New Update
/indian-express-bangla/media/media_files/2025/05/05/gTKCotyEKU1BTYEmIgGg.jpg)
purba bardhaman news: পুলিশ সুপারের কাছে নালিশ নির্যাতিতা বধূর।
Purba Bardhaman-Raina: মারাত্মক অভিযোগ এক পুলিশ আধিকারিকের বিরুদ্ধেই। বিহিত চেয়ে এবার জেলার পুলিশ সুপারের কাছেই নালিশ বধূর।
purba bardhaman news: পুলিশ সুপারের কাছে নালিশ নির্যাতিতা বধূর।
ফের উঠল পুলিশি নির্যাতনের অভিযোগ। এবার পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বর থানার এক পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে মারধর-সহ মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো ও কু-প্রস্তাব দেওয়ার বিস্ফোরক অভিযোগ আনলেন এক বধূ। শুধু অভিযোগ আনাই নয়, ঘটনার বিহিত চেয়ে ওই মহিলা জেলার পুলিশ সুপারেরও দ্বারস্থ হয়েছেন। যদিও বধূর আনা এমন অভিযোগের বিষয়টি নিয়ে এখনই কোনও মন্তব্য করতে চাননি জেলা পুলিশের কোনও শীর্ষকর্তা।
পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ জানানো বধূর বাপের বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের রায়নায়। তাঁর বিয়ে হয়েছিল জেলার মন্তেশ্বরে। ওই বধূ গত ২১ এপ্রিল জেলার পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন। ওই মহিলার অভিযোগ, তিনি পরপর দুটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেওয়ায় তাঁর স্বামী সহ শ্বশুরবাড়ির অন্যদের বিষ নজরে পড়েন। তখন থেকেই তাঁর উপর শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের অত্যাচার শুরু হয়।
ওই বধূ আরও জানিয়েছেন, গত বছরের ২৫ নভেম্বর তাঁর স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন মিলে মুখে বালিশ চাপা দিয়ে তাঁকে প্রাণে মেরে ফেলার চেষ্টা করে। কোনওরকমে তিনি বেঁচে যান। পরে তাঁর দুই শিশুকন্যাকে নিজেদের কাছে রেখে দিয়ে শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁকে শ্বশুরবাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। বাপের বাড়ি ফিরে এসে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি রায়না থানায় বধূ নির্যাতনের মামলা দায়ের করেন।
আরও পড়ুন- Kolkata News Live Updates: সাম্প্রদায়িক হিংসার পর এই প্রথম সফর, আজ মুর্শিদাবাদে মুখ্যমন্ত্রী
বধূর অভিযোগ, রায়না থানায় মামলা চলা অবস্থাতেই গত ১৪ এপ্রিল তাঁর স্বামী তাঁকে শ্বশুরবাড়িতে ডেকে পাঠায়। সেই মতো তিনি ওই দিন শ্বশুরবাড়িতে গেলে ফের তাঁর উপর অত্যাচার হয়। দেওর, জা, শ্বশুর, শাশুড়ি ও অন্যরা তাঁকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করে। পরে একটি ঘরে ঢুকিয়ে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে কেরোসিন ঢেলে তাঁকে খুনের চেষ্টা হয়। গ্রামের লোকজন সেই খবর মন্তেশ্বর থানায় পৌঁছে দেয়। মন্তেশ্বর থানার পুলিশ অফিসার (Sub-Inspector) সোহেল আহমেদ গিয়ে ঘরের দরজা ভেঙে অচৈতন্য অবস্থায় ওই মহিলাকে ঘর থেকে বের করেন বলে দাবি নির্যাতিতার।
আরও পড়ুন- Kolkata Weather Update today:বিকেলেই আছড়ে পড়বে কালবৈশাখী! প্রবল ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস আজও
পুলিশ সুপারকে ওই বধূ অভিযোগে জানিয়েছেন, তাঁর জ্ঞান ফেরার পর অকথ্য ভাষায় তাঁকে গালিগালাজ করা শুরু করে পুলিশ অফিসার সোহেল আহমেদ। এমনকী তাঁর স্বামী সহ শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে দিয়ে তাঁকে মারধর পর্যন্ত করায় ওই পুলিশ অফিসার। এরপর তাঁকে থানায় তুলে নিয়ে গিয়ে তাঁর উপর অত্যাচার চালানোর পাশাপাশি তাঁকে অশালীন প্রস্তাবও দেয় পুলিশ অফিসার সোহেল আহমেদ। ওই বধূর আরও অভিযোগ, এত সব কিছুর পরেও কোনও চিকিৎসা না করিয়ে সারা দিন-সারা রাত তাঁকে থানায় রেখে দেওয়া হয়। পরের দিন তাঁর শ্বশুর ও স্বামীকে ডেকে পাঠিয়ে তাদের দিয়ে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করিয়ে তাঁকে থানা থেকে কালনা আদালতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। আদালত তাঁর জামিন মঞ্জুর করলে তবে তিনি রেহাই পান বলে বধূ জানিয়েছেন।
বধূর আনা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তাঁর স্বামী। তাঁর স্বামীর কথায়, "সব দোষ আমার স্ত্রীর। কন্যা সন্তান হয়েছে আমরা রেগে যাইনি। বরং আমার স্ত্রীর জন্যই আমি ও আমার বাবা-মা নির্যাতনের শিকার।" ওই বধূর আনা অভিযোগ নিয়ে সদ্য মঙ্গলকোট থানায় বদলি হওয়া পুলিশ অফিসার (SI)সোহেল আহমেদকে ফোন করা হলে তিনিও তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেন।
আরও পড়ুন- Digha Jagannath Dham: ভক্তির জোয়ারে ভাসছে সৈকত নগরী, রবিবারে ভক্তদের ঢল নামল দীঘা জগন্নাথ মন্দিরে
সোহেল আহমেদ বলেন, “কু-প্রস্তাব দেওয়া বা মারধর করা তো দূরের কথা, ওই বধূর সঙ্গে কোনও কথাই হয়নি। ওই মহিলাকে নিয়ে তাঁর শ্বশুরবাড়িতে যেদিন অশান্তি হয়েছিল সেদিনও সেখানে যাইনি। মন্তেশ্বর থানার এক ASI সহ লেডি কনস্টেবলরা সেখানে গিয়েছিলেন। ওই বধূকে থানায় বসে থাকতে দেখেও কোনও কথা বলিনি। আমার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ এনেছেন ,তা প্রমাণ করতে পারবেন তো উনি?" পুলিশ অফিসার সোহেল আহমেদ ওই বধূর বিরুদ্ধেও পাল্টা অভিযোগে জানান, তাঁকে ফোন করে ওই বধূ নানা মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দিয়েছিলেন। তা নিয়ে আইনি যা ব্যবস্থা নেওয়ার, তিনি তা নিয়ে রেখেছেন বলেও জানিয়েছেন।
বিষয়টি নিয়ে জেলার পুলিশ সুপারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার প্রতিনিধি। পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, বিষয়টি তাঁর জানা নেই। এই ব্যাপারে বিশদে জেনে তারপর তিনি প্রতিক্রিয়া দিতে পারবেন বলে জানিয়েছেন।