/indian-express-bangla/media/media_files/2025/09/11/alda-2025-09-11-17-16-26.jpg)
Malda News: অধ্যাপক অপহরণের ঘটনায় অপহরণকারীদের ছবি দেখাচ্ছেন জেলা পুলিশের পদস্থ কর্তারা।
Malda kidnapping: অপহরণের ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই পলিটেকনিক কলেজের অধ্যাপককে পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক থেকে উদ্ধার করল পুলিশ। আর এই ঘটনায় অপহরণকারী সহ মোট ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে পাঁচজনের বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুরের কন্টাই এলাকায়। বাকি একজনের বাড়ি মালদায়।
ধৃত মালদার ওই ব্যক্তি গত ৬ মাস ধরেই অধ্যাপক অপহরণের আগে রেইকি চালিয়েছিল। তারপরেই অপহরণকারীদের একটি টিম তৈরি করেই এই ঘটনা ঘটানো হয় বলে সন্দেহ পুলিশের। ওই অধ্যাপককে মুক্তিপণ বাবদ ৩ কোটি টাকা দাবি করেছিল অপহরণকারীরা। অবশেষে বিভিন্ন ফোনের সূত্র ধরেই ওই অপহরণকারীদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। উদ্ধার করা হয় পলিটেকনিক কলেজের অধ্যাপক তাপস কুমার মণ্ডলকে (৩৬)।
আরও পড়ুন- Nepal: নেপালের প্রতি বরাবরের অমোঘ আকর্ষণ ভারতীয়দের! এর কারণ জানেন?
তিনি মালদার ইংরেজবাজার শহরের মহানন্দাপল্লি এলাকার বাসিন্দা। এরই পাশাপাশি এই অধ্যাপকের মানিকচকে কয়েকশো বিঘা জমি এবং বিপুল পরিমাণ পৈত্রিক সম্পত্তি রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। বুধবার রাতে পূর্ব মেদিনীপুর থেকে উদ্ধার হওয়া অধ্যাপক এবং ধৃততদের মালদায় নিয়ে আসে পুলিশ। বৃহস্পতিবার ধৃত ছয়জনকে মালদা আদালতে পেশ করেছে পুলিশ। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতের কাছে সাত দিনের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানিয়েছে পুলিশ।
আরও পড়ুন-SIR-এ পরিচয়পত্র হিসেবে স্বাস্থ্য সাথী কার্ডকেও অন্তর্ভুক্ত করা হোক, নির্বাচন কমিশনে চিঠি রাজ্যের
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৮ সেপ্টেম্বর মালদা থেকে পদাতিক এক্সপ্রেসে জলপাইগুড়ি যাওয়ার পথেই অপহরণ হয় পলিটেকনিকের অধ্যাপক তাপস কুমার মন্ডশ। ওইদিন এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে অধ্যাপকের স্ত্রী রাখি মন্ডল ইংরেজবাজার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। আবারও ৯ সেপ্টেম্বর অপহরণকারীরা অধ্যাপকের মুক্তিপন হিসেবে তিন কোটি টাকা দাবি করে। অবশেষে বিভিন্ন সূত্র ধরে পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকের অপহরণকারীদের ডেরা থেকে ওই পলিটেকনিকের অধ্যাপককে উদ্ধার করলো পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মালদার ইংরেজবাজার শহরের মহানন্দাপল্লি এলাকার বাসিন্দা তাপস কুমার মন্ডল তিনি জলপাইগুড়ি পলিটেকনিকের অধ্যাপক পদে কর্মরত । তার স্ত্রী রাখি মন্ডলও সরকারি কর্মচারী । তাদের আড়াই মাসের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। গত ৮ সেপ্টেম্বর মালদা থেকে ট্রেনে করে জলপাইগুড়ি যাওয়ার পথেই মাঝপথে নিখোঁজ হয়ে যায় অধ্যাপক তাপস কুমার মন্ডল।
আরও পড়ুন-Mamata Banerjee: বছর ঘুরলেই বিধানসভা ভোট, ধর্মীয় পর্যটনে জোর মমতার, বড় ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর!
রাতেই নিখোঁজের ব্যাপারে ইংরেজবাজার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন অধ্যাপক এর স্ত্রী রাখি মন্ডল । ৯ সেপ্টেম্বর অধ্যাপককে অপহরণ করার উড়ো ফোন আসে রাখিদেবীর মোবাইলে। সেখানেই ওই অধ্যাপকের মুক্তিপণবাবদ ৩ কোটি টাকা দাবি করে অপহরণকারীরা।
পুলিশ জানিয়েছে, এই অপহরণের ঘটনায় মোট ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধৃতদের নাম কার্তিক গুচ্ছেদ, রিয়াদ শেখ , সুরাজ শেখ , কালু শেখ, নাজিমুদ্দিন খান। এদের বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুরের কন্টাই এলাকায়। ধৃত আরেকজনের নাম অমৃত হালদার । তার বাড়ি মালদার মানিকচকে অধ্যাপকের পৈতৃক বাড়ির পাশেই। এছাড়াও অধ্যাপক তাপসবাবু শহরের মহানন্দাপল্লি যেখানে থাকতেন, সেখানে একটি বাসা ভাড়া নিয়ে ছিলেন ধৃত অমৃত হালদার।
শুধুমাত্র এই অধ্যাপককে রেকি করার জন্য। এই অপহরণের মাস্টারমাইন্ড হচ্ছে কার্তিক । তার নেতৃত্বেই তমলুকের পাঁচজনের একটি টিম তৈরি হয়েছিল। কোনও যোগসূত্র মারফত অমৃত হালদারের সঙ্গে অপহরণকারীদের যোগাযোগ হয়। এরপরই অধ্যাপকের সরকারি চাকরি, সম্পত্তির বিচারেই তাকে অপহরণ করে তিন কোটি টাকা দাবি করা হয়।
বৃহস্পতিবার পুলিশ সুপারের অফিসে একটি সাংবাদিক বৈঠক করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সম্ভব জৈন জানিয়েছেন , যে ফোন থেকে মুক্তিপণ চাওয়া হয়েছিল, সেটি তাদারকি করে জানতে পারা যায় ফোনটি এসেছিল পূর্ব মেদনীপুরের তমলুক থেকে। অপহরণকারীরা একটি গাড়িতে করে অধ্যাপককে সরাসরি তমলুকে নিয়ে চলে যায়। সেখানে একটি গেস্ট হাউস ভাড়া করে তারা ছিল। আর সেখান থেকেই মুক্তিপণ ৩ কোটি টাকার দাবি করেই ফোন করা হয় ।
শুধু তাই নয় অধ্যাপকের স্ত্রীর হোয়াটসঅ্যাপে ভিডিও কল করে রীতিমতো বন্দুক হাতে নিয়ে অধ্যাপককে খুন করার হুমকি পর্যন্ত দেওয়া হয় । ৯ সেপ্টেম্বর মালদা পুলিশের একটি বিশেষ টিম পূর্ব মেদিনীপুর পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে। এরপরই ওই দিনই তমলুকের একটি গেস্ট হাউস থেকে অধ্যাপক সহ পাঁচজনকে ধরে ফেলে পুলিশ।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সম্ভব জৈন আরও জানিয়েছেন, ওই পাঁচ জন অপহরণকারীদের জেরা করে পুলিশ জানতে পারে এই ঘটনার পিছনে অধ্যাপকের এক প্রতিবেশী অমৃত হালদার জড়িত রয়েছে। ওই ব্যক্তি অধ্যাপকের বিষয়-সম্পত্তির ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য জানত। ফলে কোনওভাবে অপহরণকারীদের সঙ্গে ওই অমৃত হালদারের যোগাযোগ আগে থেকেই ছিল। এর আগেও বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে মালদার অমৃত হালদার। এই অপহরণের ঘটনার পিছনে অনেক কিছু বিষয় এখনও অস্পষ্ট রয়েছে।