Mahua Moitra On krishnanagar municipality: কৃষ্ণনগর পুরসভা নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় কোন্দল এখনও মিটল না। ফলে তিন দিন পার হয়ে গেলেও জেলা প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে বসতে পারল না অনাস্থা আনা তৃণমূল কাউন্সিলররা ও চেয়ারম্যান। তবে কৃষ্ণনগর পুরসভার এই অচলাবস্থা কাটাতে তৃণমূল কংগ্রেসের উচ্চ নেতৃত্ব দেখছে বলে জানালেন সাংসদ তথা কৃষ্ণনগর উত্তর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি মহুয়া মৈত্র।
প্রসঙ্গত তৃণমূল পরিচালিত কৃষ্ণনগর পুরসভার চেয়ারম্যানের কাজকর্মে বীতশ্রদ্ধ হয়ে দলের ১৩ জন কাউন্সিলর অনাস্থা প্রস্তাবে সই করেছেন। কৃষ্ণনগর পুরসভার ১৫ জন কাউন্সিলার অনাস্থা প্রস্তাব আনেন। এর মধ্যে তৃণমূলের ১৩ জন, কংগ্রেসের ১ জন ও ১ জন নির্দল কাউন্সিলার এই অনাস্থায় সই করেছেন। যা নিয়ে শহর জুড়ে শুরু হয়েছে চর্চা।
বর্তমানে পুরসভার এই অচলাবস্থায় শহর জুড়ে উন্নয়নের কাজ ব্যাহত হয়েছে। সার্ধ শতবর্ষ পেরিয়ে যাওয়া এই কৃষ্ণনগর পুরসভার ক্ষেত্রে যা যথেষ্ট উদ্বেগজনক। তৃণমূল পরিচালিত কৃষ্ণনগর পুরসভায় মোট ২৫ জন কাউন্সিলর। এর মধ্যে প্রয়াত হয়েছেন বাবুসোনা শর্মা। তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত কৃষ্ণনগর পুরসভার চেয়ারম্যান রীতা দাসের বিরুদ্ধে তৃণমূলের ১৩ জন কাউন্সিলর অনাস্থা প্রস্তাবে সই করেছেন। স্বাভাবিকভাবে কৃষ্ণনগর পুরসভায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের এই অবস্থায় পুর পরিষেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে শহরবাসী উদ্বেগের মধ্যে রয়েছে।
গোটা পরিস্থিতি কাটাতে মঙ্গলবার জেলা প্রশাসনিক কর্তারা পুরসভার চেয়ারম্যান সহ অনাস্থা প্রস্তাব আনা কাউন্সিলরদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অনাস্থা প্রস্তাবে সই করা তৃণমূলের ১৩ জন কাউন্সিলরদের মধ্যে ১১ জন। ২ জন অনুপস্থিত ছিলেন। এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক অরুণ প্রসাদ,পুলিশ সুপার অমরনাথ কে, মহকুমাশাসক শারদ্বতী চৌধুরী সহ একাধিক আধিকারিকবৃন্দ। এই বৈঠকে এই কাউন্সিলররা যুক্তি দিয়ে বোঝায় কেন অনাস্থা আনা হচ্ছে? প্রশাসনিক কর্তারা পুরসভার বর্তমান অবস্থা কাটানোর কথা বলেন। এই পরিস্থিতিতে অনাস্থা প্রস্তাবে সই করা তৃণমূলের কাউন্সিলররা ৩ দিন সময় চেয়ে নেন।
শুক্রবার এই সময় পেরিয়ে গিয়েছে। শনিবারও এ নিয়ে কোন বৈঠক হয়নি। উত্তর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল সভাপতি মহুয়া মৈত্র শুক্রবার কৃষ্ণনগর জিলা পরিষদে ২১ জুলাইয়ের প্রস্তুতি সভা করতে আসেন। সেখানে এ নিয়ে কোন আলোচনা হয়নি বলে জানা গিয়েছে। এ নিয়ে কাউন্সিলরদের সূত্রে জানা গিয়েছে , নেত্রী মহুয়া মৈত্র পুরসভা নিয়ে কোন কিছু বলেনি। তবে রবিবার মহুয়া মৈত্র কৃষ্ণনগরে আসবেন। তার সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলার চেষ্টা করা হবে। প্রশাসনিক কর্তাদের কাছে তারপরই বসার বিষয়টি জানানো হবে। সমস্ত কিছু ঠিক থাকলে সেক্ষেত্রে সোমবারও প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা হতে পারে।
অনাস্থা প্রস্তাবে সই করা নিয়ে কৃষ্ণনগর পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর শান্তশ্রী সাহা বলেন, "বর্ষার মরসুম চলছে। কৃষ্ণনগরের রাস্তার অবস্থা খুব খারাপ। মানুষ কষ্টের মধ্যে রয়েছে। পুরসভার স্বচ্ছতা ফেরাতে অতি দ্রুত সচল অবস্থা ফিরিয়ে আনুক। ৩ দিন সময় নিয়েছিল অনাস্থা আনা তৃণমূল কাউন্সিলররা। সেই সময় অতিক্রান্ত হয়ে গিয়েছে। ফয়সালা হয়নি। এই অবস্থায় তৃণমূল দল ও প্রশাসন যাতে দ্রুততার সঙ্গে অচলাবস্থা কাটাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে। একইসঙ্গে পুরবাসী যাতে অতি দ্রুত পরিষেবা ফিরে পায়।'এই অবস্থা প্রসঙ্গে মহুয়া মৈত্র বলেন, 'আমি বিষয়টা নিয়ে অবগত। এটা নিয়ে আমি পাবলিকলি বলব না। গোটা বিষয়টি দলের উচ্চ নেতৃত্ব দেখছে।'