TMC councillors:২৯ জুলাই কাউন্সিলরদের কলকাতায় ডাক পড়লেও তার আগেই পুরসভার কক্ষে বিশেষ সভা নিয়ে কৃষ্ণনগরবাসীর মধ্যে চর্চা তুঙ্গে। ২৮ জুলাই অর্থাৎ আজ সোমবার এই বিশেষ সভায় ঠিক কী হতে চলেছে? পুরপ্রধান কি তবে অপসারিত হচ্ছে? আর যদি সত্যিই কৃষ্ণনগর পুরসভার চেয়ারম্যান অপসারিত হয়, তাহলে রাজ্যের একাধিক সমস্যা থাকা তৃণমূল পরিচালিত পুরসভাগুলোতে কি হবে? সেক্ষেত্রে দলীয় শৃঙ্খলা কি হবে? ২৬ বিধানসভা ভোটের আগে এই অবস্থা নিঃসন্দেহে তৃণমূলের অন্দরে বেকায়দায় ফেলবে।
তাই সমস্ত দিক হিসেব রেখেই কি তৃণমূল কংগ্রেসের উচ্চ নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নেবে নাকি অন্য কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে! এই গোটা ব্যবস্থার আঁচ পেতে অবশ্যই আর কয়েক ঘন্টা অপেক্ষা করতে হবে। সোমবার কৃষ্ণনগর পুরসভার বোর্ড অফ কাউন্সিল পুরসভার কক্ষে বিশেষ সভা ডেকেছে।
সেই সভাতে অনাস্থা প্রস্তাব আনা ১৫ জন কাউন্সিলর উপস্থিত থাকলেও বাকি কাউন্সিলর বা চেয়ারম্যান ঘনিষ্ঠদের ক'জন কাউন্সিলর উপস্থিত থাকবেন? বা চেয়ারম্যান ঘনিষ্ঠ কাউন্সিলররা থাকবেন কি? এই মুহূর্তে এ ধরনের একাধিক প্রশ্ন নিয়ে কৃষ্ণনগরে চর্চা চলছে।
আরও পড়ুন- Malda News: উত্তাল মালদা! বেনজির বিক্ষোভের মুখে বিজেপি সাংসদ, ষড়যন্ত্রের বিস্ফোরক অভিযোগ
এখন দেখার অনাস্থা আনা দলের ১৩ কাউন্সিলর নিয়ে মোট ১৫ জনের এই অনাস্থার প্রস্তাব বিভিন্ন মোড় ঘুরে কার্যকর হয় কিনা! তা যদি হয় তবে এ রাজ্যে নিঃসন্দেহে রাজনৈতিক ভাবে অন্য ধরনের ঘটনা হবে। তবে এর মধ্যেই পুরসভার সমস্যা মেটানোর জন্য রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্ব থেকে তৃণমূল কাউন্সিলরদের মেসেজ পাঠিয়ে ২৯ জুলাই কলকাতায় ডাকা হয়েছে বলে সূত্রে জানা গিয়েছে ।
আরও পড়ুন- Cyber Crime: বিরাট জালিয়াতিতে পুলিশের জালে সাইবার প্রতারণার 'মাস্টারমাইণ্ড', কলকাতায় বসে কীভাবে চলত কারবার?
২৯ জুলাই দল যে ডেকেছে সে কথা স্বীকারও করেছেন কৃষ্ণনগর পুরসভার চেয়ারম্যান রীতা দাস।তিনি আগেই জানন,' দল ডেকেছে তাই যাবো। আমাকে বলেছে আমি যাবো।' প্রসঙ্গত কৃষ্ণনগর পুরসভার গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যানের পর দলের ৩ কাউন্সিলরকে অনাস্থার জন চিঠি দেয় দলের ১০ কাউন্সিলর সহ ১২ জন কাউন্সিলর। তৃণমূল কংগ্রেসের দলের সমস্যা থাকলে দেখা যায় ২১ জুলাইয়ের সভার মধ্যে নেতৃত্বের সঙ্গে কথাবার্তার পর বিষয়টি মিটে যায়।
কিন্ত সার্ধ শতবর্ষ পেরিয়ে যাওয়া কৃষ্ণনগর পুরসভার বর্তমান অচলাবস্থা কিছুতেই মিটছে না। অথচ বর্ধিষ্ণু কৃষ্ণনগর পুরসভার উন্নয়নের কর্মকান্ড, পরিষেবা খুবই জরুরি বিষয়। কাউন্সিলরদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণে পরিষেবা না পেয়ে সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ।এই ঘটনার জেরে পুরসভায় অচলাবস্থা চরমে পৌঁছেছে। শহরের একাধিক উন্নয়ন প্রকল্প বন্ধ হয়ে পড়েছে। সাধারণ নাগরিকদের ভোগান্তিও বেড়েছে। ২৫ জুন আনুষ্ঠানিকভাবে ১৫ জন কাউন্সিলর স্বাক্ষর করেন অনাস্থায়।
এর মধ্যে রয়েছেন তৃণমূলের ১৩ জন, কংগ্রেসের শান্তশ্রী সাহা (১৪ নম্বর ওয়ার্ড) ও নির্দল কাউন্সিলর অসিত সাহা—এই ১৫ জন একযোগে অনাস্থা প্রস্তাবে সই করেন। ১১ জুলাই চেয়ারম্যান রীতা দাসের বিরুদ্ধে ফের অনাস্থা প্রস্তাব আনেন তৃণমূলের ১৩ জন কাউন্সিলর সহ মোট ১৫ জন। চেয়ারম্যান কোনও মিটিং না ডাকায় ভাইস চেয়ারম্যান নরেশ দাসের কাছে ৭ দিনের মধ্যে সভা ডাকার অনুরোধ জানিয়ে লিখিত আবেদন করেন তাঁরা। সেই সময় পেরিয়ে যেতে ফের দলের ১০ কাউন্সিলর সহ ১২ জন কাউন্সিলর দলের ৩ কাউন্সিলর মলয় দত্ত, শিশির কর্মকার ও সৌগতকৃষ্ণ দেবের কাছে ফের অনাস্থা প্রস্তাবের জন্য চিঠি দেন।
আরও পড়ুন- BJP VS TMC: নানুরে নাবালিকার রহস্যমৃত্যু, কেন নেই কোন আন্দোলন? 'ভাষা আন্দোলনের' আগে মমতাকে কটাক্ষ
সেই মতো মঙ্গলবার বিকেলে এই ৩ কাউন্সিলর অনাস্থা প্রস্তাবের জন্য ২৮ জুলাই পুরসভার কক্ষে বিশেষ সভা ডেকেছে । তবে রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্ব থেকে তৃণমূল কাউন্সিলরদের মেসেজ পাঠিয়ে ২৯ জুলাই কলকাতায় ডাকা হয়েছে বলে সূত্রে জানা গিয়েছে । এই অবস্থায় বিড়ম্বনার মধ্যে পড়েছে দলের অনাস্থা আনা কাউন্সিলররা। দলের উচ্চ নেতৃত্বের এই সিদ্ধান্ত না মানলে সরাসরি যে দল বিরোধী করা সে কথা বুঝতে পারছে কাউন্সিলররা। তবে তারা যে অনড় তা সূত্র মারফৎ জানা যাচ্ছে।
সেক্ষেত্রে ২৯ জুলাইয়ের আগে ২৮ জুলাই পুরসভার কক্ষে চেয়ারম্যানের অপসারণ নিয়ে বোর্ড অফ কাউন্সিলের ডাকা বিশেষ সভা কি হবে? নাকি ২৯ জুলাই
তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য নেতৃত্বের সামনে সমস্ত কিছু মিটবে? লাখ টাকার এই প্রশ্নের সুরাহা হতে আর কয়েক ঘন্টা বাকি। সোমবার বেলা ১১ টায় পুরসভার কক্ষে এই সভা আছে। এ প্রসঙ্গে অনাস্থা প্রস্তাবে সাক্ষর করা কংগ্রেস কাউন্সিলর শান্তশ্রী সাহা বলেন,' ২৮ জুলাই তলবি সভায় চেয়ারম্যান অপসারণ হবে। চেয়ারম্যান রীতা দাসের কাজকর্মে কৃষ্ণনগরে উন্নয়ন স্তব্ধ হয়েছে। তাই অপসারণ হবেই।'