New Update
/indian-express-bangla/media/media_files/2025/08/05/house-sollapse-2025-08-05-17-41-02.jpg)
mud house collapse: জামালপুরে ভেঙে পড়া মাটির বাড়ির বাঁশ, খড় সরানোর কাজ চলছে।
mud house collapse: এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই শোকের ছায়া নেমে আসে গোটা এলাকায়। ঘটনার আকস্মিকতায় মৃত দম্পতির ছেলেরা কার্যত বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন।
mud house collapse: জামালপুরে ভেঙে পড়া মাটির বাড়ির বাঁশ, খড় সরানোর কাজ চলছে।
পৈতৃক মাটির বাড়ির সঙ্গে বাবা ও ঠাকুরদাদার স্মৃতি জড়িয়ে আছে বলে সেই টানে ওই বাড়ি ত্যাগ করেননি ছেলে ইউনুস মল্লিক। স্ত্রী রিজিয়া বেগম মল্লিককে সঙ্গে নিয়ে তিনি ওই মাটির বাড়িতেই থাকতেন। বর্ষায় সেই বাড়ি হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়লে তারই নিচে চাপা পড়ে একসঙ্গে প্রাণ খোয়ালেন মল্লিক দম্পতি। মঙ্গলবার ভোর মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর ব্লকের বেরুগ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত মাঠনসিপর গ্রামে। জেসিবি মেশিন এনে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া বাড়িটির মাটি সরিয়ে এলাকার লোকজন ৫৭ বছর বয়সী ইউনুস মল্লিক এবং ৫৩ বছর বয়সী রিজিয়া বেগম মল্লিকের দেহ উদ্ধার করেন। এই ঘটনায় এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
পরিবার পরিজন ও এলাকাবাসীর কথায় জানা গিয়েছে, অন্যান্য দিনের মতো সোমবার রাতেও
পৈতৃক মাটির বাড়িতে ছিলেন ইউনুস মল্লিক ও তাঁর স্ত্রী রিজিয়া বেগম মল্লিক। রাতে বৃষ্টির মধ্যে তাঁরা ওই বাড়িতেই ঘুমিয়ে ছিলেন। ভোর সাড়ে চারটে নাগাদ আচমকাই ওই মাটির বাড়িটি হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। বাড়ি ভেঙে পড়ার শব্দ শুনেই আশপাশেয় বাড়ির লোকজন ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। ভেঙে পড়া বাড়িটির অবস্থা দেখে স্থানীয় লোকজন নিশ্চিত হয়ে যান, মল্লিক দম্পতি ওই বাড়িটির ধ্বংসস্তূপের নিচেই চাপা পড়ে আছেন। তড়িঘড়ি তারা জেসিবি মেশিন এনে ওই ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় দম্পতি ইউনুস মল্লিক ও রিজিয়া বেগম মল্লিককে উদ্ধার করেন।
দ্রুত তাদের নিয়ে যাওয়া হয় জামালপুর হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসকরা দু’জনকেই মৃত বলে ঘোষণা করেন। পুলিশ দুটি মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য এদিনই বর্ধমান মেডিকেল কলেজের পুলিশ মর্গে পাঠায়। এলাকার বাসিন্দা হাফিজুল রহমান মল্লিক বলেন, "দেড় তলা মাটির বাড়িটি অনেক দিনের পুরানো। তবে বৃষ্টি বাদলের দিনে একেবারে গোটা বাড়িটা হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়বে এটা কেউ কল্পনাও করতে পারেনি। ভোর রাতে বাড়িটি ভেঙে পড়লে সেখান থেকে দম্পতি ইউনুস মল্লিক ও রিজিয়া বেগম মল্লিককে উদ্ধার করার জন্য আমরা গ্রামবাসীরা অনেক চেষ্টা করি। কিন্তু ব্যর্থ হই। পরে জেসিবি মেশিন এনে ধ্বংসস্তূপের মাটি সরিয়ে দম্পতির উদ্ধার করা হয়।"
এদিকে বাবা ও মায়ের এমন মর্মান্তিক মৃত্যুতে শোকে বিহ্বল হয়ে পড়েছেন দুই ছেলে মাসুদ মল্লিক ও আজিজ মল্লিক। চোখের জল মুছতে মুছতে তাঁরা এদিন বলেন, "আমাদের পৈতৃক মাটির বাড়িটির প্রতি আমার বাবার আলাদা একটা টান ছিল। পূর্ব পুরুষরা ওই বাড়িটিতে জীবন কাটিয়ে ছিলেন বলে আমার বাবা ওই বাড়িতে থাকতেই ভালোবাসতেন। দিনের বেলায় আমাদের পাকা দোতলা বাড়িতে বাবা-মা থাকলেও রাতে মাকে নিয়ে বাবা মাটির বাড়িতেই চলে যেতেন।"
আরও পড়ুন- Bengali controversy: বাংলা, বাঙালি, বাংলাদেশি বিতর্ক, BJP-তৃণমূলে 'সেটিং' দেখছেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ
তাঁরা জানিয়েছেন, দিনে প্রতিদিন ওই বাড়িতে একজন গ্রামীণ চিকিৎসক বসে রোগী দেখতেন। সোমবার দিনের বেলাতেও ওই বাড়িতে বসে চিকিৎসক রোগী দেখেছেন। অন্যদিন রাতে নাতি রোহান মল্লিককে সঙ্গে নিয়ে তাঁদের বাবা ইউনুস মল্লিক ও মা রিজিয়া বেগম শুতেন।
বৃষ্টি পড়ছিল বলে সোমবার রাতে নাতি রেহানের দাদু ঠাকুরমার সঙ্গে শুতে যাওয়া হয়নি। বাবার কাছে প্রাণের চেয়ে প্রিয় মাটির বাড়িতেই এভাবে বাম ও মা এক সঙ্গে প্রাণ হারাবেন তা কোনওদিন কল্পনাও করতে পারেননি বলে মাসুদ-আজিজরা জানান।
আরও পড়ুন- Suvendu Adhikari: 'আমাকে মেরে ফেলতেই হামলা', রোহিঙ্গা উৎখাতে বুলডোজার চালানোর হুঁশিয়ারি শুভেন্দুর