Wonder Kid: বয়স মাত্র ২ বছর ৯ মাস। এই বয়সেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাজধানীর নাম সহ পশু-পাখি ও ফুল-ফলের ইংরাজি নাম একেবারে ঠোটস্থ করে ফেলেছে মহম্মদ সাগির মণ্ডল। এরই স্বীকৃতি স্বরূপ India Book Of Records-এ নিজের নাম তুলে পূর্ব বর্ধমানের আউশাগ্রামের বাসিন্দা নিবাসী খুদে সাগির এখন কার্যত 'সেলিব্রিটি' বনে গিয়েছে। তাকে শুভেচ্ছা জানাতে এলাকার বিধায়ক থেকে শুরু করে গণ্যমান্য ব্যক্তি, সবাই এখন পৌঁছে যাচ্ছেন তার বাড়িতে। ছেলের এই সাফল্যে বেজায় খুশি সাগিরের বাবা কায়ূম মণ্ডল ও মা সোমা খাতুন।
বর্ধমান ২ ব্লকের অধীন নবস্তা ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত আউশা কামারপাড়ায় সাগির মণ্ডলের মামার বাড়ি। তাঁর পৈতৃক বাড়ি জেলার মন্তেশ্বরের মামুদপুরে। সাগিরের বি-এ পাশ বাবা কায়ূম মণ্ডল কর্মসূত্রে চেন্নাইয়ে থাকেন। আর বি-এ পাশ করা মা সোমা খাতুন সাধারণ গৃহবধূ। সূচিশিল্পের কাজে তিনি অবশ্য বেশ দক্ষ। সংসারে অভাব অনটন থাকলেও একমাত্র সন্তান সাগির উচ্চ শিক্ষিত হয়ে বড় ডাক্তার হোক, এমনই স্বপ্ন দেখে মা সোমা। মায়ের ইচ্ছা পূরণে খুদে সাগির এখন থেকেই বলতে শুরু করে দিয়েছে, "আমি ডাক্তার হব"।
মন্তেশ্বরের শ্বশুরবাড়ি থেকে এসে কিছুদিন হল সোমা খাতুন তাঁর ছেলেকে নিয়ে আউশাগ্রামে বাবার বাড়িতেই রয়েছেন। ছেলেকে শিক্ষার পাঠ তিনিই দেন। সোমার কথায়, "আমার ছেলের স্মরণশক্তি অত্যন্ত প্রখর। পড়ানোর ছলে সাগির কে
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাজধানীর নাম, বিভিন্ন পশু-পাখি, ফুল-ফলের ইংরাজি নাম সহ দেশের প্রধানমন্ত্রী এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের নাম বলে বলে শোনাতাম। স্মরণশক্তি প্রখর হওয়ায় মাত্র দু’বছর নয় মাস বয়সে সাগির সেই সব ঠোঁটস্থ করে ফেলে। ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডসে ওর নাম তোলার জন্য আবেদন করেছিলাম। সাগিরের স্মরণশক্তির প্রমাণ দিতে প্রশ্ন ও উত্তরের ভিডিও রেকর্ড করে সেখানে পাঠাই। ওরা খতিয়ে দেখে সাগিরের স্মরণশক্তি ও ট্যালেন্টের স্বীকৃতি দিয়েছে।" সম্প্রতি ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডস-এর তরফে তাঁদের বাড়িতে সাগিরের নামে মানপত্র ও মেডেল এসে পৌঁছেছে।
আরও পড়ুন- Rahul Sinha: 'উগ্রবাদী শক্তি ইন্ধনদাতা ফিরহাদ', NIA তদন্তের দাবিতে সোচ্চার রাহুল
আরও পড়ুন- West Bengal News Live: মোবাইল নিয়ে ঢোকা যাবে না তারাপীঠ মন্দিরে, মঙ্গলবার থেকে নয়া নিয়ম চালু
এদিকে খুদে সাগির মণ্ডলের নামে ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডস থেকে মানপত্র ও মেডেল আসার খবরে এখন উচ্ছ্বসিত আউশগ্রামের মামার বাড়ির সদস্যরা। একইভাবে নাতির সাফল্যে আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়েছেন মন্তেশ্বরের মামুদপুর গ্রামে থাকা সাগিরের বাবার বাড়ির লোকজন। সাগিরের দিদিমা ফরিদা বিবি বলেন, "আমাদের পরিবার আর্থিকভাবে স্বচ্ছল নয়। তবু তারই মধ্যে আমি আমার ছেলে শেখ সাইন ও মেয়ে সোমাকে বি-এ পাশ করিয়েছি। কিন্তু ভাগ্য সহায় না হওয়ায় আমার ছেলে বা মেয়ে কারও সরকারি একটা চাকরি পাওয়ার সৌভাগ্য হয়নি। নাতি সাগির এই খুদে বয়সে পড়াশোনায় আকৃষ্ট হয়ে পড়েছে। দু’বছর নয় মাস বয়সেই নাতি সাগির ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডসের মানপত্র ও মেডেল পেয়ে গিয়েছে। এটা আমাদের কাছে অত্যন্ত গর্বের। আমার মেয়ে সোমা স্বপ্ন দেখে তাঁর ছেলে মস্তবড় ডাক্তার হবে। নাতি সাগিরও এখন থেকে বলতে শুরু করে দিয়েছে, ’আমি ডাক্তার হব’। নাতিকে ডাক্তারি পড়ানোর খরচ কীভাবে জোগাড় হবে, তা আমি জানি না। পাশে দাঁড়ানোর জন্য সবার সহযোগিতা প্রার্থনা করছি।"
বর্ধমান উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক নিশীথ মালিক ছোট্ট সাগির মণ্ডলের মামার বাড়িতে পৌঁছে তাকে শুভেচ্ছা জানান। খুদে সাগিরের মেধা ও স্মরণশক্তি বাস্তবে পরখ করে তিনিও স্তম্ভিত হয়ে যান। সাগিরের লেখাপড়ার জন্য আগামী দিনে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের আশ্বাস দিয়েছেন বর্ধমান উত্তরের বিধায়ক ।