influenza Kolkata: বর্ষার বাড়বাড়ন্তে শহরে ফের মাথাচাড়া দিচ্ছে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস। চিকিৎসকদের কথায়, সংক্রমণের হার এতটাই বেশি যে এক একজন নয়, পুরো পরিবার একসঙ্গে আক্রান্ত হচ্ছেন জ্বর, সর্দি কাশিতে। অনেকেই বর্তমান পরিস্থিতিতে কোভিডকালীন সময়ের সঙ্গে তুলনা করেছেন। তবে স্বস্তির বিষয়, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রোগীরা মৃদু সংক্রমণ নিয়ে চিকিৎসকদের কাছে আসছেন।
তবুও এই পরিস্থিতিতে বিশেষ সতর্কবার্তা দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। চিকিৎসকরা বয়স্ক ও কোমর্বিডিটিতে আক্রান্তদের বাড়তি সতর্কতারও পরামর্শ দিয়েছেন। এমনকী বাদ পড়ছে না বাড়ির ছোট সদস্যরা। এবিষয়ে বিশিষ্ট শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ইন্দ্রনীল চৌধুরী জানিয়েছেন, "বর্ষাকালে সাধারণত ইনফ্লুয়েঞ্জার বাড়বাড়ন্ত দেখা যায়। কিন্তু এবারের পরিমাণটা "অস্বাভাবিক"। শহরের বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ৫০ শতাংশ রোগী এখন ভাইরাল ইনফেকশনের উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসা করাতে আসছেন। এমনকী বাড়িতে বড়দের থেকে শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার পরিসংখ্যানও রীতিমত ভয় ধরাচ্ছে"।
প্রখ্যাত শিশু চিকিৎসক ডা. সুমিতা সাহা বলেন,"এই মুহূর্তে হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ বা তিনগুণ। অধিকাংশই ইনফ্লুয়েঞ্জা বা ভাইরাল ইনফেকশনের উপসর্গ নিয়ে আসছেন—ডায়ারিয়া, জ্বর, কাশি, সর্দি। পাশাপাশি অ্যাডেনোভাইরাস ও আরএসভি (RSV)-এর সংখ্যাও বাড়ছে। এই আবহাওয়ার কারণেই ভাইরাস দ্রুত ছড়াচ্ছে।" তিনি আরও বলেন,"বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই গোটা পরিবার আক্রান্ত হচ্ছেন। স্কুল বা অফিস থেকে প্রাপ্তবয়স্ক ও শিশুরা এই ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছেন।"
ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথ কলকাতার সহযোগী অধ্যাপক ও চাইল্ড ইনটেনসিভ কেয়ার বিশেষজ্ঞ ডা. প্রভাস প্রসূন গিরি জানান,"গত এক সপ্তাহে প্রায় ৬০ জন রোগীর ক্ষেত্রে ইনফ্লুয়েঞ্জা সন্দেহ করে পরীক্ষার পরামর্শ দিয়েছিলাম। প্রত্যেকেরই রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। সংখ্যাটা এবার খুবই বেশি। যদিও স্বস্তির বিষয় জ্বর, সর্দি কাশি নিয়ে কাউকে আইসিইউতে ভর্তি করার মতো পরিস্থিতি হয়নি।" চিকিৎসকদের মতে, জ্বর, কাশি, সর্দির পাশাপাশি অনেকেই খিদে না হওয়া, ডায়ারিয়ার মত উপসর্গও নিয়েও চিকিৎসকদের কাছে আসছেন। শিশু থেকে প্রাপ্তবয়স্ক বাদ পড়ছেন না কেউ'ই।
বেল ভিউ ক্লিনিকের ইন্টারন্যাল মেডিসিনের বিশেষজ্ঞ ডা. রাহুল জৈন বলেন, "একাধিক পরিবারকে একসঙ্গে আক্রান্ত হতে দেখেছি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মৃদু সংক্রমণ হলেও কোমর্বিডিটি থাকলে জটিলতা তৈরি হতে পারে।" বিশিষ্ট চিকিৎসক সৌম্যজিৎ গুহ জানিয়েছেন, "সংক্রমণ ঠেকাতে এখনই প্রয়োজন সাবধানতা। মাস্ক ব্যবহার, নিয়মিত হাত ধোয়া ও ফ্লু ভ্যাকসিন নেওয়াই হতে পারে এই ভাইরাস থেকে বাঁচার উপায়। শিশুদের ও বাড়ির বয়স্কদের আরও বেশি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে"।