/indian-express-bangla/media/media_files/2025/08/26/tmc-2025-08-26-10-11-24.jpg)
TMC leader Sheikh Firoz: বাঁদিকে, পুলিশের উর্দিতে তৃণমূল নেতা। ডানদিকে, তৃণমূলের প্রতীক আঁকা টি-শার্টে একই যুবক।
পুলিশের উর্দি (পোশাক) গায়ে তৃণমূল নেতা শেখ ফিরোজের ছবি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হতেই পূর্ব বর্ধমানের রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক সাড়া পড়ে গিয়েছে। জামালপুর ব্লকের বেরুগ্রাম অঞ্চলে এই ছবি ভাইরাল হতেই রীতিমতো তোলপাড় পড়ে গিয়েছে।
তৃণমূল কংংগ্রেস নেতা শেখ ফিরোজের বাড়ি জামালপুরের বেরুগ্রাম অঞ্চলের চক্ষণজাদি গ্রামে। তিনি বড় কোনও পদে থাকা তৃণমূল নেতা নন। তবে তাঁর স্ত্রী হাসনারা বেগম ২০১৮ সাল থেকে একটানা বেরুগ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান পদে রয়েছেন। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, "স্ত্রী পঞ্চায়েত প্রধান হওয়ার পর থেকেই ফিরোজ নিজেকে বেরুগ্রাম অঞ্চলের 'বেতাজ বাদশা' বলে ভাবা শুরু করে দেন।
২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস দল ফের বাংলায় শাসন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হলে ফিরোজ ও তাঁর বাহিনীর সন্ত্রাস,অত্যাচার সব সীমা ছাড়িয়ে যায়। তারই মধ্যে বেরুগ্রাম অঞ্চল জুড়ে অবৈধ বালির কারবারের রমরমা বৃদ্ধি ঘটে চলে। প্রতিদিন শ'য়ে শ'য়ে ওভারলোডেড বালির লরি যাতায়াতের কারণে পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গিয়েছে কোটি কোটি টাকা ব্যায়ে তৈরি এলাকার প্রধান সড়ক পথ।
তা নিয়ে জনমানসে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। এই সবের মধ্যেই অত্যাচার সহ্য করতে করতে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া বেরুগ্রাম অঞ্চলের বাসিন্দারা তৃণমূল নেতা শেখ ফিরোজের বিরুদ্ধে এখন গর্জে উঠছেন। তার গ্রেফতারির দাবিতে গ্রামবাসীরা সরব হয়েছেন।
তৃণমূল নেতা শেখ ফিরোজকে গ্রেফতারের দাবিতে এখন তপ্ত পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের বেরুগ্রাম অঞ্চল। এমন আবহেই মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বর্ধমানে প্রশাসনিক বৈঠক করতে আসছেন। তিনি দুই বর্ধমান জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের নিয়ে প্রশাসনিক সভা করবেন। এমন এক সময়ে পুলিশের উর্দি গায়ে তৃণমূল নেতা শেখ ফিরোজের ছবি, জেলায় বেশ হইচই ফেলে দিয়েছে। বেরুগ্রাম অঞ্চলের বহু ব্যক্তির ফোনে ফোনে সেই ছবি এখন ঘুরপাক খাচ্ছে।
এমন ছবির প্রসঙ্গে এলাকার বাসিন্দারা যা জানিয়েছেন সেটাও যথেষ্ট চমকে দেওয়ার মতোন। তাঁরা জানান,সন্ত্রাস,অত্যচার ও তোলাবাজি চালিয়ে বিপুল অর্থ ও ধন সম্পত্তির মালিক হয়ে যাওয়া তৃণমূল নেতা ফিরোজ দেশের আইন কানুন, প্রশাসন কোনও কিছুরই তোয়াক্কা করতেন না। পুলিশের উর্দি পরা তাঁর ছবি তিনি নিজেই বছর তিনেক আগে নিজের ফেস বুকে পোস্ট করেছিলেন। সেই ছবি তখন ব্যাপক ভাবে ভাইরাল হয়। একই ছবি এখন ফের ভাইরাল হয়েছে বলে এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন-Adhir Chowdhury:"ED-CBI ধরলে মোবাইল ফোন ছুঁড়ে ফেলার ট্রেনিং নিক তৃণমূল নেতারা", টিপ্পনি অধীরের!
এলাকাবাসীর কথা অনুযায়ী, পুলিশের উর্দি গায়ে তৃণমূল নেতা শেখ ফিরোজের ছবি ২০২২ সালের প্রথম প্রকাশ্যে আসে। ওই ছবি নিয়ে তদানীন্তন জামালপুর পঞ্চায়েত সমতি ও পঞ্চায়েত গুলির জনপ্রতিনিধিরা জেলার পুলিশ সুপার এবং মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে অভিযোগ জানিয়ে ছিলেন।
সেই অভিযোগপত্রে বেরুগ্রাম অঞ্চল সহ ব্লকের অন্য অঞ্চলে দামোদর থেকে বালি লুট হয়ে চলার কথা উল্লেখ করা হয়। এছাড়াও বেরুগ্রাম অঞ্চল ও ব্লক তৃণমূলের দায়িত্বপ্রাপ্ত কয়েকজন নেতার নানা অপকর্মের কথাও ওই অভিযোগপত্রে উল্লেখ থাকে ।
ওই অভিযোগপত্রেই উল্লেখ থাকে, রাতের অন্ধকারে ওভারলোড বালির লরি ও ডাম্পার থেকে তোলা আদায়ের জন্য ফিরোজ পুলিশের উর্দি গায়ে রাস্তায় নামতো। সেই অভিযোগ যে সত্য ছিল সেটা বেরুগ্রাম অঞ্চলের চক্ষণজাদী গ্রামের মানুষজন এখন প্রকাশ্যে বলছেন। মুখ্যমন্ত্রী বর্ধমানে আসার আগের দিন চক্ষণজাদী গ্রামের একাধিক বাসিন্দা সংবাদ মাধ্যমকে জানান, বালির গাড়ি থেকে তোলা আদায়ের জন্যই শেখ ফিরোজ পুলিশের উর্দি গায়ে রাতে রাস্তায় নামতো। যদিও ফিরোজ এই অভিযোগ অসত্য বলে দাবি করেছেন।