Rabindra Jayanti celebrated In Local Train: নিত্য ট্রেনের যাতায়াতে সঙ্গীরাই আপনজন, একেবারে যেন পরিবারের সদস্য। প্রত্যেকেই চাকুরিজীবী। এই যাতায়াতের ব্যস্ততার মাঝেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর স্মরণে গানে, কবিতায় মেতে উঠলেন সকলে। অন্য যাত্রীরাও সঙ্গ দিলেন, এগিয়ে এলেন, সামিল হলেন অনুষ্ঠানে। শুক্রবার "আমরা সবাই"য়ের আয়োজনে রবীন্দ্র সন্ধ্যা পালন করা হয় মাঝেরহাট রাণাঘাট চলন্ত ট্রেনে।
মাঝেরহাট রাণাঘাট লোকাল। মহিলা কামরা। বাড়িতে ব্যস্ততা, অফিসেও কর্ম ব্যস্ততা মাত্রাছাড়া। তাই যাতায়াতের মাঝে সেই সময়টাকেই কাজে লাগালেন নিত্যযাত্রীরা। তাঁরা লোকাল ট্রেনেই কবি প্রণাম সারলেন। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গান, কবিতায় মেতে উঠলো এই লোকালের মহিলা কামরা। অনুষ্ঠান শুরু হয় বিবাদি বাগ স্টেশন থেকে, শেষ হয় ব্যারাকপুরে। সহযাত্রীরাও এই অনুষ্ঠানে মোহিত হয়ে যান।
২৫ বছর ধরেই এই ট্রেনে যাতায়াত। এই লোকালেই অফিস যাতায়াত। তাই এই কামরার যাত্রীরা একে অপরের কাছের মানুষ হয়ে উঠেছেন। তাই যাত্রীরা সিদ্ধান্ত নেন ট্রেনেই বরীন্দ্র জয়ন্তী পালন করবেন। যেমন কথা তেমন কাজ। এই অনুষ্ঠানের অন্যতম উদ্যোক্তা রঞ্জনা শ্রীনিবাসন। বিবাদি বাগ স্টেশন থেকে শুরু হয়ে যায় ট্রেনের ভিতর রবীন্দ্র জয়ন্তী পালন। ২৫ বৈশাখ রবীন্দ্র জয়ন্তী হলেও শুক্রবার পালন করা হয় এই অনুষ্ঠান।
বিবাদি বাগ স্টেশনে ঢুকতেই শঙ্খধ্বনি, ঘন্টা বাজিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। চলন্ত ট্রেনেই চলতে থাকে 'রবিস্মরণ', কবিপ্রণাম। বক্তব্য রাখেন সম্পা। রবীন্দ্র সঙ্গীত পরিবেশন করেন অহনা, ডলি, মধু, মৌমিতা, ঝরনা, কৃষ্ণা, শীলা, সোমা, অর্পিতা, রঞ্জনারা। আবৃত্তিতে অংশ নেন সুমনা, শ্যামলী। এমনকী চলন্ত ট্রেনের এই অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশ নেন চেন্নাই ও হায়দ্রাবাদ থেকেও দুই শিল্পী। সুদূর চেন্নাই থেকে অনলাইন ভিডিও মাধ্যমে সঙ্গীত পরিবেশন করেন দক্ষিণী শ্রীনিবাসন। একই ভাবে হায়দ্রাবাদ থেকে আবৃত্তি শোনান সুতপা।
রঞ্জনা শ্রীনাবাসন বলেন, "আমরা দীর্ঘ ২৫ বছর ধরেই এই ট্রেনে যাতায়াত করছি। এই সময়ের মধ্যে আমরা অনেককে হারিয়েছি। অনেকের সঙ্গে নতুন ভাবে সম্পর্ক হয়েছে। আমরা সবাই একই পরিবারের মতো। অনুষ্ঠানে সহযোগিতা করেছেন ছবিদি, ছন্দা, তৃপ্তি, তনিমা, মৌসুমী, তারা, লাবনী, মিঠু, অপর্ণারা। এই কামরার অন্য যাত্রীরা এই অনুষ্ঠানে দেখে আনন্দে মেতে ওঠেন"।