Ishwar Chandra Vidyasagar: আজ পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের (Ishwar Chandra Vidyasagar) জন্মদিন। বাঙালি সমাজে বিদ্যাসাগরের কীর্তি বলে শেষ করা যাবে না। সমাজ সংস্কারক হিসেবে যে অনন্য সাধারণ পরিচয় তিনি রেখে গিয়েছেন তা জাতি হিসেবে বাঙালি কোনও দিনও ভুলতে পারবে না। আজ তাঁর জন্মদিনে তাঁর বিশেষ কয়েকটি কীর্তি নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হল বিশেষ এই প্রতিবেদনে।
১৮২০ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর বীরসিংহ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন বিদ্যাসাগর। বাংলা, সংস্কৃতর পাশাপাশি ইংরেজি ভাষায় বিশেষ ব্যুৎপত্তি ছিল তাঁর। তাঁরই হাত ধরে প্রথম বাংলা লিপি সংস্কারের কাজ হয়। বাংলা লিপিকে যুক্তিবহ ও সহজ করে তুলেছিলেন বিদ্যাসাগর। বাঙালি এই কৃতি সন্তানকে বাংলা গদ্যের প্রথম শিল্পী বলে অভিহিত করেছিলেন স্বয়ং বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (Rabindranath Tagore)।
ছেলের বিয়ে দিয়েছিলেন বিধবার সঙ্গে
সমাজ সংস্কারক হিসেবে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের কীর্তি বাঙালি সমাজ কখনও ভুলতে পারবে না। নিজের ছেলের বিয়ে তিনি দিয়েছিলেন এক বিধবার সঙ্গে। একাজে তাঁর পরিবারের বাকিদের মত ছিল না। কার্যত সবার বিরুদ্ধে গিয়ে এই কাজ করেছিলেন তিনি। বিদ্যাসাগর তাঁর এই কাজের মাধ্যমে বাঙালি মননে নতুন চেতনার জন্ম দিয়েছিলেন।
ঈশ্বরচন্দ্রের 'নন্দন কানন'
নিজের জন্ম হয়েছিল পাড়া-গাঁয়ে। ছায়া নিবিড় শান্ত-স্নিগ্ধ পরিবেশে ঘেরা ঘরবাড়ি ছিল তাঁর বড় প্রিয়। বর্তমানে ঝাড়খণ্ডের জামতাড়া ও মধুপুরের মধ্যবর্তী তৎকালীন কর্মাটাঁর রেলস্টেশনের কাছে সবুজে সবুজ পরিবেশে থাকবার সংকল্প করে ফেলেছিলেন তিনি। সেই মতো বর্তমানে 'বিদ্যাসাগর' রেল স্টেশনের খুব কাছে একটি ভগ্নপ্রায় বাড়ি তিনি কিনেছিলেন। সেই বাড়ি ভেঙে নতুন করে বাড়ি তৈরি করেছিলেন তিনি। বিদ্যাসাগরের সেই বাড়ির নাম দিয়েছিলেন 'নন্দন কানন'।
আরও পড়ুন- Jute Mill Close: পুজোর মুখে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার জোগাড়! একদিনে কর্মহীন শ'য়ে-শ'য়ে শ্রমিক
হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় ছিল দারুণ ভরসা
অসুস্থ হলে বা অন্য কোনও রোগ নিরাময়ের ক্ষেত্রে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার ওপর দারুণ ভরসা করতেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা করবার জন্য তিনি নিজে দীর্ঘদিন ধরে রীতিমতো পড়াশোনা করে নানা অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছিলেন। কলকাতার কাজের ফাঁকে তিনি কর্মাটাঁরে যাওয়ার সময় সঙ্গে প্রচুর হোমিওপ্যাথি ওষুধ নিয়ে যেতেন। সেখানকার আদিবাসী লোকজনের চিকিৎসা করতেন তিনি।
ফরাসডাঙায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে বাস
মনে মনে ভেবেছিলেন জীবনের শেষ সময়টা কর্মটাঁরে কাটাবেন তিনি। তবে তা আর হয়ে ওঠেনি। ১৮৯০ সালে শারীরিক সমস্যা আরও বেড়ে যাওয়ার কারণে চন্দননগরের ফরাস ডাঙায় একেবারে গঙ্গার পাড়ে একটি বাড়ি ভাড়া করেছিলেন বিদ্যাসাগর। মাঝে মধ্যে কলকাতায় গেলেও প্রায়ই ফিরে যেতেন ফরাস ডাঙার ভাড়া বাড়িতে।