TMC Language rights protest : বাংলাভাষী মানুষের উপর নির্যাতন ও “ভাষাসন্ত্রাস”-এর বিরুদ্ধে সরব হল তৃণমূল কংগ্রেস। বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাঙালি অভিবাসীদের উপর অব্যাহত হেনস্তার প্রতিবাদে টানা কর্মসূচির রূপরেখা ঘোষণা করল শাসকদল। আগামী দিনে রাজ্যের একাধিক জেলায় হবে বিক্ষোভ মিছিল, প্রতীকী অবস্থান ও প্রতিবাদ সভা।
বিজেপি শাসিত রাজ্যে 'বাঙ্গালি বিদ্বেষ'! এবার পথে নামছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ রবিবার ২৭ জুলাই বাংলা ভাষা ও বাংলাভাষীদের উপর বিজেপি শাসিত রাজ্যে লাগাতার আক্রমণের প্রতিবাদে আনুষ্ঠানিকভাবে ভাষা আন্দোলন শুরু করতে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এবার থেকে সপ্তাহের প্রতিটি শনিবার ও রবিবার রাজ্য জুড়ে চলবে এই ভাষা আন্দোলনের কর্মসূচি। বাংলাভাষীদের সুরক্ষা ও মর্যাদা রক্ষায় লাগাতার রাস্তায় নামবে তৃণমূল। এই আন্দোলনের প্রথম দফা কর্মসূচিতে কাল, সোমবার বোলপুরে প্রতিবাদ মিছিলে নেতৃত্ব দেবেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত বোলপুর থেকেই বাংলার ভাষা ও সংস্কৃতির উপর 'অন্যায়-অবিচার'র বিরুদ্ধে সরব হবেন তিনি। আজ বিকেলেই বীরভূম পৌঁছবেন মুখ্যমন্ত্রী।
২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আর মাত্র কয়েকটা মাস বাকি। তার আগে বিজেপির বিরুদ্ধে জোরদার আন্দোলনে পথে নামছে তৃণমূল। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বাংলাভাষীদের উপর "হেনস্তা ও ভাষাসন্ত্রাস"-এর অভিযোগ তুলে রাজ্যজুড়ে ‘ভাষা আন্দোলন’-এর ডাক দিয়েছেন।
২৭ জুলাই থেকে শুরু তৃণমূলের ‘ভাষা আন্দোলন’
২১ জুলাই কলকাতায় শহিদ দিবসের মঞ্চ থেকে এই ভাষা আন্দোলনের ঘোষণা করেন মমতা। প্রতি শনিবার ও রবিবার রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে চলবে বিক্ষোভ। দিল্লিতে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে তৃণমূল সাংসদদের বিক্ষোভে নামার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি।
মমতার অভিযোগ—“বাংলা ভাষার উপর সন্ত্রাস চলছে। বিজেপি শাসিত ওডিশা, ছত্তিশগড়, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশে ১০০০-র বেশি বাংলাভাষীকে আটক করা হয়েছে। এরা সবাই অবৈধ অনুপ্রবেশকারী নয়, শুধু বাংলা বলার অপরাধেই শাস্তি পাচ্ছেন।” মমতা বলেন, “আমাদের ২২ লক্ষ বাঙালি দেশের বিভিন্ন রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। তাদের হেনস্তা করা হচ্ছে। অথচ বাংলায় ১.৫ কোটি অভিবাসী রয়েছে, তাঁদের আমরা স্বাগত জানাই। তাহলে আমাদের ভাষার সঙ্গে এই বৈষম্য কেন?”
যদিও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই ভাষা আন্দোলনকে কটাক্ষ ছুঁড়তে ছাড়েনি বিজেপি। অভিনেতা ও প্রাক্তন রাজ্যসভা সাংসদ মিঠুন চক্রবর্তী বলেন, “মমতা সব কিছুতেই বিতর্ক তৈরি করতে চান। এই ভাষা আন্দোলন আসলে লোক দেখানো। বাংলার ভাষাকে কেউ কেড়ে নিতে পারবে না।”অপরদিকে রাজ্য বিজেপি সভাপতি শমিক ভট্টাচার্য বলেন, “মমতা আসলে বাংলাদেশের মুসলিম অনুপ্রবেশকারীদের রক্ষা করতে চাইছেন। এই অবৈধ অনুপ্রবেশের জেরে ভারতীয় বাঙালি মুসলিমরা চাকরি হারাচ্ছেন, ভোটার তালিকায় গণ্ডগোল হচ্ছে।” যদিও ২৬-এর ভোটের আগে ভাষা আন্দোলনকে রাজনৈতিক হাতিয়ার করে ভোট বৈতরণী পেরোতে চাইছে তৃণমূল। এমনটাই মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের। সেই লক্ষ্যেই তৃণমূল সুপ্রিমোর নির্দেশে টানা কর্মসূচী তৃণমূল কংগ্রেসের।
এক নজরে দেখে নেওয়া যাক কবে কোনদিন কর্মসূচী?
আগামী ২-৩ অগাস্ট মহিলা তৃণমূল কংগ্রেস। ৯ এবং ১০ অগাস্ট তৃণমূল যুব কংগ্রেস। ১৭ অগাস্ট তৃণমূল লিগ্যাল সেল, ২৩-২৪ অগাস্ট জয় হিন্দ বাহিনী,৩০-৩১ অগাস্ট তৃণমূল কংগ্রেস কিসান ও ফার্ম ওয়ার্কর্স। ৬-৭ সেপ্টেম্বর তৃণমূল কংগ্রেস প্রগ্রেসিভ হেলথ অ্যাসোসিয়েশন, ১৩-১৪ সেপ্টেম্বর তৃণমূল কংগ্রেস শিক্ষাবন্ধু সেল, ১১-১২ অক্টোবর আইএনটিটিইউসি, ২৫-২৬ অক্টোবর তৃণমূল কংগ্রেস আদিবাদী সেল। ১-২ নভেম্বর তৃণমূল কংগ্রেস সেকেন্ডারি টিচার্স অর্গানাইজেশন, ৮-৯ নভেম্বর ওয়েবকুপা, ১৫-১৬ নভেম্বর তৃণমূল কংগ্রেস প্রাইমারি টিচার্স অর্গানাইজেশন। ২২-২৩ নভেম্বর TMC SC OBC সেল। ২৯-৩০ নভেম্বর তৃণমূল কংগ্রেস প্যারা টিচার্স অর্গানাইজেশন। ৬-৭ ডিসেম্বর তৃণমূল কংগ্রেস মাইনরিটি অর্গানাইজেশন.১৩-১৪ ডিসেম্বর তৃণমূল কংগ্রেস হিন্দি সেল, ২০-২১ ডিসেম্বর তৃণমূল কংগ্রেস ছাত্র পরিষদ।