শুভেন্দুর ২১ ডিসেম্বর হুমকি নিয়ে ঝাঝাঁলো আক্রমণে কুণাল। ''কাল সবাই সাবধানে বেরোবেন, ঠাকুর ঠাকুর করে বেরোবেন।'' বিরোধী দলনেতার ২১ ডিসেম্বর ডেডলাইন হুঁশিয়ারির পাল্টা বেনজির আক্রমণে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক।
ডিসেম্বর মাসের তিনটি দিন নিয়ে সরাসরি তৃণমূলের নাম না করেও হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ১২, ১৪ এবং ২১ ডিসেম্বর দিন তিনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলেও মন্তব্য করেছিলেন শুভেন্দু। তবে ১২ ডিসেম্বর ও ১৪ ডিসেম্বর ঘটে যাওয়া দু'টি ঘটনায় রাজ্য রাজনীতিতে তোলপাড় পড়ে গিয়েছে।
১২ ডিসেম্বর সিবিআই হেফাজতে থাকাকালীন মৃত্যু হয়েছে রামপুরহাটের বগটুই গ্রামে ১০ জনকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত লালন শেখের। এরই পাশাপাশি ১৪ ডিসেম্বর আসানসোলে শুভেন্দু অধিকারীর উপস্থিতিতে কম্বল বিলি কর্মসূচির আয়োজন করেছিল বিজেপি। সেই কর্মসূচি চালাকালীনও পদপিষ্ট হয়ে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন- শীতের দিল্লি দেখবেন না কেষ্ট! যাত্রা এড়াতে মরিয়া চেষ্টা, হাইকোর্টের দ্বারস্থ অনুব্রত
শুভেন্দুর ডিসেম্বর ডেডলাইনের প্রথম দু'টি দিন মৃত্যুর মতো ঘটনা ঘটায় এবার পাল্টা আক্রমণে সুর চড়িয়েছে তৃণমূল। বিরোধী দলনেতার ডিসেম্বর ডেডলাইনের তৃতীয় তথা শেষ দিন আগামিকাল অর্থাৎ ২১ ডিসেম্বর। তাই ২১ ডিসেম্বর প্রত্যেককে 'সতর্ক' থাকার পরামর্শ তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের।
শুভেন্দুকে নিশানা করে এদিন কুণাল ঘোষ বলেন, ''১২ ডিসেম্বর সিবিআই হেফাজতে লালন শেখের মৃত্যু। ১৪ ডিসেম্বর কম্বল নিতে গিয়ে নিরীহদের মৃত্যু। কাল সবাই সাবধানে বেরোবেন। বিজেপির থেকে দূরে থাকবেন। বিজেপি নেতাদের কাছাকাছি কেউ যাবেন না। ডেট দিয়ে দিয়ে মৃত্যু ডেকে আনছে। ঠাকুর ঠাকুর করে কাল বেরোবেন।''
আরও পড়ুন- ‘মমতা কতটা নীচে নামতে পারেন দেখা গেল’, কেষ্টর পুলিশ হেফাজতে তিতিবিরক্ত সেলিম
এদিকে, তৃণমূল ও বিজেপি নেতাদের এই কচকচানিতে আমল দিতে নারাজ বামেরা। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী মনে করেন এটা জোড়াফুল-পদ্মের বোঝাপড়া। সাময়িক কোন্দলে নেতারা এমন বলছেন। সুজন চক্রবর্তী এদিন বলেন, ''তৃণমূলের ঘরে বড় হয়েছেন শুভেন্দু। তৃণমূলের অভ্যাস নিয়েই শুভেন্দুর বিজেপি। তৃণমূলে থেকে যেমন সৎ কথা বলার অধিকার কারও নেই, শুভেন্দু অধিকারীরও তাই। তৃণমূলে থাকবে আর সে চোর নয়, বড় নেতা, এটা অসম্ভব।
তৃণমূল-বিজেপিকে একযোগে আক্রমণ শানিয়ে সুজন চক্রবর্তী এদিন আরও বলেন, ''তৃণমূলের নেতারা বিজেপিতে গিয়েও নেতা হয়েছেন। দিল্লিতে অমিত শাহ-নাড্ডা কী বলছেন আর এখানে মমতা ব্যানার্জি কী বলছেন এই মিলমিশ করেই তৃণমূল-বিজেপিকে চলতে হচ্ছে। এতে বিবাদ বলে কিছু নেই, এটা ঘরোয়া কোন্দল।''
আরও পড়ুন- মামলার ‘মালা’ রাজ্যের, একান্তে শাহকে পেয়ে গুচ্ছ নালিশ শুভেন্দুর, কথা মোদীর সঙ্গেও
এদিকে, আজই দিল্লিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর বিরুদ্ধে রাজ্যের একাধিক থানায় দায়ের হওয়া একগুচ্ছ মামলা প্রসঙ্গে অমিত শাহকে বিস্তারিত তথ্য জানিয়েছেন শুভেন্দু। রাজ্যের তৃণমূল নেতৃত্বাধীন সরকার তাঁর রাজনৈতিক কর্মসূচিতে বাধা দিতেই মামলার 'মালা' পরিয়েছে বলে শাহের কাছে নালিশ জানিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। শুধু তাই নয়। রাজ্যের বেশ কয়েকজন আইপিএস অফিসারের নাম করে করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ করেছেন বিরোধী দলনেতা।