ভারতের মহাকাশ দক্ষতায় অবাক বিশ্ব, মহাকাশেরে বুক চিড়ে নয়া রেকর্ড ইসরোর

ভারতের মহাকাশ দক্ষতা আবারও বিশ্বকে অবাক করে দিয়েছে। রবিবার ভারতীয় নৌবাহিনীর অত্যাধুনিক উপগ্রহ, GSAT-7R (CMS-03) সফলভাবে উৎক্ষেপণ করেছে ISRO।

ভারতের মহাকাশ দক্ষতা আবারও বিশ্বকে অবাক করে দিয়েছে। রবিবার ভারতীয় নৌবাহিনীর অত্যাধুনিক উপগ্রহ, GSAT-7R (CMS-03) সফলভাবে উৎক্ষেপণ করেছে ISRO।

author-image
Sayan Sarkar
New Update
isro-satellite-launch-for-indian-navy-gsat-7r-cms-03-ocean-communication-and-surveillance

ভারতের মহাকাশ দক্ষতায় অবাক বিশ্ব

ভারতের মহাকাশ দক্ষতা আবারও বিশ্বকে অবাক করে দিয়েছে। রবিবার ভারতীয় নৌবাহিনীর অত্যাধুনিক  উপগ্রহ, GSAT-7R (CMS-03) সফলভাবে উৎক্ষেপণ করেছে ISRO। এই অভিযান কেবল ভারতের প্রযুক্তিগত সাফল্য নয় বরং ভারত মহাসাগর অঞ্চলে ভারতের সামুদ্রিক শক্তি এবং নজরদারি দক্ষতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রেও এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ। প্রায় ৪৪১০ কিলোগ্রাম ওজনের এই  উপগ্রহটি এখনও পর্যন্ত ভারতের সবচেয়ে ভারী যোগাযোগ উপগ্রহ। এটি শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান মহাকাশ কেন্দ্র থেকে বাহুবলী রকেট LVM3-M5 ব্যবহার করে উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল। এই অভিযান আবারও প্রমাণ করেছে যে ভারত কেবল স্বাবলম্বীই নয় বরং মহাকাশ প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে দ্রুত এগিয়ে চলেছে। উৎক্ষেপণের পরপরই ISRO ঘোষণা করে, "CMS-03 সফলভাবে পৃথক হয়েছে। অভিযান সফল।"

Advertisment

আরও পড়ুন- ঝুলনের অসমাপ্ত স্বপ্ন পূরণ, হরমনপ্রীতের নেতৃত্বে বিশ্বজয়, ভারতের মেয়েদের চোখের জলে গর্বের ইতিহাস

ভারতের মহাকাশ গবেষণার ইতিহাসে যুক্ত হলো নতুন অধ্যায়। রবিবার সন্ধ্যায় শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান মহাকাশ কেন্দ্র থেকে ‘বাহুবলী’ নামে পরিচিত এলভিএম-৩ (LVM3-M5) রকেটের মাধ্যমে ভারতীয় নৌবাহিনীর জন্য সবচেয়ে ভারী যোগাযোগ উপগ্রহ GSAT-7R (CMS-03) সফলভাবে কক্ষপথে স্থাপন করল ISRO। এই সাফল্যের মাধ্যমে ভারত প্রমাণ করল, দেশ শুধু আত্মনির্ভর নয়, বরং মহাকাশ প্রতিরক্ষা প্রযুক্তিতেও দ্রুত একটি বৈশ্বিক শক্তি হিসেবে উঠে আসছে। 

Advertisment

৪,৪১০ কিলোগ্রাম ওজনের GSAT-7R এখন পর্যন্ত ভারতের সবচেয়ে ভারী  উপগ্রহ। সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি এই স্যাটেলাইটটি নৌবাহিনীর জাহাজ, সাবমেরিন, বিমান ও কমান্ড সেন্টারগুলিকে একটি সুরক্ষিত, দ্রুত ও নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ নেটওয়ার্কে যুক্ত করবে। এর ট্রান্সপন্ডার সিস্টেম একাধিক ব্যান্ডে ভয়েস, ডেটা ও ভিডিও লিঙ্ক সমর্থন করতে সক্ষম, যা সমুদ্রের মাঝখানেও নৌবাহিনীর সদস্যদের মধ্যে তাৎক্ষণিক যোগাযোগ সম্ভব করবে।

আরও পড়ুন- শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল পৃথিবী, মৃত একাধিক, শতাধিক আহত, তুমুল চাঞ্চল্যে হুলস্থূল

উপগ্রহটি ভারত মহাসাগর অঞ্চলে শক্তিশালী টেলিকম সিগন্যাল নিশ্চিত করবে, ফলে সমুদ্রের যে কোনও অংশে তথ্য আদানপ্রদান আরও দ্রুত ও সুরক্ষিত হবে। এর উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যান্ডউইথের মাধ্যমে নৌবাহিনী রিয়েল-টাইম নজরদারি, সাবমেরিন ট্র্যাকিং এবং সামুদ্রিক সীমান্ত পর্যবেক্ষণ আরও কার্যকরভাবে পরিচালনা করতে পারবে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, GSAT-7R-এর মাধ্যমে ভারতের নৌ-নজরদারি ক্ষমতা বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে। ভারতীয় নৌবাহিনীর প্রধান জানিয়েছেন, “এটি জাতীয় সামুদ্রিক স্বার্থ রক্ষার পথে এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ।” ISRO-র এই অসামান্য সাফল্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও উপরাষ্ট্রপতি সি.পি. রাধাকৃষ্ণন ইসরো বিজ্ঞানীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী মোদী এক্স (Twitter)-এ লিখেছেন, “আমাদের মহাকাশ খাত দেশকে গর্বিত করে চলেছে! CMS-03 স্যাটেলাইটের সফল উৎক্ষেপণ ভারতের বিজ্ঞানী সমাজের মেধা ও নিষ্ঠার প্রমাণ।” উপরাষ্ট্রপতি রাধাকৃষ্ণন বলেছেন, “LVM3-M5 রকেট আবারও আকাশে গর্জে উঠল। GSAT-7R (CMS-03) উপগ্রহটি ভারতের নৌবাহিনীর জন্য সবচেয়ে ভারী ও উন্নত স্যাটেলাইট, যা স্বদেশি প্রযুক্তিতে তৈরি এবং ভারত মহাসাগর অঞ্চলে নিরাপদ যোগাযোগ ও নজরদারিকে আরও শক্তিশালী করবে।” ইসরো প্রধান ভি. নারায়ণন জানিয়েছেন, এটি ছিল LVM3 রকেটের অষ্টম উৎক্ষেপণ— এবং সবগুলোই শতভাগ সফল। আগামী পাঁচ মাসে ইসরো আরও সাতটি মহাকাশ অভিযান পরিচালনার পরিকল্পনা করেছে, যার মধ্যে রয়েছে ভারতের প্রথম মানববাহী মিশন ‘গগনযান’। এই একই রকেটের মাধ্যমেই ভারতীয় নভোচারীদের কক্ষপথে পাঠানো হবে।

আরও পড়ুন- নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের জন্মদিনে জানুন তাঁর জীবনের অজানা কিছু তথ্য

ভারতীয় মহাকাশ সংস্থা ও প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকদের মতে, GSAT-7R শুধুমাত্র ভারতের প্রযুক্তিগত আত্মনির্ভরতার প্রতীক নয়, বরং এটি ভারতের মহাকাশ প্রতিরক্ষা কাঠামোকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে।

ISRO