দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিংয়ে সম্প্রতি পঞ্চায়েত সদস্য স্বপন মাজি-সহ তিন তৃণমূল নেতা খুন হয়েছেন। বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্বের ফলে এই খুন। তৃণমূল এই খুনে বিজেপির হাত দেখছে। কে কবে এসইউসি করত সেকথাও উঠে আসছে। অন্যদিকে রাজনৈতিক মহল বলছে, সামনের বছরেই রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন। গ্রামীণ সংসদের নির্বাচনের আগে এই খুন কীসের আভাস? ক্ষমতা দখলের রাজনীতিতে কেউ এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে চাইছে না। যে কোনও মূল্যে জমি দখলে রাখতে তৎপরতা বাড়ছে বলে মনে করছে অভিজ্ঞ মহল।
পঞ্চায়েতি ব্যবস্থায় গ্রামীণ প্রশাসনের ওপর নির্ভর করে একাধিক প্রকল্প রূপায়নের। পঞ্চায়েতগুলিতে এখন কোটি কোটি টাকার প্রকল্প বরাদ্দ হয়। কান পাতলেই নানা ক্ষেত্রে কাটমানির অভিযোগ শোনা যায়। রাজনীতি তথা অর্থনীতির ভিত্তিই এখন গ্রাম পঞ্চায়েত। গড়পড়তা গ্রাম পঞ্চায়েতের পূর্বের ও বর্তমান কর্তাদের বাড়িঘর-সম্পত্তি ও চালচলনেই তা স্পষ্ট বলে মনে করে অভিজ্ঞমহল। রাজনৈতিক মহলের মতে, তাই পঞ্চায়েত নিয়ে লড়াই আরও বাড়বে।
একদিকে যেমন অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও ক্ষমতার আস্ফালন, পাশাপাশি লোকসভা নির্বাচনের আগে পঞ্চায়েতে জয় বাড়তি অক্সিজেন জোগাবে যে কোনও দলকে। আবার জোর করে প্রার্থী না দিতে দেওয়া বা ভোট দিতে না দিলে তার ফলও যে মারাত্মক হয় তা ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচন বড় প্রমাণ। তাই ২০২১-এর পর ফের ২০২৩ পঞ্চায়েতকে টার্গেট করে জোরালো ভাবে নেমে পড়েছে রাজনৈতিক দলগুলি। তবে এবারও হাল ছাড়তে নারাজ গেরুয়া শিবির।
আরও পড়ুন- তৃণমূলে টগবগিয়ে ছুটছে বাবুলের ঘোড়া, দলে বিরাট পদে তারকা বিধায়ক!
২০২৩ পঞ্চায়েত ভোটের দামামা বেজে গিয়েছে। এর আগেই একাধিক সভায় বকেয়া কাজ দ্রুত শেষ করতে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগাম পঞ্চায়েত ভোট হতে পারে বলেও তিনি ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। তবে রাজনৈতিক মহলের মতে, দলকে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত রাখতেই এমন ঘোষণা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে আসরে নেমে পড়েছে বিজেপিও।
আরও পড়ুন- পাখির চোখ ‘২৪, তৃণমূলের কোমর ভাঙতে বঙ্গ BJP-র বাজি সেই কেন্দ্রীয় নেতারাই
২০২৩ পঞ্চায়েত নির্বাচনকে মাথায় রেখে বিজেপিও ময়দানে নেমে পড়েছে। বিধানসভা নির্বাচনে পরাজয়ের একবছর পর যেন নিয়মিত কর্মসূচি শুরু করে দিয়েছে বিজেপি। রাজ্যে এসেছিলেন অমিত শাহ, মিঠুন চক্রবর্তী। দীর্ঘসময় রাজ্যে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের আনাগোনা বন্ধ ছিল।
এখন জেলায় জেলায় নানা দলীয় অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরাও আসছেন। মোদ্দা কথা গেরুয়া শিবির যেন একটু ঝাঁকুনি দেওয়ার চেষ্টা করছে। অভিজ্ঞমহলের মতে, বিজেপি নেতৃত্ব অবগত আছেন যে পঞ্চায়েত নির্বাচনে ময়দানে না থাকলে লোকসভার লড়াইতে পিছিয়ে পড়বে দল। অর্থাৎ প্রাথমিক লক্ষ্য পঞ্চায়েত ভোট।