Irani arrested: পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বর থানার হোসেনপুর গ্রামে সোনার দোকানে ঢুকে চুরির চেষ্টা করতে গিয়ে ধরা পড়ল ইরান থেকে অবৈধভাবে ভারতে এসে থাকা এক বাবা ও তাঁর নাবালক ছেলে। স্থানীয় বাসিন্দাদের তৎপরতায় দু'জনকেই হাতেনাতে ধরে 'উত্তম-মধ্যম' দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পুলিশ তাদের গ্রেফতার করেছে। ধৃতরা হলেন আলি মাহাবুবি ও তাঁর ছেলে আমির আব্বাস মাহাবুবি। দু’জনেই ইরানের রাজধানী তেহরানের খানিয়াবাদ এলাকার বাসিন্দা।
ঘটনার পর পুলিশ নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে। শনিবার ধৃত আলি মাহাবুবিকে কালনা মহকুমা আদালতে এবং নাবালক ছেলেকে জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডে পেশ করা হয়। আদালতের নির্দেশে বাবা আলিকে জেল হেফাজতে এবং নাবালক সন্তানকে হোমে পাঠানো হয়েছে।
কি ঘটেছিল শুক্রবার রাতে?
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাত প্রায় সাড়ে সাতটা নাগাদ একটি দামি চারচাকা গাড়িতে করে হোসেনপুর গ্রামে আসে বাবা-ছেলে। তারা এলাকার একটি ছোট সোনার দোকানে খরিদ্দার সেজে ঢুকে পড়ে। দোকানে গিয়ে তারা নাকছাবি, কানের দুলসহ বিভিন্ন সোনার গয়না দেখতে শুরু করে এবং দরদাম করতে থাকে। আচমকা সোনার তিনটি নাকছাবি ও একটি কানের দুল নিয়ে তারা পালানোর চেষ্টা করে। দোকানদার চিৎকার করে ওঠেন। তাঁর চিৎকারে সাড়া দিয়ে স্থানীয়রা দৌড়ে এসে দু’জনকে ধরে ফেলে। যদিও গাড়ি চালক পালিয়ে যায়।
দোকানদারের বক্তব্য:
দোকান মালিক বুদ্ধদেব হাজরা জানান, ওই দিন সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিটে দু’জন ব্যক্তি তাঁর দোকানে আসেন। তাঁদের ভাঙা হিন্দি শুনে তিনি প্রথমে কিছু সন্দেহ করেননি। গয়না দেখার ছলে একজন নাকছাবি কৌশলে সরিয়ে ফেললে তিনি সতর্ক হয়ে যান। মুহূর্তের মধ্যে কিছু গয়না নিয়ে দু’জনেই পালাতে উদ্যত হয়, কিন্তু স্থানীয়রা তাদের ধরে ফেলে। এরপর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।
পুলিশি তদন্তে উঠে এল আরও তথ্য:
মন্তেশ্বর থানার পুলিশ ধৃতদের নিয়ে রাতভর ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ চালায়। পুলিশের দাবি, গয়না চুরির উদ্দেশ্যেই তারা দোকানে ঢুকেছিল। তাদের কাছ থেকে দুটি ইরানি পাসপোর্ট ও প্রায় আড়াই হাজার মার্কিন ডলার উদ্ধার হয়েছে। জানা গিয়েছে, তারা বৈধ ভিসা নিয়ে ভারতে প্রবেশ করলেও ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও অবৈধভাবে ভারতে থেকে গিয়েছিল। দিল্লি-সহ দেশের একাধিক জায়গায় তারা ঘুরে বেড়িয়েছে বলেও পুলিশ জানতে পেরেছে। কালনা মহকুমা পুলিশ আধিকারিক (এসডিপিও) রাকেশ কুমার চৌধুরি বলেন, “ধৃতদের পরিচয় ও গতিবিধি সম্পর্কে আরও তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা চলছে। তদন্ত চলছে।”
এভাবে বিদেশি নাগরিকদের অবৈধ অনুপ্রবেশ ও অপরাধমূলক কার্যকলাপে যুক্ত থাকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে নিরাপত্তা ব্যবস্থার উপরেই। পুলিশি তদন্তে উঠে আসা তথ্য এখন অনেক গুরুত্বপূর্ণ দিক উন্মোচন করতে পারে বলে মত প্রশাসনের।