড়েছে। তার কারণে সাবেকি ঢেঁকির কদর ফিকে হয়েছে ঠিকই, তবে বঙ্গের প্রত্যন্ত গ্রাম-গঞ্জের মানুষজন ঢেঁকিকে পুরোপুরি ইতিহাসের পাতায় ঠেলতে নারাজ। তাঁরা বরং অতীতের সেই 'সোনালী স্মৃতি' আগলে রাখতেই চান। তাই পৌষ সংক্রান্তি (Poush Sankranti) তিথিতে গ্রামবাংলায় আজও ঢেঁকি তার অস্তিত্ব জানান দেয়। আর এই ঢেঁকি-র সৌজন্যেই একটু হলেও আয়ের পথ খুঁজে পাচ্ছেন রাজ্যের শস্যগোলা হিসাবে পরিচিত পূর্ব বর্ধমান জেলার মহিলারা। পৌষের সংক্রান্তির এই আবহে জেলার রায়না, খণ্ডঘোষ, জামালপুর সহ বিভিন্ন গ্রামীণ এলাকায় এখনও কান পাতলে শুধুই শোনা যাচ্ছে ঢেঁকিতে চাল কোটার শব্দ।
এক সময় পৌষ মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে গ্রামবাংলার মহিলারা ঘরে ঘরে ঢেঁকিতে চাল কোটা শুরু করে দিতেন। ঢেঁকিতে ভাঙা চাল গুঁড়িয়ে তা দিয়েই তাঁরা তৈরি করতেন হরেক রকমের পিঠে-পুলি। কিন্তু যন্ত্রের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় ঢেঁকি এখন যেন মিউজিয়ামে জায়গা করে নিতে বসেছে। ঢেঁকি ছেড়ে গ্রাম বাংলার অনেক মানুষই এখন চাল গুঁড়ানোর মিলে পৌঁছে যাচ্ছেন। তবে তারই মধ্যে বেশ কিছু গ্রামের মানুষ এখনও অতীতের রেওয়াজ বজায় রেখে বাড়ির সাবেকি ঢেঁকিকে আগলে রেখেছেন। যেমনটা আগলে রেখেছেন জামালপুরের শিয়ালী ও কোড়া গ্রামের মানুষজন।
তাঁরা চান না গম ভাঙানোর যন্ত্রে আসা পিঠে-পুলির চালের গুঁড়ো। শিয়ালী ও কোড়া গ্রামের মহিলারা প্রতি বছরের মতো এই বছরেও ঢেঁকিতে ছাঁটা চালের গুঁড়ো দিয়ে পৌষ পার্বণে (Poush Parbon) পিঠে-পুলি তৈরি করে পরিবারের সকলকে তৃপ্ত করেছেন। নিজেদের ঢেঁকিতে অপরের চাল গুঁড়িয়ে দিয়ে সামান্য উপার্জন করছেন তাঁরা।
একই ভাবনার কথা শুনিয়েছেন জেলার গোপালপুর দাসপাড়ার বধূ বুলা রুইদাস, সারথী দাসেরাও। শিয়ালী গ্রামের বধূ কাকলী কোলে বলেন, "ঢেঁকিতে ছাঁটা চালের গুঁড়ি দিয়ে বানানো পিঠে- পুলির স্বাদটাই আলাদা। ঢেঁকিতে ছাঁটা চাল অনেকদিন ধরে রেখেও দেওয়া যায়।" গ্রামেরই অপর বধূ কল্পনা কোলের কথায়, "আমাদের শিয়ালী গ্রামে এখন একটি মাত্রই ঢেঁকি রয়েছে। পৌষ পার্বণের আগে সেই ঢেঁকিতে চাল ভাঙাতে আসেন গ্রামের অনেক মহিলা।" এককথায় উপার্জনের আশায় পৌষে ঢেঁকিতে চাল ভাঙানোর কাজে ঢেঁকির মালিক পরিবারের পুরুষরাও মহিলাদের সঙ্গে হাত লাগান।
আরও পড়ুন- Flat Building Leaning: বাঘাযতীনে হইহই কাণ্ড! আচমকা একদিকে হেলে পড়ল চারতলা ফ্ল্যাট-বাড়ি
শিয়ালী ও কোড়া গ্রামে মঙ্গলবার গিয়ে দেখা যায় গ্রামের এক প্রান্তে মাটির দাওয়ায় বসে ঢেঁকিতে চাল গুঁড়ানোর কাজ করে চলেছেন মহিলা ও পুরুষরা। যন্ত্র ও স্মার্টফোনের যুগে এটা যেন একটা বিরল দৃশ্য। এমনটা দেখে কারও বুঝতে অসুবিধা হবে না, যে গ্রাম বাংলার কিছু মানুষজনের দৌলতে কাঠের তৈরি ঢেঁকি এখনও বিলুপ্ত হয়ে যায়নি। তাই শিয়ালী ও কোড়া গ্রামের রাস্তার পাশে একটি খামারে কাঠের ঢেঁকিতে চাল ঢেলে অন্য প্রান্তে ঢেঁকিতে পা দিয়ে চলছে চাল গুঁড়ো তৈরির কাজ। একই দৃশ্য এদিন দেখা গিয়েছে গোপালপুর দাস পাড়াতেও।
আরও পড়ুন- Gangasagar Mela: অটুট মনোবল! নাগা সাধুর আখড়া থেকে সরকারি অফিসার হওয়ার স্বপ্ন সন্ন্যাসিনীর