প্রথমে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার শান্তির আবেদনের চিঠিতে কড়া ভাষায় সংঘ পরিবারকে আক্রমণ করেছেন। তারপরই রবিবার ব্রিগেডে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম RSS-এর বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন। একই বিন্দুতে রেখেছেন তৃণমূল ও BJP-কে। আরএসএস পাল্টা জবাবও দিয়েছে।
তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) আগেই তোপ দেগেছিলেন আরএসএসের বিরুদ্ধে। শান্তির আবেদনে খোলা চিঠিতে তিনি লিখেছেন, "রাজনীতির নামে বাংলা ভাগের চেষ্টা করছে আরএসএস। কুশ্রী মিথ্যার প্রচারে আরএসএসও আছে।" বিজেপির সঙ্গে আরএসএসের বিরুদ্ধেও সমান সোচ্চার মমতা। এদিকে ব্রিগেডের জনসভায় সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেছেন, "বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেসের স্ক্রিপ্ট লিখে দেন মোহন ভাগবত।" তৃণমূল ও সিপিএমের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে আরএসএস। সংঘের কর্তাদের স্পষ্ট বক্তব্য, আরএসএস সামাজিক সংগঠন। নিজেদের কার্যক্রমেই সংগঠন মানুষকে নিয়ে এগিয়ে চলেছে।
বিগত কয়েক বছরে বাংলায় আরএসএসের সংগঠন বেড়েছে। দুইয়ের জায়গায় আরএসএসের তিনটে প্রান্ত কর্যক্রম করছে। দক্ষিণবঙ্গ, মধ্যবঙ্গ ও উত্তরবঙ্গ প্রান্তের কর্মসূচি ক্রমশ বাড়ছে। বেড়েছে স্থান, শাখা, মিলন ও মণ্ডলীর সংখ্যা। সংগঠনের সঙ্গে সাধারণের যুক্ত হওয়ার সংখ্যাও বেড়ে চলেছে। সম্প্রতি সংঘপ্রধান মোহন ভাগবত টানা ১০ দিন এরাজ্যে থেকে সংগঠনের কাজ করেছেন। তৃণমূল আমলে আরও মজবুত হয়েছে হিন্দুত্ববাদী এই সংগঠন।
আরও পড়ুন- Mamata Banerjee: 'ঐতিহাসিক প্রকল্প বাংলায়', জিন্দলদের তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের শিলান্যাস করে 'বড় আশ্বাস' মুখ্যমন্ত্রীর
এবার একেবারে লিখিত ভাবে মমতা অভিযোগ করেছেন আরএসএসের বিরুদ্ধে। আরএসএসের দক্ষিণবঙ্গ প্রান্ত প্রচারক বিপ্লব রায় ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, "২০১১-তে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জেতাতে বাংলার আপামর মানুষ সমর্থন করেছিল। তাঁর মধ্যে আরএসএসও ছিল। আরএসএস সামাজিক সংগঠন। ১০০ বছর ধরে সংগঠন মানুষের জন্য় কাজ করছে। কেউ কখনও ভালো বলে, কখনও ভালো বলে না। এর জন্য আমরা কিছু মনে করিনি, কিছু অনুযোগও করিনি। মমতা বন্দ্যোপোধ্যায় বিধানসভায়, রেড রোডে বিশেষ ধর্মের অনুষ্ঠানে গিয়ে হিন্দু ধর্ম নিয়ে অহেতুক অযাতিত মন্তব্য করেছেন। ধর্মীয় উসকানি ছিল কি ছিল না? মুখ্যমন্ত্রী বলছেন বিএসএফ মেরেছে? দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য।"
এখানেই থামেননি বিপ্লব রায়। তিনি বলেন, "এসব বলার কারণ তিনি আতঙ্কে আছেন। বাংলার অবস্থা খারাপ হচ্ছে। তিনি ভোটের কারবারি। ভোট কমে যাচ্ছে। তাই আরএসএসের নামে দোষ দিচ্ছেন। যাতে মুসলিম ভোট একত্র করা যায়। বাম আমলে অনশনের সময় বিজেপি নেতা রাজনাথ সিং তাঁকে ফলের রস খাইয়ে ছিলেন। অটল বিহারী বাজপেয়ী তাঁর বাড়িতে গিয়েছিলেন। আসলে তাঁর বক্তব্যের সঙ্গে কার্যকলাপের কোনও মিল নেই।"
আরও পড়ুন- West Bengal News Live: বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসন জারির আর্জি, আবেদনের শুনানিতে তাৎপর্য্যপূর্ণ মন্তব্য সুপ্রিম কোর্টের
বঙ্গ আরএসএস থেকে যে তথ্য পাওয়া গিয়েছে তাতে এটা স্পষ্ট যে তৃণমূল জমানায় বহুগুন বৃদ্ধি পেয়েছে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের সক্রিয়তা। এরই পাশাপাশি বেড়েছে সাংগঠনিক কাজকর্ম। তৃণমূলের দয়া ও দোয়ায় আরএসএসের সংগঠন বেড়েছে এই রাজ্যে, ব্রিগেডে বলেছেন মহম্মদ সেলিম। আরএসএস বলে এসেছে তাদের সংগঠন বৃদ্ধির জন্য কারও প্রয়োজন পড়ে না। তাঁদের নিয়মিত সামাজিক কাজকর্ম চলতে থাকে। বিপ্লব রায় বলেন, "রবিবার বামেদের ব্রিগেডে লোকই তো হয়নি। মহম্মদ সেলিমের আছে কোনও স্পেস নেই।"