Sayan Lahiri-Paschimbanga Chhatra Samaj: নবান্ন অভিযানেই থেমে থাকছে না পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ। তাদের নেতৃত্ব-সহ প্রায় দেড়শো জনকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ। এরা মুক্তি পেলেই ফের আন্দোলনের পথে পা বাড়াবে ছাত্র সমাজ। পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজের পক্ষে সায়ন লাহিড়ী ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, "ম্যাডামের (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) ছকেই ম্যাডামকে পরাস্ত করব। বড় ধাক্কা হবে।"
আরজি কর ইস্যুতে গত ২৭ অগাস্ট পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছিল। দোষীদের শাস্তির পাশাপাশি দাবি ছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগ। হাওড়া রবীন্দ্র সেতু, সাঁতরাগাছি ও হেস্টিংসের দিকে এই অভিযানকে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটে যায়। কলকাতা ও হাওড়া অবরুদ্ধ হয়ে যায়। ঘটনার দিন একশোর ওপর আন্দোলনকারী গ্রেফতার হয়। পরবর্তীতে নেতৃত্ব-স্থানীয় সায়ন লাহিড়ী, প্রবীর দাস ও শুভঙ্কর হালদারকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সায়ন লাহিড়ী আদালতের নির্দেশে ছাড়া পেয়েছেন। বাকিরা মুক্তি পেলেই আরজি করের তরুণী চিকিৎসকের নৃশংস খুনের ঘটনায় অপরাধীদের শাস্তির দাবিতে ফের পথে নামবে পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ।
ছাত্র সমাজের পক্ষে সায়ন লাহিড়ী বলেন, "নবান্ন অভিযান একটা অসংঘটিত ডাক ছিল। আমরা কলেজ স্ট্রিট ও সাঁতরাগাছির কথা জানতাম। হেস্টিংস জানা ছিল না। মানুষ স্বতস্ফূর্ত ভাবে বিভিন্ন জায়গায় বেড়িয়ে গিয়েছে। এই ধারনা আমাদের ছিল না। আমাদের কোনও প্ররোচনা না থাকা সত্ত্বেও পুলিশ দমন-পীড়ন চালিয়েছে। আপাতত ধৃতদের মুক্ত করাই প্রথম কাজ।"
আরও পড়ুন- Junior Doctor Lalbazar March: 'আমার কাজে আমি সন্তুষ্ট, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বললেই ইস্তফা', চিকিৎসকদের বললেন CP
আপনাদের ভবিষ্যৎ কর্মসূচি কী? সায়নের বক্তব্য, "আগের কর্মসূচিতে নাড়া দিয়েছি, পরবর্তী কর্মসূচিতে ধাক্কা দেব। ধাক্কা মানে হচ্ছে আমরা শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে যা যা অন্দোলনের প্রণালী আছে। ভারতের স্ট্রাগল মুভমেন্ট থেকে শিখেছি। সব কিছু এখানে প্রয়োগ করা হবে। রাস্তা ছাড়ছি না। রাস্তায় থাকব। বাড়িতে, ফেসবুকের দিন শেষ হয়ে গিয়েছে। আমাদের পরিবার থেকে মনে হচ্ছে কেউ একজন চলে গিয়েছে। আমি দিদিভাইয়ের বাবার পা ছুঁয়ে প্রতিজ্ঞা করে এসেছি, এর শেষ দেখে ছাড়ব।"
আরও পড়ুন- Digha: রোমহর্ষক কাণ্ডে দিঘার সমুদ্রে তোলপাড়! ঘটনার আকস্মিকতায় হতভম্ব পর্যটকেরাও!
এই আন্দোলনের পিছনে গেরুয়া শিবিরের মদতের অভিযোগ উঠেছে। এব্যাপারে আশুতোষ কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রাক্তন এই ছাত্র বলেন, "ক্লাস সিআর নির্বাচনের সময় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রস্তাবক ছিলাম। ২০১৯ থেকে রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘের শাখায় গিয়েছি। ২০২১-এ অরুনাচল প্রদেশে ভারত সেবাশ্রম সংঘের প্রণবানন্দ স্কুলের প্রিন্সিপ্যাল ছিলাম। তবে আমরা ঠিক করেছিলাম কোনও রাজনৈতিক নেতাকে এই আন্দোলনে এলাউ করা হবে না। তবে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী আমাদের নৈতিক সমর্থন জানিয়েছেন। মেডিক্যাল ক্যাম্পের ব্যবস্থা করেছিল বিজেপি। তবে রাজনীতি দিয়ে এই সামাজিক ব্যাধিকে মোছা যাবে না। এতদিন তাই চলছে। অরাজনৈতিক আন্দোলনে অনেক বেশি স্বতস্ফূর্ততা আছে বলে আমি মনে করি।"
পরবর্তী আন্দোলন যে আরও জোরদার করা হবে সে কথা জানিয়েছেন সায়ন। তিনি বলেন, "আমাদের কোনও হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ নেই। শুধু একটা ফেসবুক পেজ আছে। সেখানে আন্দোলনের কথা ঘোষণা করা হবে। এই নাম নিয়ে আন্দোলন করার ষড়যন্ত্র হতে পারে বলে মনে করছে সায়ন। তাঁর দাবি, "ছাত্র সমাজ পরের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় যে আন্দোলন করবে সেই আন্দোলনে ম্যাডাম কিন্তু এতদিন চাপে ছিল বক্স হয়ে যাবে। ম্যাডাম আমাদের শিখিয়েছেন। ম্যাডাম আন্দোলনের প্রোডাক্ট। ছাত্র রাজনীতি করে উঠেছেন। তারই ছকে তাঁকে আমরা পরাস্ত করার দিকে এগোব।"
আরও পড়ুন- Sandip Ghosh: আদালতে ঢুকতেই 'চোর' স্লোগান, ৮ দিনের CBI হেফাজতে সন্দীপ ঘোষ