Kali Puja 2024: আদিগঙ্গার পাড়ে কয়েকশো বছরের প্রাচীন মন্দিরবাজারের দক্ষিণ বিষ্ণুপুর শ্মশান। এই শ্মশানে আগে ভিড় জমাতেন তান্ত্রিক ও সাধকরা। শব সাধনায় বসতেন অনেকেই। এখনও শ্মশানে ঢুকলে গা ছমছমে পরিবেশ। স্থানীয়দের বিশ্বাস, তান্ত্রিকদের সাধনার ফলে আজও রাতের অন্ধকারে জেগে ওঠে শ্মশান। ১১০ বছর আগে দক্ষিণ বিষ্ণুপুরের শ্মশান লাগোয়া জঙ্গলের মধ্যে টালির ছাউনির নীচে কালী পুজো (Kali Puja) শুরু করেছিলেন তান্ত্রিক মণিলাল চক্রবর্তী। ১০৮টি নরমুণ্ড দিয়ে চলত তন্ত্রমতে দেবীর উপাসনা। সেই থেকেই শ্মশানে পূজিত হয়ে আসছেন মা করুণাময়ী কালী (Karunamoyee Kali)। শ্যামাকালী পুজোর দিন আজও হাজার হাজার মানুষ ভিড় জমান এই মন্দিরে। স্থানীয়দের মুখে মুখে প্রচলিত আছে, তন্ত্রের দীক্ষা নিয়ে শ্মশানে সাধনা শুরু করেছিলেন ব্রাহ্মণ মণিলাল চক্রবর্তী।
কালীর স্বপ্নাদেশ পেয়ে শ্মশান লাগোয়া জঙ্গলের মধ্যে পুজো শুরু করেন তিনি। দেবী নিত্যপূজার ইচ্ছা প্রকাশ করলে পাকাপাকি ভাবে তৈরি করা হয় মন্দির, গঙ্গার তীরে ঘন জঙ্গল সেই জঙ্গলে বাস ছিল হিংস্র জীব জন্তুদের কোনওভাবে মানুষের প্রবেশ ছিল না সেই জঙ্গল সাফ করে জঙ্গলের মধ্যে তৈরি হয় মন্দির। দেবী মূর্তির পেছনে বসানো হয় ১০৮টি নরমুণ্ড, এইসব নর মুন্ডগুলি অপঘাতে মৃত্যু হওয়া ব্যক্তিদের বলে দাবি করা হয় । সামনে পঞ্চমুণ্ডির আসন মায়ের বেদির নিচে দেওয়া হয় নর মুন্ড, মায়ের মূর্তি মাটি ছাড়া তৈরি হয় বালি সিমেন্ট দিয়ে কংক্রিটের। এখানে তন্ত্র মতে দেবীকে পুজো দেওয়া হলেও কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ পশু বলি।
কালীপুজোর দিন প্রথমে শ্মশানে আশা শবের আত্মার শান্তি কামনা করে পুজো দিয়ে তারপরেই ১০৮ টি নর মুন্ড নিয়ে পুজো দেওয়া হয় তারপরেই শুরু হয় মা কালীর পুজো। পুজোর দিন মদ, কাঁচা মাংস ও ছোলা পড়া শোল মাছ দিয়ে পুজো করা হয়। তন্ত্রসাধক মণিলালের মৃত্যুর পর থেকে তাঁর পুত্র শ্যামল চক্রবর্তী মন্দিরের দায়িত্ব সামলে আসছেন। তিনিই এখন প্রধান সেবাইত।
আরও পড়ুন- Suvendu on Tanmay: তৃণমূলের ঝান্ডা ধরবেন তন্ময়? শুভেন্দুর বিস্ফোরক দাবিতে তোলপাড়
শ্যামলবাবুর কথায়, ‘‘বাবার মৃত্যুর পর কাকা ফণীভূষণ চক্রবর্তীর কাছ থেকে তন্ত্রের শিক্ষা নিতে থাকি। পরে করুণাময়ী মন্দিরে (Karunamoyee Kali Mandir) মায়ের নিত্য পূজা শুরু করি। পুজোর দিন দূরদূরান্ত থেকে বহু ভক্তরা আসেন এই পুজো দেখতে , ভক্তদের মনস্কামনার জন্য মন্দিরের সামনে একাধিক ঢিল বেঁধে রাখে। তবে এক সময় এই মন্দিরে আসতে ভক্তরা ভয় পেত, চারিদিকে গা ছমছমে ভাব অন্ধকার জঙ্গল এখন অনেকটাই পরিবর্তন হয়েছে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন বসার জায়গা আলো কিছুটা হলেও আধুনিকতার ছোঁয়া পেয়েছে মন্দির চত্বর।"