West Bengal Tab scam: দেড়শো পড়ুয়ার ট্যাবের টাকা অন্য অ্যাকাউন্টে জমা পড়াকে কেন্দ্র করে ছড়াল চূড়ান্ত চাঞ্চল্য। অভিযোগ, ১৫ লক্ষ টাকারও বেশি কার্যত উধাও। প্রশ্নের মুখে একাধিক স্কুল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা। থানায় অভিযোগ দায়ের। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর পড়ুয়াদের জন্য মাথাপিছু সরকারের বরাদ্দ ১০ হাজার টাকা। অথচ,এই টাকা প্রকৃত পডুয়াদের অ্যাকাউন্টে না ঢুকে চলে যাচ্ছে 'ভুতুড়ে' অ্যাকাউন্টে। মালদায় অন্তত তিনটি স্কুলের এমন বড়সড় অনিয়ম ধরা পড়েছে।
দেখা যাচ্ছে, তালিকায় পড়ুয়াদের নাম রয়েছে ঠিকই। কিন্তু অ্যাকাউন্ট নম্বর বদলে গিয়েছে। ফলে প্রকৃত প্রাপক পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টের বদলে টাকা চলে গিয়েছে অন্য অ্যাকাউন্টে। মালদায় ট্যাবের টাকা গায়েবের সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগ হবিবপুরের কেন্দপুকুর হাইস্কুলে। এখানে ৯১ জন পড়ুয়ার অ্যাকাউন্ট নম্বর রহস্যজনকভাবে বদলে গিয়েছে। ইতিমধ্যে ওই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হবিবপুর থানায় এবিষয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগ পেয়ে আজ ওই স্কুলে তদন্তে পৌঁছয় হবিবপুর থানার পুলিশ।
আরও পড়ুন- একটি CC ক্যামেরাতেই সাড়ে ৩ লাখ? নয়া 'দুর্নীতি'র কাঁপানো অভিযোগ শুভেন্দু অধিকারীর!
জানা গিয়েছে, সম্প্রতি রাজ্যজুড়ে হইচই শুরু হওয়াতে মালদা জেলা শিক্ষা দপ্তর বিভিন্ন স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে সমস্ত পড়ুয়া ঠিকঠাক টাকা পেয়েছে কিনা তা লিখিত আকারে জানাতে বলে। এই রিপোর্ট চাইতেই ধরা পড়ছে চূড়ান্ত অনিয়ম। হবিবপুরের কেন্দপুকুর হাইস্কুলের পাশাপাশি মালদার হরিশ্চন্দ্রপুরের কনুয়া ভবানীপুর হাইস্কুলে ৩৪ জন ছাত্রের টাকা গায়েব।
স্কুলের তৈরি তালিকাতেই ছাত্রদের নামের পাশে রয়েছে ভুল অ্যাকাউন্ট নম্বর। শনিবার গরমিলের কথা স্বীকার করেন ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক। একইভাবে মালদার গাজোলের চাকনগর পঞ্চায়েতের ডোবাখোকশান বৈরডাঙী ক্ষান্তরানী হাইস্কুলে আরও ১৮ জন ছাত্রের টাকা উধাও হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। টাকা গিয়েছে অন্য অ্যাকাউন্টে। ওই দু'টি স্কুল কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে পুলিশে অভিযোগ জানানোর নির্দেশ দিয়েছে জেলা শিক্ষা দপ্তর। এদিকে ছাত্রদের ট্যাবের টাকার গরমিল রুখতে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন মালদা জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক বাণীব্রত দাস।
আরও পড়ুন- 'আলোর শহর' ফুটছে উৎসবের উষ্ণতায়! বাড়ি বসেই দেখুন প্রতিমা নিরঞ্জনের বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা
রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ছাত্রদের দেওয়ার ট্যাব কেলেঙ্কারি নিয়ে এবার তদন্তে নামলো জেলা প্রশাসনের পদস্থ কর্তারা। মালদার বেশ কিছু স্কুলে ট্যাবের টাকা কেলেঙ্কারির তথ্য ফাঁস হতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যে শিক্ষা দপ্তরের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসনের কাছেও এব্যাপারে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে। এদিকে ট্যাব কেলেঙ্কারির ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোমবার হরিশ্চন্দ্রপুরের একটি স্কুল চলাকালীন বাইরে বিক্ষোভ দেখালেন গ্রামবাসীরা। সংশ্লিষ্ট স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মূলত ট্যাব কেলেঙ্কারি অভিযোগ রয়েছে।
আরও পড়ুন- সলমন-শাহরুখের পর এবার মিঠুন, পাকিস্তান থেকে প্রাণনাশের হুমকি 'মহাগুরু'কে
জেলা শিক্ষা দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, মোট ১৫০ জন ছাত্রের ট্যাবের টাকা চলে গেছে অন্য অ্যাকাউন্টে। ইতিমধ্যেই জেলার শিক্ষা পরিদর্শক তিনটি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের নামে জেলাশাসকের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন। এরপরই জেলাশাসক তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। এদিন হরিশ্চন্দ্রপুরের কনুয়া ভবানীপুর হাইস্কুলে তদন্তে যান চাঁচলের এসডিও সৌভিক মুখার্জি। তাঁর সঙ্গে ছিলেন চাঁচল মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সোমনাথ সাহা, হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি মনোজিৎ সরকার সহ জেলা শিক্ষা দপ্তরের আধিকারিকেরা।
প্রায় দেড় ঘন্টা চলে তদন্ত। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ট্যাব দুর্নীতির বিষয় নিয়ে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় গ্রামবাসীরা। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে প্রতিবাদের সামিল হন সংশ্লিষ্ট এলাকার এক পঞ্চায়েত কর্মাধ্যক্ষ। মালদা জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক বাণীব্রত দাস জানিয়েছেন, বিভিন্ন স্তর থেকে অভিযোগ পাওয়ার পর ছাত্রদের ট্যাব বিলির বিষয়টি আমরা তদারকি করে দেখেছি। সেখানে বিরাট কেলেঙ্কারি ধরা পড়েছে। অন্তত ১৫০ জন পড়ুয়া ট্যাবের টাকা চলে গেছে অন্য অ্যাকাউন্টে। এব্যাপারে জেলা প্রশাসনকে জানানোর পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে চারজনের প্রতিনিধি দল হবিবপুরের কেন্দপুকুর হাইস্কুলে গিয়ে তদন্ত করে।