India Nato Warning: রাশিয়া থেকে তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানির বিষয়ে ন্যাটো প্রধান মার্ক রুট-এর ১০০ শতাংশ নিষেধাজ্ঞা কড়াভাবে প্রত্যাখ্যান করল ভারত। ভারতের বিদেশ মন্ত্রক স্পষ্ট জানিয়েছে, দেশের নাগরিকদের জ্বালানি নিরাপত্তা ও চাহিদা পূরণই সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার এবং এই বিষয়ে কোনও আপস করা হবে না।
বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, “আমরা এই সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক প্রতিবেদনের প্রতি নজর রাখছি। আবারও জানিয়ে দিচ্ছি, ভারতের মানুষের জ্বালানি চাহিদা পূরণ করা আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার। আমরা বাজারের প্রাপ্যতা ও বৈশ্বিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করেই সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকি। এই বিষয়ে যে কোনও দ্বিমুখী মানদণ্ডের বিরুদ্ধে আমরা বিশেষভাবে সতর্ক থাকব।"
হরদীপ পুরীর আত্মবিশ্বাসী বার্তা
পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরী জানিয়েছেন, ভারত কোনও একটি উৎসের উপর নির্ভর করে না। তিনি বলেন, “ভারতের হাতে বিকল্প উৎস রয়েছে। আমরা গায়ানা, ব্রাজিল, কানাডার মতো দেশ থেকে সরবরাহ বৈচিত্র্য আনতে পারি। সুতরাং আমাদের তেল-গ্যাস সরবরাহ নিয়ে উদ্বেগের কোনও কারণ নেই।”
ন্যাটো ও আমেরিকার কড়া বার্তা
এর আগে, প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুমকি দিয়েছিলেন, যদি রাশিয়া ৫০ দিনের মধ্যে ইউক্রেনের সঙ্গে শান্তিচুক্তিতে না পৌঁছায়, তাহলে যারা রাশিয়া থেকে তেল কিনছে, তাদের বিরুদ্ধে ১০০% কর আরোপ করা হবে।
এই বক্তব্যের রেশ ধরে বুধবার ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রুট বলেন, ভারত, চিন ও ব্রাজিল যদি রাশিয়ার কাছ থেকে তেল ও গ্যাস কেনা চালিয়ে যায় এবং রাশিয়া শান্তি আলোচনায় গুরুত্ব না দেয়, তাহলে এই দেশগুলিকে ‘বিশাল অর্থনৈতিক জরিমানা’ গুনতে হবে।
তিনি সরাসরি মন্তব্য করেন, “আপনি যদি ভারতের প্রধানমন্ত্রী হন, চিনের প্রেসিডেন্ট বা ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট হন এবং রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য চালিয়ে যান, তবে জানিয়ে রাখছি—যদি পুতিন শান্তি আলোচনায় না রাজি হন, তাহলে আপনাদের উপরও ১০০ শতাংশ শুল্ক প্রযোজ্য হবে।”
এই ইস্যুতে ভারতের অবস্থান একেবারে স্পষ্ট—দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা এবং নাগরিকদের স্বার্থে আন্তর্জাতিক চাপের কাছে নতি স্বীকার করবে না। পাশাপাশি, ভারতের মতে, বৈশ্বিক জ্বালানি বাজারে ন্যায্যতা ও বৈচিত্র্য বজায় রাখাও জরুরি। এই প্রেক্ষাপটে বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে সাপ্তাহিক সাংবাদিক সম্মেলনে রণধীর জয়সওয়াল জানান, “আমরা এই বিষয়ে আন্তর্জাতিক রিপোর্ট দেখেছি এবং গোটা পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। তবে একটা বিষয় স্পষ্ট— ভারতের জনগণের জ্বালানি চাহিদা মেটানোই আমাদের মূল লক্ষ্য। এই বিষয়ে কোনও আপস নয়।”