India Pakistan Indus Waters Treaty :পাকিস্তানের ষড়যন্ত্রে জল ঢালল ভারত। সিন্ধু জল চুক্তি ইস্যুতে হেগের আদালতের রায়কে সম্পূর্ণ অবৈধ বলে উল্লেখ ভারতের।
সিন্ধু জল চুক্তি ইস্যুতে ভারত ফের কড়া অবস্থান নিল। জম্মু-কাশ্মীরের কিষাণগঙ্গা ও রাতলে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে পাকিস্তানের আপত্তির প্রেক্ষিতে হেগের সালিশি আদালতের সাম্প্রতিক রায়কে সরাসরি "অবৈধ ও বাতিলযোগ্য" বলে ঘোষণা করল ভারত। বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, এই সালিশি আদালত নিজেই সিন্ধু জল চুক্তির (Indus Water Treaty) লঙ্ঘন করেছে এবং এ ধরনের ফোরামের কোনও রায় ভারতের কাছে প্রযোজ্য নয়। ভারত শুরু থেকেই ২০২২ সালের অক্টোবরে হেগে বিশ্বব্যাংক কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত এই আদালতের কার্যক্রমের বিরোধিতা করে আসছে।
পাকিস্তানের 'নাটক' প্রত্যাখ্যান
বিদেশ মন্ত্রক শুক্রবার স্পষ্ট জানায়, “পাকিস্তানের নির্দেশে নতুন করে একটি আন্তর্জাতিক 'নাটকের' স্ক্রিপ্ট সাজানো হয়েছে। ভারতের অবস্থান স্পষ্ট। ভারত বলেছে সীমান্ত সন্ত্রাসবাদের ক্ষেত্রে পাকিস্তানের দায়িত্ব এড়াতে এটি একটি প্রচেষ্টা। বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, "ভারত কখনও এই তথাকথিত সালিশি আদালতকে স্বীকৃতি দেয়নি
হেগের আদালত কী বলেছে?
সিন্ধু চুক্তির অধীনে গঠিত সালিশি আদালত বৃহস্পতিবার জানায়, ভারতের চুক্তি স্থগিত করার সিদ্ধান্ত তাদের এখতিয়ারে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না। তারা আরও জানায়, কিষাণগঙ্গা ও রাতলে প্রকল্প সংক্রান্ত মামলার শুনানি তারা চালিয়ে যাবে এবং রায়টি "সব পক্ষের জন্য বাধ্যতামূলক" ও "অপীলযোগ্য নয়।"
ভারতের পাল্টা জবাব
বিদেশ মন্ত্রক বলেছে, “আমরা এই তথাকথিত সালিশি আদালতকে কখনও স্বীকৃতি দিইনি। ভারতের সার্বভৌমত্বের পরিপন্থী যে কোনও পদক্ষেপ অবৈধ এবং অগ্রহণযোগ্য।” মন্ত্রকের মতে, পাকিস্তান সীমান্তবর্তী সন্ত্রাসবাদে মদত দিয়ে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন করছে এবং সেই দায়ভার এড়াতেই এই কূটনৈতিক কৌশল।
পহেলগাঁও হামলার পর চুক্তি স্থগিত
২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে পাকিস্তান-সমর্থিত জঙ্গি হামলার পর মোদী সরকার সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তখন বলেছিলেন, “জল ও রক্ত একসঙ্গে প্রবাহিত হতে পারে না।”
কী নিয়ে বিরোধ?
চেনাব নদীর উপর রাতলে (৮৫০ মেগাওয়াট) ও ঝিলামের উপনদী কিষাণগঙ্গা (৩৩০ মেগাওয়াট) প্রকল্প নিয়ে ২০১৫ সালে পাকিস্তান আপত্তি জানায়। যদিও ২০১৬ সালে সালিশি আদালতের মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তির দাবি তোলে তারা। ভারত তখন থেকেই এই উদ্যোগের বিরোধিতা করে আসছে।
আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অভিযোগ
ভারত দাবি করেছে, পাকিস্তান বহু বছর ধরে সন্ত্রাসবাদের পৃষ্ঠপোষকতা করে চলেছে এবং এই কৃত্রিম ফোরামের মাধ্যমে 'বিশ্বের চোখ' ঘোরাতে চাইছে। নয়াদিল্লি আন্তর্জাতিক মহলের কাছে আহ্বান জানিয়েছে, পাকিস্তানের এই দ্বিচারিতার বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নিতে হবে।