Kargil Vijay Diwas 2025: দেশজুড়ে আজ পালিত হচ্ছে 'কার্গিল বিজয়' দিবস। কার্গিল যুদ্ধে অদম্য সাহস ও বীরত্বের সঙ্গে লড়াইয়ে জয় ছিনিয়ে আনা সকল সেনাদের আত্মত্যাগকে স্মরণ করছে দেশবাসী। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু শনিবার কার্গিল বিজয় দিবস উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন এবং কার্গিল যুদ্ধে সেনাদের আত্মত্যাগকে স্মরণ করেছেন। তিনি এক্স হ্যান্ডেলে এক পোস্টে লিখেছেন, "কার্গিল যুদ্ধের সময় ভারতীয় সেনারা যে সাহস এবং বীরত্ব দেখিয়েছেন, দেশের জন্য যে আত্মত্যাগ করেছেন তাকে 'স্মরণ' করে ভারত প্রতি বছর ২৬শে জুলাই কার্গিল বিজয় দিবস উদযাপন করে। কার্গিল বিজয় দিবস উপলক্ষে, আমি সেই সাহসী সেনাদের শ্রদ্ধা জানাই, যারা মাতৃভূমি রক্ষায় নিজেদের জীবন উৎসর্গ করতেও দু'বার ভাবেননি। এই দিনটি আমাদের সেনা বাহিনীর অসাধারণ সাহস এবং দৃঢ়তার প্রতীক। দেশের জন্য তাদের নিষ্ঠা এবং সর্বোচ্চ ত্যাগ সর্বদা দেশবাসীকে অনুপ্রাণিত করবে"।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শনিবার কার্গিল বিজয় দিবস উপলক্ষে সেনাবাহিনী ও দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন এবং কার্গিল যুদ্ধে সেনাবাহিনী যে সাহস ও বীরত্বের সঙ্গে লড়াই করে দেশের জন্য জয় ছিনিয়ে নিয়ে এনেছিলেন তার জন্য তাঁদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী মোদী এক্স হ্যান্ডেলে এক পোস্টে লিখেছন, "সেনাবাহিনী সেদিনের আত্মত্যাগ প্রতিটি প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে। প্রধানমন্ত্রী কারগিল বিজয় দিবসে দেশবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই"।
আজ কারগিল বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং ন্যাশানাল ওয়ার মেমোরিয়ালে পৌঁছে কার্গিল যুদ্ধের সময় কর্তব্য পালনের সময় যারা দেশের জন্য আত্মবলিদান দিয়েছিলেন তাদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। এই সময় তিন বাহিনীর প্রধানরাও উপস্থিত ছিলেন। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং পোস্ট করেছেন, 'কারগিল বিজয় দিবসে, আমি সেই সাহসী সৈন্যদের প্রতি আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা নিবেদন করছি যারা সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতিতেও জাতির সম্মান রক্ষায় অসাধারণ সাহস, দৃঢ়তা এবং সংকল্প প্রদর্শন করেছিলেন। কার্গিল যুদ্ধের সময় তাদের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর অটল সংকল্পের চিরন্তন স্মারক। ভারত সর্বদা তাদের সেবার জন্য ঋণী থাকবে।'
কারগিল বিজয় দিবস উলক্ষ্যে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দেশের বীর সেনাদের আত্মত্যাগকে স্মরণ করে এক্স হ্যান্ডেলে এক পোস্টে লিখেছেন, "কার্গিল বিজয় দিবস দেশের বীর সৈনিকদের গর্ব এবং বিজয়ের একটি অবিস্মরণীয় দিন। ১৯৯৯ সালে, আমাদের সৈন্যরা 'অপারেশন বিজয়'-এর মাধ্যমে শত্রুদের নতজানু করে অদম্য সাহস এবং বীরত্বের এক অমোচনীয় উদাহরণ স্থাপন করেছিল। কার্গিল বিজয় দিবস উপলক্ষে, আমি সেই সমস্ত সাহসী সৈনিকদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই যারা মাতৃভূমি রক্ষার জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছেন। এই জাতি সর্বদা আপনার ত্যাগ এবং আত্মত্যাগের কাছে ঋণী থাকবে"।
আজ ২৬তম কার্গিল বিজয় দিবস। সিডিএস অনিল চৌহান, বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল এপি সিং এবং নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল দীনেশ কে ত্রিপাঠিও এদিন শহীদ স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। উল্লেখ্য কার্গিল যুদ্ধ ৬০ দিনেরও বেশি সময় ধরে চলেছিল এবং ২৬শে জুলাই, ১৯৯৯ সালে ভারতের জয়ের মধ্য দিয়ে এই যুদ্ধ শেষ হয়েছিল সেই থেকে সমগ্র দেশ ২৬ জুলাই দিনটিকে কার্গিল বিজয় দিবস হিসেবে উদযাপন করে।
১৯৯৯ সালে ৬০ দিনের বেশি সময় ধরে চলা এই যুদ্ধে ভারত ৫২৭ জন সেনাকে হারায়। পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, সে দেশের প্রায় ৪,০০০ সেনা এই যুদ্ধে নিহত হয়। অত্যন্ত প্রতিকূল পরিস্থিতিতে, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৬,৫০০ ফুট উচ্চতায় সংঘটিত এই যুদ্ধে ভারতীয় সেনারা অবিস্মরণীয় সাহসিকতা প্রদর্শন করেন। পাক সেনারা কাশ্মীর ও লাদাখের মধ্যে পরিবহন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করার উদ্দেশ্যে কার্গিলের উচ্চভূমি দখল করেছিল। জবাবে ভারত শুরু করে 'অপারেশন বিজয়', যার মাধ্যমে শত্রুদের পরাস্ত করে ভারতীয় ভূখণ্ড পুনরুদ্ধার করা হয়। আজকের এই দিন শুধুমাত্র একটি 'বিজয়ের' বার্তা নয়, এক আত্মত্যাগের কাহিনি, যা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ছড়িয়ে পড়বে অনুপ্রেরণার বার্তা হয়ে।