/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/06/mamata-2025-10-06-13-46-59.jpg)
Mamata Banerjee: উত্তরবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে রওনা দেওয়ার আগে দমদম বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
North Bengal Flood: লাগাতার প্রবল বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গ। দার্জিলিং, কালিম্পং, কার্শিয়ং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার জেলাজুড়ে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার নিয়েছে। এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ২৩ জনের। উত্তরবঙ্গের এই বিধ্বস্ত পরিস্থিতি পরিদর্শনে সোমবার রওনা হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কলকাতা বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন,“লক্ষ্মীপুজোর দিন যেতে হচ্ছে। এরপর দীপাবলি, ছট পুজো আছে। কিন্তু মানুষের বিপদের চেয়ে বড় কিছু নয়। পরশুদিন রাত থেকেই আমরা উত্তরবঙ্গের পরিস্থিতি মনিটর করছি। ১২ ঘণ্টা ধরে প্রায় ৩০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। ভুটান ও সিকিম থেকে নেমে আসা জলেই ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে।”
মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন, ড্যাম থেকে অনিয়ন্ত্রিতভাবে জল ছাড়ার ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। তাঁর বক্তব্য,“DVC ইচ্ছেমতো জল ছেড়ে দিচ্ছে। ঝাড়খণ্ডকে বাঁচাতে গিয়ে বাংলাকে ডুবিয়ে দিচ্ছে। মাইথন-পাঞ্চেত ড্যামে জল ধারণের ক্ষমতা না থাকলে ড্যামের প্রয়োজনই বা কী? ভুটান সরকার আমাদের দুঃখপ্রকাশ করে চিঠি দিয়েছে। আমরা ওদের অনুরোধ করেছিলাম যাতে জল ছাড়া নিয়ন্ত্রিত হয়।”
সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নাগরাকাটা, মিরিক, জোরবঙ্গলো ও কালিম্পং অঞ্চল। বহু এলাকা এখনও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। পর্যটক উদ্ধারেও চলছে তৎপরতা। মুখ্যমন্ত্রী জানান, “৫০০ পর্যটককে উদ্ধার করে নিচে আনা হচ্ছে। ২৫০ জনকে শিলিগুড়িতে রাখা হয়েছে। হোটেলগুলিকে বলা হয়েছে, তারা যেন কোনও খরচ না নেয়, প্রয়োজনে সরকার সেই ব্যয় বহন করবে।”
এছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পুলিশ ও প্রশাসন কমিউনিটি কিচেন চালু করেছে। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে মুখ্যসচিবও উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়েছেন। তাঁরা হাসিমারা, নাগরাকাটা, মিরিকসহ বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করবেন।
বন্যায় মৃতদের পরিবারকে আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।“এখন পর্যন্ত ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে — দার্জিলিং, মিরিক, কালিম্পংয়ে ১৮ জন, নাগরাকাটায় ৫ জন। প্রতিটি পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ এবং একজন করে সদস্যকে স্পেশাল হোম গার্ড পদে চাকরি দেওয়া হবে,” বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন- West Bengal News Live Updates:SSC-এর শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষার ফলপ্রকাশ হতে পারে কবে? মিলল বড় আপডেট!
রাজ্যের অর্থনৈতিক সংকট নিয়েও মুখ্যমন্ত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন,“কেন্দ্র সরকার জিএসটি ও অন্যান্য বাবদ রাজ্যের প্রাপ্য প্রায় ১ লক্ষ ৭০ হাজার কোটি টাকা আটকে রেখেছে। তবু মা-মাটি-মানুষের সরকার নিজের সামর্থ্যে মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে।” শেষে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “মানুষ যখন বিপদে পড়ে, তখন উৎসব নয় — মানুষের জীবনই সবচেয়ে বড়। তাই আমি নিজে উত্তরবঙ্গে যাচ্ছি, মানুষের পাশে দাঁড়াতে।”