RG Kar: 'অভয়ার দেহ তড়িঘড়ি পোড়ানোর পুরস্কার', অভিযোগ উড়িয়ে কী বললেন পানিহাটির নয়া চেয়ারম্যান সোমনাথ দে?

RG Kar News: আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকের দেহ তড়িঘড়ি দাহ করানোর ব্যাপারে চূড়ান্ত তৎপরতা নেন স্থানীয় কাউন্সিলর তথা পানিহাটির নতুন চেয়ারম্যান সোমনাথ দে। এমনই অভিযোগ তুলেছিল নির্যাতিতার পরিবার।

RG Kar News: আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকের দেহ তড়িঘড়ি দাহ করানোর ব্যাপারে চূড়ান্ত তৎপরতা নেন স্থানীয় কাউন্সিলর তথা পানিহাটির নতুন চেয়ারম্যান সোমনাথ দে। এমনই অভিযোগ তুলেছিল নির্যাতিতার পরিবার।

author-image
Joyprakash Das
New Update
rg kar victims parents and bjp agnimitra paul attack panihati new chairman somnath dey

পানিহাটি পুরসভার নতুন চেয়ারম্যান সোমনাথ দে।

উত্তর ২৪ পরগনার পানিহাটি পুরসভার নতুন চেয়ারম্যান হয়েছেন সোমনাথ দে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই পদত্যাগ করেন পানিহাটির আগের চেয়ারম্যান মলয় রায়। তবে সোমনাথ দে'কে পানিহাটি পুরসভার পুরপ্রধানের দায়িত্ব দেওয়ার পেছনে 'বড় কারণ' রয়েছে বলে মনে করেন আরজি করের নির্যাতিতার বাবা-মা। একই ধারণা BJP নেত্রী অগ্নিমিত্রা পালেরও।

Advertisment

পানিহাটি পুরসভার নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন সোমনাথ দে। পানিহাটির ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সোমনাথ দে এর আগে আরজি করের নারকীয় ঘটনার সময়ে রীতিমতো চর্চায় ছিলেন। আরজি করের নির্যাতিতা তরুণী চিকিৎসকের দেহ দাহের ক্ষেত্রে সোমনাথ দের তৎপরতা নিয়ে সেই সময় প্রশ্ন তুলেছিলেন অভয়ার বাবা-মা। সেই সময় এই সোমনাথ দের ভূমিকা নিয়ে রীতিমতো বিস্ফোরক সব দাবি করেছিল বিরোধী বিজেপি বাম থেকে শুরু করে অন্যান্য দলগুলি।

এ হেন সোমনাথ দে'ই এবার পানিহাটির নয়া চেয়ারম্যান। আগে মলয় রায় ছিলেন পানিহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান। জানা গিয়েছে, পানিহাটিতে অমরাবতী মাঠ সংক্রান্ত বিতর্কে জড়িয়ে গিয়ে পুরপ্রধানের পদ থেকে সরে যেতে হয়েছে মলয় রায়কে। ওই মাঠ অবৈধভাবে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল মলয়ের রায়ের বিরুদ্ধে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে সরাসরি অভিযোগ জমা পড়েছিল। এছাড়াও মলয়ের বিরুদ্ধে আরও কিছু অভিযোগ তুলেছিলেন খোদ তাঁরই দলের কাউন্সিলররা। তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই পানিহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেন মলয় রায়। পানিহাটির পুরপ্রধান করা হয়েছে সোমনাথ দে'কে। পুরসভায় এলাকার ৩৫ কাউন্সিলরের এর মধ্যে ৩২ জনই উপস্থিত ছিলেন। সেই ৩২ জন হাত তুলে নয়া চেয়ারম্যান হিসেবে সোমনাথ দে'কে সমর্থন জানিয়েছেন। 

সোমনাথ দে'র পানিহাটির চেয়ারম্যান হওয়া নিয়ে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তীব্র সমালোচনায় সরব BJP নেত্রী-বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল। তিনি বলেন, "শেষ পর্যন্ত সোমনাথ দে'কে পানিহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান করলেন? আর কাউকে পেলেন না? পুরস্কার দিলেন? অভয়ার দেহ তড়িঘড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার পুরস্কার। 

Advertisment

আরও পড়ুন- West Bengal News Live: 'আমাকে খুন করতে জেলে থাকা আসামিকে সুপারি দেয়', বিস্ফোরক দাবি করে কাকে নিশানা অধীরের?

৯ অগাস্ট কাউন্সিলর সোমনাথ দের মুখোমুখি হয়েছিলাম। চোখের সামনে দেখেছিলাম অভয়ার দেহ তাড়াতাড়ি শ্মশানে নিয়ে যাওয়ার জন্য ওই কাউন্সিলরের তৎপরতা। আরজি কর হাসপাতালে অভয়ার বাবা ও মার উপর ক্রমাগত চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছিল। বাবা, মায়ের অনুমতি ছাড়া দেহ তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। অসহায়ভাবে ওনারা মেয়ের দেহ কোথায় আত্মর্নাদ করছিলেন। উল্টোদিকে এই কাউন্সিলর ও বিধায়ক গ্রিন করিডোর করে দেহ তুলে নিয়ে যাওয়ার জন্য ব্যস্ত। দেহ পুড়িয়ে দেওয়া হলেই প্রমাণ লোপাট। অভয়াকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছিল ৯ অগাস্ট। ২২ মার্চ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুরস্কৃত করলেন কাউন্সিলরকে। সোজা চেয়ারম্যান। এবার অঙ্কটা সোজা হয়ে গেল। কার কথায় সোমনাথ দে দেহ তড়িঘড়ি পুড়িয়ে দিয়েছিলেন আমজনতার বুঝতে আর অসুবিধা নেই।" 

তবে আরজি করের নির্যাতিতার বাবা-মা কিংবা বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পালের আনা অভিযোগ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেই মনে করেন পানিহাটি পুরসভার নয়া পুরপ্রধান সোমনাথ রায়। আরজি করের নির্যাতিতাকে দাহ করার সময় অতি সক্রিয় হয়ে তিনিই শ্মশানের খরচ মিটিয়েছিলেন বলে দাবি করেছিলেন অভয়ার পরিবার। এর পিছনে চক্রান্ত ছিল বলেও অভিযোগ তাঁদের। এসব নিয়েই ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে পানিহাটির নয়া চেয়ারম্যান সোমনাথ দে বিস্তারিতভাবে তাঁর বক্তব্য জানিয়েছেন।

আরও পড়ুন- Kolkata Weather Today: আজ ঝেঁপে বৃষ্টির পূর্বাভাস জেলায়-জেলায়, ভেস্তে যেতে পারে KKR-RCB ম্যাচও?

সোমনাথ দে বলেন, "কেউ টাকা দেয়নি। এই ধরনের কেসে পুরসভার থেকেই এগুলো ফ্রি থাকে। সেই মুহূর্তে যা পরিস্থিতি ছিল, তার বাবা-মায়ের কাছ থেক ফি চাওয়ার প্রশ্ন ওঠে না। সেই জন্যই এটাকে ফ্রি করা হয়। এক্ষেত্রে সেখানে যে কাউন্সিলর থাকে তার নামটা ওপরে লেখা থাকে। আর কিছুই নয়। এবার যদি উনি মনে করে উনি টাকা দিয়ে দেবেন, তাহলে টাকা দিয়ে দিলে নামটা কেটে ওনাকেই রিসিপ্ট দিয়ে দিত। তড়িঘড়ির কোনও ব্যাপারই নেই। আরজি কর থেকে বডি এসেছিল। সঙ্গে সাত ভ্যান পুলিশও ছিল। ওর (আরজি করের নির্যাতিতা চিকিৎসক) বাড়ির নীচে এক থেকে দেড় ঘণ্টা বডি ছিল। ওদের বাড়িতেও প্রায় এক ঘণ্টা বডি ছিল। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে অভিযোগ করছে। ওর মা-বাবা যখন মেয়ের ঘরে বডি নিয়ে যায়, তখন আমরা কেউ ছিলাম না। তখন আমরা দূরে ছিলাম। ওর বাবা-মায়ের কথাতেই বডি নিয়ে যাওয়া হয়। ওর বাবাই আমাকে ফোনে ডেকেছিল বডি নিয়ে যেতে। আমি স্থানীয় কাউন্সিলর। সেই হিসেবেই গিয়েছিলাম। বর্তমানে রাজনৈতিক কথা বলছেন ওঁরা। এই পরিবারটার পাশে আমি বহু ছোটবেলা থেকে ছিলাম। মেয়েটাকে বাড়ি গিয়ে সংবর্ধনাও দিয়ে এসেছিলাম। আমার বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অভিযোগ করছে। চেয়ারম্যান হলাম বলে এটা নিয়ে রাজনৈতিক তরজা হচ্ছে।"

news of west bengal tmc RG Kar Case news in west bengal Bengali News Today North 24 Pargana