Durga Puja 2024: দেবীর বোধনের পর নদীতে ঘট ভরে এবং কলাবউকে সঙ্গে নিয়ে পুজো মণ্ডপে আসার পথে শূন্যে ৫ রাউন্ড গুলি ছোড়ার রীতি আজও অটুট। সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনীর উপস্থিতিতে রায় বাড়ির এমন দুর্গাপুজো আজও উপচে পড়ে ভিড়। প্রায় ২২৪ বছরের পুরনো মালদহের হবিবপুরের তিলাসন গ্রামের রায় বাড়ির দুর্গাপুজো। শতাব্দীপ্রাচীন এই পুজো আজও পুরনো নিয়ম-নীতি মেনেই হয়।
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁষা রায় বাড়ির দুর্গাপুজো আজও এলাকার মানুষের মধ্যে উৎসাহ ও উদ্দীপনা জাগিয়ে তোলে। দেবীর জন্য পুনর্ভবা নদী থেকে ঘটে জল ভরে এবং সপ্তমীর সকালে কলা বউকে স্নান করিয়ে পুজো মণ্ডপে আসার সময় রায় বাড়ির সদস্যরা লাইসেন্স প্রাপ্ত বন্দুক থেকে শূন্যে পরপর পাঁচ রাউন্ড গুলি ছোঁড়েন। গুলির শব্দে রাস্তায় ভিড় করেন গ্রামবাসীরা। আর লাইসেন্স প্রাপ্ত বন্দুক থেকে গুলি ছোঁড়ার ক্ষেত্রেও BSF-এর অনুমতি নিতে হয়।
কথিত আছে, ১৯১৮ সালে রায় পরিবারের পূর্বপুরুষ শিবপ্রসাদ রায়ের হাত দিয়েই শুরু হয়েছিল দুর্গাপুজো (Durgapuja)। জমিদার পরিবার হিসাবে আজও পরিচিত রয়েছে রায় বাড়ির। সেই সময় এই জমিদার পরিবারের বিলাসবহুল জীবনযাত্রা নানা ব্যবসা-বাণিজ্য ও সাম্রাজ্য চালানোর ক্ষেত্রে পূর্বপুরুষ শিবপ্রসাদ রায় দেবী দুর্গার আরাধনা শুরু করেন।
তবে ঠিক কী কারণে শূন্যে গুলি ছোঁড়া হয় সপ্তমীর সকালে, তা আজও স্পষ্ট নয় এ বাড়ির সদস্যদের কাছেও। জমিদার বাড়ির পুজো মণ্ডপে এবারও তৈরি হচ্ছে মা দুর্গার মূর্তি। ধুমধাম করে চলবে পুজো। ফি বারের মতো এবারেও থাকছে পাত পেড়ে ভোগ খাওয়ানোর বন্দোবস্ত। রায় পরিবারের নাট মন্দিরে স্থানীয় মৃৎশিল্পী দুর্গা প্রতিমা তৈরি করছেন।
আরও পড়ুন- Eastern Rail: যাত্রী-স্বার্থে অভূতপূর্ব তৎপরতা! রেলের যুগান্তকারী প্রয়াস দারুণ চর্চায়
বর্তমানে রায় পরিবারের পুজো উদ্যোক্তা রাকেশ কুমার রায় বলেন, "প্রায় ২২৪ বছরের পুরনো রায় বাড়ির দুর্গাপুজো। মহালয়ার দিন থেকেই দেবীর আরাধনা শুরু হয়। মূল পুজো আরম্ভ হয় ষষ্ঠীর সন্ধ্যায়। সপ্তমীর সকালে নাট মন্দির থেকে সামান্য দূরে পুনর্ভবা নদীতে ঘট ভরা হয় এবং কলা বউকে স্নান করানো হয়। এরপর পূজ মণ্ডপে ফেরার সময় আমি নিজে লাইসেন্সপ্রাপ্ত বন্দুক থেকে পাঁচ রাউন্ড শূন্যে গুলি ছুঁড়ি। এখন এই কর্মসূচির জন্য BSF-এর অনুমতি নিতে হয়।"
আরও পড়ুন- Sagar Dutta Medical College: জুনিয়র ডাক্তারদের মারধর-ওয়ার্ডে ভাঙচুর, সাগর দত্তে কর্মবিরতি চিকিৎসকদের
তিনি আরও বলেন, "আমরা বাবা ও ঠাকুরদাদার মুখেই শূন্যে গুলি ছোঁড়ার প্রচলনের কথা শুনে এসেছি। তাঁদের মৃত্যুর পর এখন আমরাই পূর্বপুরুষের এই স্মৃতি টিকিয়ে রেখেছি। তবে যতটুকু আমরা জানতে পেরেছি এলাকার শান্তি রক্ষা এবং পূর্বপুরুষদের স্মৃতির উদ্দেশ্যেই শূন্যে গুলি ছোঁড়ার প্রচলন রয়েছে। অষ্টমী এবং নবমীর দিন গ্রামবাসীদের পংক্তিভোজনেরও আয়োজন করা হয়ে থাকে। দশমীর দিন পরিবারের রীতি মেনেই দেবী দুর্গার বিসর্জন দেওয়া হয়।"