/indian-express-bangla/media/media_files/2025/05/29/J1KsraLqNqrkgw7Ume9w.jpg)
Narendra Modi & Mamata Banerjee: নরেন্দ্র মোদী ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
Nagarkata BJP MP MLA attack: নজিরবিহীন প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে বেসামাল উত্তরবঙ্গ। বিশেষ করে উত্তরবঙ্গের পাহাড়ি এলাকায় নাগাড়ে চলা ঝড়-বৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ২৩ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে, আহত হাজারের বেশি। এই পরিস্থিতিতে গতকাল নাগরাকাটায় দুর্যোগ পীড়িতদের ত্রাণ বিলি করতে গিয়ে স্থানীয়দের সীমাহীন ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে BJP সাংসদ খগেন মুর্মু ও শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষকে।
ইটের ঘায়ে মাথা ফেটেছে খগেন মুর্মুর, আহত হয়েছেন শঙ্কর ঘোষও। দলের দুই সাংসদ-বিধায়কের উপর এমন হামলা ইস্যুতে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলকেই দায়ী করেছে বিজেপি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও নাগরাকাটার ঘটনা নিয়ে জোড়াফুলকেই নিশানা করেছিলেন। মোদীর সেই অভিযোগের এবার পাল্টা জবাব তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রধানমন্ত্রীর কড়া সমালোচনা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, "এটা খুবই দুর্ভাগ্যের এবং গভীর উদ্বেগের বিষয় যে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী একটি প্রাকৃতিক বিপর্যয় নিয়ে রাজনীতি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, কোনো উপযুক্ত অনুসন্ধানের জন্য অপেক্ষা না করেই – তা-ও আবার যখন উত্তরবঙ্গের মানুষ ভয়াবহ বন্যা ও ধসের সঙ্গে যুঝছেন।যখন সমগ্র স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ ত্রাণ ও উদ্ধারের কাজে ব্যস্ত হয়ে আছে, তখন বিজেপি নেতারা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় গিয়েছিলেন বিপুল সংখ্যক গাড়ির কনভয় নিয়ে, কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা নিয়ে এবং স্থানীয় পুলিশ ও প্রশাসনকে কোনো খবর না দিয়ে। রাজ্য প্রশাসন, স্থানীয় পুলিশ বা তৃণমূল কংগ্রেসকে কীভাবে এই ঘটনার জন্য দায়ী করা যাবে?"
তিনি আরও লিখেছেন, "প্রধানমন্ত্রী তৃণমূল কংগ্রেস এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ওপর দোষারোপ করেছেন কিছুমাত্র প্রমাণ ছাড়া, আইনানুগ কোনো তদন্ত ছাড়া এবং কোনো প্রশাসনিক রিপোর্ট ছাড়া। এটা শুধু রাজনৈতিক নিম্নতা স্পর্শ করল না, যে সাংবিধানিক নৈতিকতা তুলে ধরতে প্রধানমন্ত্রী শপথ নিয়েছেন, সেই নৈতিকতারও লঙ্ঘন হল। যে কোনো গণতন্ত্রে আইন তার নিজস্ব পথ নেয় এবং কোনো ঘটনার দায় নির্ধারিত হয় যথাযথ প্রক্রিয়ায় - কোনো রাজনৈতিক বেদীর উচ্চতা থেকে করা একটি ট্যুইটের মাধ্যমে নয়। সংশ্লিষ্ট ঘটনা ঘটেছিল একটি কেন্দ্রে, যেখানে মানুষ নিজেরাই বিজেপির একজন বিধায়ককে নির্বাচন করেছেন। তথাপি এই ঘটনায় তৃণমূল কংগ্রেসের তথাকথিত ‘শক্তিমত্তা' দেখায় প্রধানমন্ত্রী দ্বিচারিতা অনুভব করলেন না। এই ধরনের অসার এবং অতি- সরলীকৃত সাধারণীকরণ শুধু অপরিণতই নয়, তা দেশের সর্বোচ্চ পদের সঙ্গে মানানসইও নয়।যে প্রধানমন্ত্রী মণিপুরে জাতি-হিংসা শুরু হবার ৯৬৪ দিন পরে সেখানে যাওয়ার অবকাশ পেয়েছিলেন, তাঁর কাছ থেকে বাংলার জন্য এই সহসা উদ্বেগ কোনো সমবেদনার পরিচয় নয়। বরঞ্চ, এটাকে সুবিধাবাদী রাজনৈতিক নাট্যের মতো মনে হচ্ছে।"
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, "হ্যাঁ, আমরা সবাই দ্বিধাহীনভাবে হিংসার নিন্দা করি। কিন্তু এটা রাজনৈতিক বুক-চাপড়ানোর সময় নয়। এটা সহায়তা ও নিরাময়ের সময়। এটাও স্পষ্ট যে, বিজেপি সেই ক্লান্তিকর উত্তরবঙ্গ বনাম দক্ষিণবঙ্গের উপাখ্যানে ফিরতে চায়, ভোটের আগে মেরুকরণের আশায়। স্পষ্ট হয়ে যাক: বাংলা এক – আবেগে, সংস্কৃতিতে, রাজনীতিতে। প্রধানমন্ত্রীকে বলি: নির্বাচিত রাজ্য সরকারের কথা শুনুন, শুধু নিজের দলের লোকের কথা শুনবেন না। আপনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী, কেবল বিজেপির নন। আপনার দায়িত্ব দেশ-নির্মাণ, কাহিনি নির্মাণ নয়। সঙ্কটের এই মুহূর্তে,আমরা যেন বিভাজন না বাড়াই। আমাদের একত্রিত হতে হবে, দলীয় লাইনের ঊর্ধ্বে মানুষের সেবায় – যে মানুষ এখন আমাদের সেবা সবচেয়ে বেশি চাইছে। রাজনীতি আরেকদিন হোক।"
It is unfortunate and deeply concerning that the Prime Minister of India has chosen to politicise a natural disaster without waiting for a proper investigation, especially while people in North Bengal are grappling with the aftermath of devastating floods and landslides.
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) October 6, 2025
When…
উল্লেখ্য, গতকাল নাগরাকাটার ঘটনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে লিখেছিলেন, "বন্যা ও ভূমিধসে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সেবা করার জন্য পশ্চিমবঙ্গে যেভাবে আমাদের দলের সহকর্মীরা, যার মধ্যে একজন বর্তমান সাংসদ এবং বিধায়কও রয়েছেন, তাদের উপর যেভাবে আক্রমণ করা হয়েছে তা সম্পূর্ণরূপে ভয়াবহ। এটি তৃণমূল কংগ্রেসের অসংবেদনশীলতার পাশাপাশি রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির একেবারেই করুণ অবস্থা তুলে ধরে।
The manner in which our Party colleagues, including a sitting MP and MLA, were attacked in West Bengal for serving the people affected by floods and landslides is outright appalling. It highlights the insensitivity of the TMC as well as the absolutely pathetic law and order…
— Narendra Modi (@narendramodi) October 6, 2025
আমি আশা করি পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবং তৃণমূল কংগ্রেস এই ধরনের চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিতে সহিংসতায় লিপ্ত হওয়ার পরিবর্তে মানুষকে সাহায্য করার দিকে আরও বেশি মনোযোগী হবে। আমি বিজেপি কর্মীদের জনগণের মধ্যে কাজ চালিয়ে যাওয়ার এবং চলমান উদ্ধার অভিযানে সহায়তা করার আহ্বান জানাচ্ছি।"