/indian-express-bangla/media/media_files/2025/09/02/flood-2025-09-02-12-15-55.jpg)
Punjab floods 2025: পঞ্জাবজুড়ে ভয়বাহ বন্যা।
punjab rains:পঞ্জাবে ২০২৫ সালের আগস্টের ভয়াবহ বন্যা যেন ফের জীবন্ত করে তুলেছে ১৯৮৮ সালের ভয়াবহ স্মৃতিগুলো। লাগাতার বৃষ্টি ও খাল-নদী বেষ্টিত অঞ্চলে জল জমে অন্তত ১,০০০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। প্রায় ৬১,০০০ হেক্টর ফসল ক্ষতিগ্রস্ত, এবং ১৪.৬ লক্ষ মানুষ বাড়িছাড়া।
আজকের বন্যায় অতীতের প্রতিচ্ছবি
১৯৮৮ সালে, পঞ্জাবের তিন নদী — সুতলি, বীস ও রবি — এতটাই প্রবল ভাসাচ্ছিল যে ‘শোকের জল’ খ্যাতি মেয়েছে সেই বন্যা। প্রতি গ্রামেই কেঁদেছিল মাটির বুক, প্রাণ হারিয়েছিল শতাধিক পরিবার — সেই বন্যায় অন্তত ৬০০ মৃত্যু ঘটেছিল উত্তর ভারতের তিন রাজ্যে। অন্য একটি সূত্র বলছে, পঞ্জাবে মৃতের সংখ্যা ছিল ৩৮৩। ১৯৯৩ সালের বন্যাতেও মৃত্যুমিছিল দেখেছিল পঞ্জাব। সেবার মৃতের সংখ্যা ছিল প্রায় ৩৫০।
আবার ২০২৫: বন্যার কারণ এবং মানবসৃষ্ট উপাদান
স্থানীয় ও বিস্তৃত প্রতিবেদনগুলো খুঁটিয়ে মেলাখায় দেখিয়েছে, এই বন্যার পেছনে মূলত ভূমিতে ন্যূনতম জলপ্রবাহ ক্ষমতা, দখল, অব্যবস্থাপনা, এবং নদী-তীরের অবৈধ নির্মাণ কাজের চিত্র স্পষ্ট। নদী ও খাল-চৌয়ের সঠিক পরিস্কার ও এর রক্ষণাবেক্ষণের অভাব, ছড়িয়ে পড়া অবকাঠামোগত দুর্বলতা ও এর সঙ্গে জলাশয়ে অবৈধ খনন কার্যক্রমও বন্যার কারণ।
পরিকল্পনার অভাব, নীতির ঘাটতি
২০২৪ সালে প্রস্তুত হওয়া একটি বিস্তৃত ‘বন্যার প্রস্তুতি গাইডবুক’ মূহুর্তেই কাগজেই আটকে থেকে গেছে — পথে বাহ্যিক কাজের কোনও ব্যর্থতা নয়, একেবারেই কোনো কাজই হয়নি! খাল ও ড্রেন পরিষ্কার বা বাঁধের রক্ষণাবেক্ষণ নেই — ফলশ্রুতিতে বর্তমান বন্যা আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে।
১৯৮৮ এবং ১৯৯৩-এর ভয়ঙ্কর স্মৃতি আজও পঞ্জাববাসীর মনে ঘুরপাক খাচ্ছে। এখনও যদি পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তবে সে পুনরাবৃত্তির আশঙ্কা অনিবার্য। বন্যার প্রকৃত কারণ — বৃষ্টি কিংবা নদীর অতিমাত্রা নয়, এটি মানুষের উৎপাদিত উপাদানে বাস করে। অপরিকল্পিত নগরায়ন, নদী-সরল পথে বাধা, বন উজাড় করে বিস্তৃত জমির ক্ষয়—এই সবই পঞ্জাবকে আবার সেই ইতিহাসের প্রান্তে ফিরিয়ে এনেছে।
আরও পড়ুন-বিশ্ববিদ্যালয়ের উদাসীনতার মাশুল গুণছেন ছাত্রছাত্রীরা, অথৈ জলে প্রায় শ'খানেক পড়ুয়া!
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বর্ষার অনিয়মিত প্রকৃতির সঙ্গেও মোকাবিলা করছে এই অঞ্চল। পুরনো বাঁধ আর খাল এখন যথেষ্ট নয়, প্রয়োজন একান্ত কার্যকর ও ইকো-সেনসিটিভ পরিকল্পনা, প্রশাসনিক দায়বদ্ধতা, এবং সমাজ-ভিত্তিক সতর্কতা। তবেই এ রকম দুর্যোগে বেঁচে থাকা সম্ভব হবে।