New Update
/indian-express-bangla/media/media_files/2024/12/30/O95mFytOAy7kYwKiwBs1.jpg)
Purba Bardhaman News: ফি দিন বিকেলে রায়নার অমলকান্তি হাটির দোকানে সিঙাড়া কিনতে এই ভিড়ের ছবি চোখে পড়ে।
Purba Bardhaman News: অক্লান্ত পরিশ্রম করে দশকের পর দশক ধরে এই ব্যবসা চালাচ্ছেন অমলকান্তি হাটি। বাচ্চা থেকে বয়স্ক সবাই এই সিঙাড়ার প্রেমে পাগল।
Purba Bardhaman News: ফি দিন বিকেলে রায়নার অমলকান্তি হাটির দোকানে সিঙাড়া কিনতে এই ভিড়ের ছবি চোখে পড়ে।
Purba Bardhaman News: রবার্ট ক্লাইভ (Robert Clive) থেকে শুরু করে মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র,
সবাই মজেছিলেন এই সিঙাড়ার স্বাদে। বেকারত্বের জ্বালা থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই চালাতে নেমে
ত্রিভুজাকৃতি মুখরোচক খাবার সিঙাড়া তৈরিতে মনোনিবেশ করেন অমলকান্তি হাটি। সেই থেকে
আজ ৩০ বছর পার, পূর্ব বর্ধমানের রায়নার শ্যামসুন্দর অঞ্চলের চাতর গ্রামের অমলকান্তি সিঙাড়াকেই আঁকড়েআছেন।
স্বাদের মাহাত্ম্যে তাঁর তৈরি সিঙাড়ার খ্যাতি এখন রায়না ছাড়িয়ে গোটা রাঢ়বঙ্গ জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। তাই বিকেল হলেই অমলকান্তির দোকানে মস্ত লাইন। প্রতিদিন বিকেলে দোকান খুলে তিন ঘন্টার মধ্যে অমলকান্তি ৭ টাকা পিসে প্রায় ১২০০ পিস সিঙাড়া বিক্রি করে ফেলেন। এতল্লাটে 'সিঙাড়া সম্রাট' বলেই পরিচিত হয়ে গিয়েছেন অলকান্তি হাতি।
রাজ্যের শস্যগেলা হিসেবে পরিচিত পূর্ব বর্ধমান জেলা। খাস ধান ও সুগন্ধী ধান চাষে এই জেলার রায়নার চাষিরা যথেষ্টই সুনাম কুড়িয়েছেন। এরই সঙ্গে আলু ও সবজি তো রয়েইছে। এমনই এক কৃষি অধ্যুষিত এলাকার বাসিন্দা হয়েও অমলকান্তি হাটি চাষ নিয়ে কখনই সেভাবে মাথা ঘামাতে চাননি। উল্টে বেকারত্বের জ্বালা থেকে নিস্কৃতি পেতে তিনি তাঁর যৌবন জীবন থেকেই তেলেভাজা ব্যবসা নিয়ে মাথা ঘামানো শুরু করেন।
আরও পড়ুন- West Bengal News Live:বছর শেষে আজ সন্দেশখালিতে মমতা, কড়া নিরাপত্তার ঘেরাটোপে দ্বীপাঞ্চল
অমলকান্তি হাটির কথা অনুযায়ী, প্রথম দিকে তিনি বেগুনি, আলুর চপ এসব তৈরি করে বিক্রি করা শুরু করেছিলেন। কিন্তু তাতে ব্যবসায়িক শ্রীবৃদ্ধি তেমন না মেলায় তিনি বিকল্প মুখরোচক খাবার প্রস্তুত করা নিয়ে ভাবনা চিন্তা শুরু করেন। তিনি ঠিক করে নেন, নদিয়ার মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায় এবং রবার্ট ক্লাইভ যে সিঙাড়া খেয়ে মোহিত হয়ে ছিলেন তার থেকেও ভাল সিঙাড়া তিনি তৈরি করবেন। শুধু ভাবা নয়, বাস্তবেও সেটা তিনি করে দেখিয়েছেন।
আরও পড়ুন- Mahishadal Rajbari: বর্ষবরণে মহিষাদল রাজবাড়িতে রাজকীয় আয়োজন, অভূতপূর্ব মুহূর্তের স্বাক্ষী থাকতে চান?
প্রতিদিন সকাল হলেই অমলকান্তি হাটি তাঁর স্ত্রী ও একজন কর্মচারীকে সঙ্গে নিয়ে বাড়িতে শুরু করে দেন সিঙাড়া তৈরির কাজ। অমলকান্তি বলেন, "সিঙাড়ার স্বাদের মূল রহস্যটা পুরেই লুকিয়ে থাকে। সেটা আমি প্রথম থেকেই খুব ভালোভাবে বুঝে গিয়েছিলাম। তাই আমি সেরা পুর তৈরিতেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। সেই মতো ১২০০ পিস সিঙাড়া তৈরির জন্য প্রতিদিন ৬০ কেজি আলুর খোসা ছাড়িয়ে সাইজ মতো কোটা হয়। কাটা আলু সেদ্ধ করে নেওয়ার পর প্রয়োজন মতো পেঁয়াজ,আদা ও রসুনের খোসা ছাড়িয়ে তা বেটেও ফেলা হয়। সাথে সাথে চলে নারকেল কুচানো এবং ধনেপাতা,বিট,গাজর, টমেটো কুচানো দেওয়া হয়।"
আরও পড়ুন- West Bengal Weather:বছর শেষে শীতের জোরোল কামব্যাকের ইঙ্গিত! একধাক্কায় কোথায় নামতে পারে পারদ?
তিনি আরও জানান, এই সব উপাদান ছাড়াও নামি দামি কোম্পানির বিভিন্ন মশলা, ভালো কাশ্মীরি মেথিপাতা, কড়াইশুটি,বাদাম,কাজু ও কিশমিশ পরিমাণ মতো নেওয়া হয়। বিশেষ রন্ধন প্রণালী মেনে এই সব উপাদান ভাল করে কষে সিঙাড়ার পুর তৈরি হয়।
বিকেল ৫টা থেকে সিঙাড়ার বিক্রির শুরু হয়। খরিদ্দারদের লাইন পড়ে যায় তাঁর দোকানের সামনে। সিঙাড়া ভেজে একের পর এক খরিদ্দারের হাতে তিনি তুলে দেন অমলকান্তি হাটি। প্রতি পিস সিঙাড়ার দাম ৭ টাকা। সন্ধে সাড়ে ৭টা থেকে ৮ টার মধ্যে তাঁর প্রায় ১২০০ পিস সিঙাড়া বিক্রি হয়ে যায়।
আরও পড়ুন- West Bengal News Updates : শেষ হল 'বাঘ-বন্দী' খেলা, জালে জিনাত, হাঁফ ছাড়ল বন কর্মীরা, শুভেচ্ছা মমতার
সিঙাড়া রসিক ক্রেতা অরিন্দম খাঁ ও শেখ ফজলুল হক বলেন, "চাতরের অমলকান্তি হাটির দোকানের সিঙাড়ার স্বাদই আলাদা। এমন স্বাদের জুড়ি মেলা ভার। এই সিঙাড়ার স্বাদ পেতে দূর-দূরান্ত থেকে অনেকে ছুটে আসেন।" চাতর গ্রামের বাসিন্দারা জানান, প্রত্যন্ত গ্রামে দোকান খুলে বসে দৈনিক ৮ হাজারের বেশি টাকার সিঙাড়া বিক্রি করেন অমলকান্তি হাটি। অমলকান্তির মেয়ে মুনমুন খাঁ বলেন, “স্বল্প পুঁজি নিয়ে সিঙাড়ার ব্যবসায় নেমেছিলেন বাবা। তাঁরই হাত ধরে ব্যবসার শ্রীবৃদ্ধি হয়েছে। লেখাপড়া শিখিয়ে ধুমধাম করে আমাদের তিন বোনের বিয়ে দিয়েছেন বাবা।"