দেশে ফেরার পর সাংসদ মহুয়া মৈত্র শুক্রবার প্রথম কৃষ্ণনগরে নদিয়া জেলা পরিষদে পা রাখতেই ২১ জুলাইয়ের প্রস্তুতি সভা ঘিরে তাল কাটল। পের প্রকাশ্যে এসে যায় তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল। গতকাল তৃণমূল কংগ্রেসের শহিদ স্মরণে ২১ জুলাইয়ের প্রস্তুতি সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা, ব্লক স্তর ও সমস্ত শাখা সংগঠনের সভাপতি ও সহ-সভাপতিরা। উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি তারান্নুম সুলতানা মীর, বিধায়ক বিমলেন্দু সিংহ রায়, কালীগঞ্জের নব নির্বাচিত বিধায়ক আলিফা আহমেদও। তবে এই সভায় মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস, বিধায়ক কল্লোল খাঁ, বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য না থাকা নিয়ে চর্চা শুরু হয়ে যায়।
উল্লেখ্য, এর আগে কালীগঞ্জের প্রয়াত তৃণমূল বিধায়ক নাসিরুদ্দিন আহমেদের স্মরণ সভা হয়েছিল দুটি। একটি স্মরণ সভায় রাজ্যের মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস, বিধায়ক কল্লোল খাঁ, রুকবানু রহমান, মানিক ভট্টাচার্যরা ছিলেন। ওই স্মরণ সভায় দলের অনুমোদন নেই বলে মহুয়া মৈত্র জানিয়েছিলেন। পরে আরও একটি স্মরণ সভা হয়, সেটির উদ্যোক্তা ছিলেন সাংসদ মহুয়া মৈত্র নিজে। ফেসবুকে সেটিকেই দলীয় স্মরণ সভা বলে উল্লেখও করেছিলেন তিনি। এরপরে মানিক ভট্টাচার্যের পলাশীপাড়া বিধানসভা কেন্দ্রের বার্নিয়া এলাকায় গিয়ে তাঁর নাম না করে মহুয়া মৈত্র বলেছিলেন, "ওর বিরুদ্ধে কেস চলছে, এফ আই আর হয়েছে। চার্জশিট হয়ে গিয়েছে।" তিনি আরও বলেছিলেন, "ওর বউ চোর, ছেলে চোর, চোদ্দোগুষ্টি চোর।" এরপর থেকেই দ্বন্দ্বটা যে কমেনি বরং থেকে গিয়েছে তা গতকালের ঘটনাতেও স্পষ্ট হয়েছে।
তবে এরও কয়েক মাস আগে কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ জানিয়ে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়েছিলেন দলেরই ৬ জন বিধায়ক। সাংসদ তথা কৃষ্ণনগর উত্তর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি মহুয়া মৈত্র এবং উল্টো দিকের এই বিধায়কদের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব থেকে গিয়েছে। যার রেশ কৃষ্ণনগরে জেলা পরিষদে হওয়া ২১ জুলাইয়ের প্রস্তুতি সভাতেও পড়েছে।
আরও পড়ুন- West Bengal live news Updates:পাখির চোখ '২৬, BJP-তে এবার বড়সড় দায়িত্ব সুকান্ত মজুমদারকে
গতকালের সভায় অনুপস্থিত থাকা বিধায়ক কল্লোল খাঁ বলেন, 'আমাকে ফোন করা হয়নি। কোন চিঠিও দিয়ে ডাকা হয়নি।' বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যও বলেন, "আমাকেও ডাকা হয়নি।' শুক্রবার বিকেলে প্রস্তুতি সভা শুরু হয়। দীর্ঘ সময় ধরে এই মিটিং চলে। মিটিংয়ের শুরুতে জেলা পরিষদের কালীগঞ্জের নব নির্বাচিত বিধায়ক আলিফা আহমেদকে জড়িয়ে ধরেন মহুয়া মৈত্র।
আরও পড়ুন- police raid:রাজ্যের দাপুটে মন্ত্রী দল ছাড়ার হুঁশিয়ারি দিতেই অ্যাকশনে পুলিশ, তড়িঘড়ি পদক্ষেপ
মিটিং শেষ হলে তিনি বলেন, 'আগামী '২৬-এ বিধানসভা ভোট। তার আগে প্রতিটি ব্লক সভাপতি, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তারা এসেছিলেন। সকলের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এরপরে ব্লকে মিটিং করব। তার সিডিউল দিয়ে দিয়েছি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ১৪ তারিখ মিটিং ডেকেছেন। তার আগে আমাদের ব্লকে ব্লকে প্রস্তুতি মিটিং হয়ে যাবে। তারপর পঞ্চায়েত লেভেলে নামব।' তবে দলের সিনিয়র ৩ বিধায়কের অনুপস্থিতি নিয়ে এক প্রশ্নে মহুয়া বলেন, 'কল্লোল দা, উজ্জ্বল দা সকলকে ডাকা হয়েছে। কল্লোল দা, মেসেজ পাঠিয়েছে স্ট্যান্ডিং কমিটির মিটিং আছে বলে। আর উজ্জ্বলদার মিনিস্ট্রির কাজ ছিল। তাই আমন্ত্রণ সবাই পেয়েছে। ওই দু'জনের কাজ ছিল।' তবে বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য নিয়ে প্রশ্ন করায় তিনি স্পষ্ট করে বলেন, "যাকে আমন্ত্রণ করার তাকে আমন্ত্রণ করেছি। যাকে করার নয় তাকে আমরা আমন্ত্রণ করিনি।'
আরও পড়ুন- sambhal wedding suv crash: ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা! রাস্তায় চাপ চাপ রক্ত, ছড়িয়ে-ছিটয়ে পড়ে একের পর দেহ, মৃত্যুমিছিল, হাসপাতালে স্বজনহারার আর্তনাদ