/indian-express-bangla/media/media_files/2025/09/27/cats-2025-09-27-16-40-12.jpg)
কী বললেন ডাকাবুকে কংগ্রেস নেতা?
লাদাখে উত্তেজনার আবহে শুক্রবার লেহতে সাংবাদিক বৈঠকের ঠিক আগে আটক সোনম ওয়াংচুক। বুধবারের হিংসাত্মক বিক্ষোভকে উস্কে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। ওই দিনের সংঘর্ষে চারজন নিহত হন এবং বেশ কয়েকজন আহত হন। পুলিশের গুলিতে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ। এদিকে লাদাখের সমাজ কর্মী সোনম ওয়াংচুককে গ্রেপ্তারের পর তার স্ত্রী গীতাঞ্জলি সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, কোনও কারণ ছাড়াই তার স্বামীর সঙ্গে অপরাধীর মতো আচরণ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন- 'আগে মিম তৈরি হত, এখন বিএসএনএল ইতিহাস তৈরি করেছে'...মোদীর মুখে BSNL-এর গুণগান
সোনম ওয়াংচুককে গ্রেফতারির ঘটনায় গর্জে উঠলেন কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী। তিনি এদিন এক সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, "উনি কোন ছোটখাটো মানুষ নয়, বরং উনি ওনার কাজের মধ্য দিয়ে সারা দেশ এমনকী সারা বিশ্বজুড়ে আলাদা এক পরিচিতি গড়ে তুলেছেন। লাদাখের মানুষের অধিকার ছিনিয়ে আনতে সোনম বছরের পর বছর লড়াই জারি রেখেছেন, কেবল লাদাখ নয়, এর সঙ্গে কার্গিলের মানুষের অধিকার সুরক্ষিত করতেও তিনি লড়াই চালাচ্ছেন। ৩৭০ ধারা বাতিলের সময় ওনার প্রতি সরকারের অবস্থান ছিল ভিন্ন। এখন লাদাখের অধিকার ছিনিয়ে আনার লড়াইয়ে সরকারের বিরুদ্ধে অনশন করায় ওয়াংচুককে রাষ্ট্রদোহী বলা হচ্ছে। আরও কী কী বলা হবে জানিনা। এটা অন্যায়। জম্মু-কাশ্মীর, লাদাখ সীমান্ত নিরাপত্তার ক্ষেত্রে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ। এই অঞ্চল শান্তিপূর্ণ রাখাটা সরকারের কাছে অগ্রাধিকার। একটা অধিকার আদায়ের আন্দোলনকে মিথ্যা বদনাম দিয়ে সেটাকে আরও হিংসাত্মক করে তুলবেন না এটা কেন্দ্রের কাছে আমার অনুরোধ। ওদের সঙ্গে আলোচনা করুক, সবসময় জবরদস্তি একেবারেই সঠিক নয়"।
আরও পড়ুন- দেবীর হাতে ট্রাম্প বধ! শারদোৎসবের শুরুতেই সাড়া ফেলে দিয়েছে এই নামী পুজো
উল্লেখ্য, লেহ এপেক্স বডির সদস্য ওয়াংচুক দীর্ঘদিন ধরে কেন্দ্রশাসিত লাদাখে ষষ্ঠ তফসিল ও রাজ্যের মর্যাদার দাবিতে আন্দোলন চালাচ্ছিলেন। তিনি কয়েকদিনের অনশনও করেছিলেন, যদিও বুধবার হিংসা ছড়িয়ে পড়ার পর সেটি তুলে নেন। সেদিনের ঘটনায় বিজেপি দফতরে অগ্নিসংযোগও হয়। তখনই শান্তির আহ্বান জানিয়েছিলেন ওয়াংচুক।বিক্ষোভ চলাকালীন হিংসার ঘটনায় চারজন নিহত এবং অন্তত ৫৯ জন আহত হন। এর দু’দিন পর শুক্রবার সোনমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরবর্তীতে তাকে যোধপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয় এবং কড়া নিরাপত্তার মধ্যে রাখা হয়েছে। কেন্দ্রের দাবি, ওয়াংচুক প্ররোচনামূলক বক্তব্য দিয়ে সেদিনের হিংসাকে উসকে দিয়েছিলেন। সরকারের সঙ্গে লাদাখের প্রতিনিধি দলের চলমান আলোচনাকে নষ্ট করার জন্যই “কিছু রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ব্যক্তি” পরিস্থিতি অশান্ত করছে।
হিমালয় ইনস্টিটিউট অফ অল্টারনেটিভস, লাদাখ (HIAL)-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা গীতাঞ্জলি আংমো দাবি করেছেন, সরকার মিথ্যা গল্প বানিয়ে তার স্বামীর ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। তিনি অভিযোগ করেছেন, পুলিশ তাদের বাড়িতেও লুটপাট চালিয়েছে এবং সোনমকে "জাতীয়তাবিরোধী" হিসেবে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে।
গীতাঞ্জলি বলেন, “এটি গণতন্ত্রের সবচেয়ে নিকৃষ্ট রূপ। কোনও শুনানি ছাড়াই, কোনও কারণ ছাড়াই, তাকে অপরাধীর মতো গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে তার সুনাম নষ্ট করছে। এমন একজন মানুষ, যিনি রোলেক্স পুরস্কার থেকে শুরু করে রাষ্ট্র সংঘ পর্যন্ত কৃষি ও পরিবেশ নিয়ে কাজের জন্য দেশকে সম্মান এনে দিয়েছেন, তাকে যদি এইভাবে হেয় করা হয়, তবে বিশ্বনেতা হওয়ার স্বপ্ন রসিকতা ছাড়া কিছুই নয়।”
আরও পড়ুন- প্রবল কম্পন! দুলে উঠল ভারত, চরম আতঙ্কে ঘরছাড়া মানুষজন, তুমুল চাঞ্চল্যে হুলস্থূল
কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপির নীতিতেও প্রশ্ন তোলেন তিনি। নিজেকে ধর্মপ্রাণ হিন্দু হিসেবে পরিচয় দিয়ে গীতাঞ্জলি বলেন, “দয়া করে তাদের বলুন যেন নিজেদের হিন্দু না বলে। কারণ হিন্দুত্বের মূল ভিত্তি সত্য। বিজেপি মিথ্যার ওপর দাঁড়িয়ে আছে। এটি সেই ভারত নয় যার স্বপ্ন শ্রী অরবিন্দ দেখেছিলেন।”