/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/12/cats-2025-10-12-16-05-21.jpg)
ঘটনার নিন্দা জানালেও মুখ্যমন্ত্রীর করা মন্তব্য ঘিরে শুরু হয়েছে শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক
"রাত ১২:৩০ টায় ক্যাম্পাসের বাইরে কেন, কী করে বেরিয়েছিলেন"? দুর্গাপুর গণধর্ষণ কাণ্ডে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘটনার নিন্দা জানালেও মুখ্যমন্ত্রীর করা মন্তব্য ঘিরে শুরু হয়েছে শুরু হয়েছে তুমুল বিতর্ক।
দুর্গাপুরে মেডিকেল পড়ুয়াকে গণধর্ষণ কাণ্ডে মুখ খুলে বিতর্কে জড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার কলকাতা বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। আমাদের সরকার এই ধরণের অপরাধের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি নিয়ে চলে। তিনজন অভিযুক্তকে ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকেই রেহাই দেওয়া হবে না।”
আরও পড়ুন- দমকা হাওয়া-মুর্হুমুর্হু বাজ? আজ রবিবার দুপুর গড়াতেই খেলা দেখাবে আবহাওয়া? রইল বিরাট আপডেট
#WATCH | Kolkata, WB: On the alleged gangrape of an MBBS student in Durgapur, CM Mamata Banerjee says, "... The girls should not be allowed to go outside (college) at night. They have to protect themselves also. There is a forest area. Police are searching all the people. Nobody… https://t.co/9cck7wwxcnpic.twitter.com/OnuFiFSIAz
— ANI (@ANI) October 12, 2025
ঘটনার নিন্দা জানালেও মুখ্যমন্ত্রীর পরবর্তী মন্তব্য ঘিরে শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক। তিনি বলেন, “বিশেষ করে মেয়েদের বেশি রাতে বেরনো উচিত নয়। তাদের নিজেদেরও সতর্ক থাকতে হবে। ওই ছাত্রী বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে পড়ত। এই ধরনের ঘটনার প্রতিষ্ঠানেরও দায়বদ্ধতা রয়েছে—ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। পুলিশ তো বাড়ি-বাড়ি গিয়ে বসে থাকবে না। কেউ যদি রাত সাড়ে ১২টা বেরিয়ে কোথাও যায়, আমি ঘটনাকে সমর্থন করছি না, এটা নিন্দনীয়"।
পাশাপাশি তিনি বলেন, "হোস্টেলের নিয়ম মেনে চলা উচিত এবং বেশি রাতে বাইরে বেরনো উচিত নয়। বেসরকারি কলেজগুলিকে তাদের ক্যাম্পাসের ভেতরে এবং আশেপাশে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে,”। একই সঙ্গে ওড়িশার বিজেপি সরকারের সমালোচনা করে, মুখ্যমন্ত্রী প্রতিবেশী রাজ্যে ধর্ষণের ঘটনা তুলে ধরেন। তিনি প্রশ্ন তোলেন, "ওড়িশায় সমুদ্র সৈকতে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছিল। ওড়িশা সরকার কী পদক্ষেপ নিয়েছে?"
আরও পড়ুন- রবিবার ফের উত্তরবঙ্গ সফরে মুখ্যমন্ত্রী, 'প্রমোদের ভ্রমণ', কটাক্ষ শুভেন্দুর
যদিও নির্যাতিতার পরিবারের তরফে দাবি করা হয়েছে ঘটনাটি ঘটেছে রাত ১০টার আগেই। নির্যাতিতার বাবা-মা জানান, শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ সহপাঠীর কাছ থেকে ফোন পেয়ে তাঁরা জানতে পারেন যে তাঁদের মেয়ের উপর নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার সকালে দুর্গাপুরে পৌঁছে তাঁরা অভিযোগ দায়ের করেন ।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ওড়িশার জলেশ্বরের বাসিন্দা বছর ২০ -এর মেডিক্যাল ছাত্রী শুক্রবার রাতে এক সহপাঠীর সঙ্গে রাতের খাবার খেতে গিয়েছিলেন। তখনই কয়েকজন দুষ্কৃতী তাঁদের পিছু নেয়। সহপাঠী পালিয়ে গেলে মেয়েটিকে একা পেয়ে তারা জঙ্গলের ভিতর টেনে নিয়ে যায় এবং ধর্ষণ করে। ছাত্রীটির মোবাইল ফোনও ছিনিয়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন- গোষ্ঠীকোন্দল নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য, ভোটের আগে বোমা ফাটালেন দাপুটে টিএমসি বিধায়ক
নির্যাতিতার মা জানিয়েছেন, “আমার মেয়ে বন্ধুর অনুরোধে বাইরে খাবার খেতে গিয়েছিল। তিনজন তাদের পথ আটকায়। সহপাঠী পালিয়ে গেলে তিনজন আমার মেয়েকে টেন জঙ্গলে নিয়ে যায়, আরও দুজন পরে সেখানে আসে। একজন ধর্ষণ করে এবং মোবাইল কেড়ে নেয়। তাঁকে হুমকি দেওয়া হয়েছিল—চিৎকার করলে মেরে ফেলা হবে।”
পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং বাকিদের খোঁজে অভিযান চলছে। নির্যাতিতা ছাত্রী বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি, তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হলেও মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
উল্লেখ্য, এই ঘটনার পর রাজ্যজুড়ে নিরাপত্তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। বিরোধীরা মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের সমালোচনা করে বলেছেন, সরকার দায় এড়াতে দোষ চাপাচ্ছেন ভুক্তভোগীর উপর।
মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যর কড়া নিন্দা জানিয়েছেন বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল। তিনি মমতা সরকারের সঙ্গে তালিবান শাসনের তুলনা টেনে বলেন, আপনি বলছেন মেয়েটি সাড়ে ১২টায় ক্যাম্পাসের বাইরে গিয়েছিল, অনুরোধ করব মিথ্যা বলবেন না। মেয়েটি রাতের খাবার খেতে বাইরে গিয়েছিল। সেটা রাত সাড়ে সাতটা-আটটা হবে। বাংলায় রাত সাড়ে ১২টার পর কী বেরনো যাবে না? ডাক্তার নার্স, আইটি প্রফেশানাল যারা নাইট ডিউটি করেন তারা রাতে বাইরে বেরোবে না? এই ধরণের তালিবানি মানসিকতাকে ধিক্কার জানাই। বাংলার মেয়েরা লক্ষ্মীর ভাণ্ডার নয়, তারা সম্মান চায়। আপনি সবসময় ধর্ষকদের পক্ষে কথা বলেন। কারণ সকলেই টিএমসি ক্যাডার, ২৬ এ বাংলার মহিলারা এই অপমানের জবাব দেবে।