Crime News: ভাঙড়ের পর মালদা, কুপিয়ে খুন তৃণমূল নেতাকে, 'গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল' উঠছে অভিযোগ

Malda News: এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরই তুমুল চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।

Malda News: এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরই তুমুল চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।

author-image
Madhumita Dey
New Update
Malda murder, malda tmc leader murder,tmc leader malda, maldah, congress, crime, malda news, west bengal news today, মালদার খবর, তৃণমূল নেতা খুন

Malda News: দাপুটে তৃণমূল নেতা খুনে ব্যাপক চাঞ্চল্য।

অনুষ্ঠান বাড়িতেই ঘরের মধ্যে ঢুকিয়ে এক তৃণমূল নেতাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য ও তার দলবলের বিরুদ্ধে। এই ঘটনার পর ওই পঞ্চায়েত সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাত দশটা নাগাদ চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে ইংরেজবাজার থানার কাজিগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের লক্ষ্মীপুর এলাকায়। ঘটনার সময় ওই তৃণমূল নেতাকে বাঁচাতে গিয়ে তাঁর তিন আত্মীয় গুরুতর জখম হয়েছেন। তাদের চিকিৎসা চলছে মালদা মেডিকেল কলেজে । এই হামলার ঘটনায় ছয় জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে মৃতের পরিবার। পুলিশ সুপার প্রদীপ কুমার যাদব জানিয়েছেন, প্রাথমিক তদন্তে মনে করা হচ্ছে পুরনো কোনও মহিলা সংক্রান্তের ঘটনা এবং জমি বিবাদ এই খুনকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। একজনকে আটক করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজ চালানো হচ্ছে। তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই এই খুন বলে অভিযোগ উঠেছে।

Advertisment

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত তৃণমূল নেতার নাম আবুল কালাম আজাদ (৩৬)। তার বাড়ি মানিকচক থানার গোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কালিতলা এলাকায়। ইংরেজবাজারের মিল্কি এলাকার নতুন একটি বাড়ি করেছেন আবুল কালাম আজাদ। সম্প্রতি সেখানেই পরিবার নিয়ে থাকতেন তিনি। ওই এলাকার রীতিমতো জনপ্রিয় নেতা হয়ে উঠেছিল আবুল কালাম। 

পুলিশ জানিয়েছে, এদিন রাতে লক্ষ্মীপুর এলাকার জালালউদ্দিন মোমিনের বাড়িতেই তার নাবালক ছেলের জন্মদিনের পার্টির আয়োজন করা হয়েছিল। আবুল কালাম আজাদ তার স্ত্রী-সহ পরিবারের লোকেদের নিয়েই রাতে ওই পার্টিতে অংশ নেয়। একইভাবে সেখানে আমন্ত্রিত ছিল কাজিগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য মাইনুল শেখ ও তার দলবল। রাতেই ওই দুজনের মধ্যে আচমকায় বিবাদ বাঁধে । আর সেই বিবাদী চরম আকার নেই। আচমকা মাইনুল শেখ তার দলবল নিয়েই আবুল কালাম আজাদকে একটি ঘরের মধ্যে ঢুকিয়ে দরজা বন্ধ করে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপাতে থাকে। ঘটনাস্থলেই মারা যায় ওই তৃণমূল নেতা। এরপরই মৃতের পরিবারের লোকেরা প্রতিবাদ জানাতে তাদের ওপরও চড়াও হয় হামলাকারী মাইনুল শেখ ও তার দলবল। সেখানেও তিনজন আহত হন। পরে আহতদের ভর্তি করানো হয় মালদা মেডিকেল কলেজে। 

Advertisment

মৃতের বাবা মহম্মদ আইনুল হক জানিয়েছেন, জন্মদিনের পার্টিতে আমার ছেলেকে পরিকল্পনা করে খুন করেছে মাইনুল। কারণ কিছুদিন ধরে আমার ছেলের একটি নয় বিঘার জমি মাইনুল দখল করে নিয়েছিল। অথচ ওরা একসাথেই জমি জায়গার কাজ করতো। এব্যাপারে ছেলে আবুল কালাম প্রতিবাদ জানিয়েছিল। এছাড়াও কয়েক কোটি টাকার ব্যবসা সংক্রান্ত বিষয়ে তছরুপ করেছিল মাইনুল। অভিযুক্তের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছি।

এদিকে ওই অনুষ্ঠান বাড়ির প্রধান উদ্যোক্তা জালালউদ্দিন মোমিন জানান, যখন গোলমাল চলছিল তখন পার্টিতে ডিজে সাউন্ডের জন্য কিছু বুঝে উঠতে পারি নি। এরপরেই ঘরের মধ্যে ওরা ধাক্কাধাক্কি করতে করতে ঢুকে যায়। হঠাৎ মাইকের গান থামতেই বিকট চিৎকার শুনতে পাই । ততক্ষণে আবুল কালামকে মেরে দিয়েছে হামলাকারীরা। 

বলাবাহুল্য, গত কয়েক মাস আগে জেলা পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সির উপস্থিতিতেই তৃণমূলে যোগদান করেছিলেন এই মাইনুল শেখ। জেলা তৃণমূলের প্রভাবশালী নেতা তথা মালদা জেলা পরিষদের সভাধিপতির স্বামীর ঘনিষ্ঠ বলেও পরিচিত রয়েছে বিভিন্ন মহলে। যদিও অভিযুক্ত মাইনুল শেখকে দলের কোনো নেতা বা কর্মী হিসেবে মানতে নারাজ তৃণমূলের ইংরেজবাজার ব্লক তথা জেলা মহিলার সেলের সভানেত্রী প্রতিভা সিংহের । তিনি বলেন, "মাইনুল শেখ একজন অপরাধী। তার বিরুদ্ধে এর আগেও বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কাজের অভিযোগ রয়েছে। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই মাইনুল শেখ কংগ্রেস থেকে প্রার্থী হয়ে কাজীগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের নির্বাচিত সদস্য হয়েছিল । ইদানিং কিছু তৃণমূলীদের সঙ্গে মেলামেশা ছিল। তা বলে ওর সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই। কাজেই এখানে তৃণমূল দলকে জড়ালে হবে না।"

এদিকে বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক অম্লান ভাদুড়ীর অভিযোগ, কয়েক মাস আগেই তৃণমূলে যোগদান করেছিল মাইনুল শেখ। জেলার অনেক প্রভাবশালী নেতাদের সঙ্গে ওঠা বসা ছিল তাঁর ।এখন দলের দুর্নাম ঠেকাতে ওই অভিযুক্তকে আড়াল করার চেষ্টা চালাচ্ছে তৃণমূলের একাংশ। 

তবে নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে তার দলেরই নেতা যুক্ত থাকার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন মালদা জেলা পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সী। কংগ্রেস থেকেই অভিযুক্ত তৃণমূলে যোগ দিয়েছিল বলে জানিয়েছেন তিনি। তার উপস্থিতিতেই অভিযুক্ত দলে যোগ দিয়েছিল বলে জানিয়েছেন তিনি। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে তিনি বলেন, "দলে যোগ দিয়েছিল এটা সত্যি। তবে কে কী করবে তার ওপর তো অন্য কারও নিয়ন্ত্রণ থাকতে পারে না।"

tmc crime police Murder