POCSO: পকসো (POCSO) মামলায় ফাঁসির সাজা। মঙ্গলবার আরামবাগ মহকুমা আদালতে যুগান্তকারী রায় দিলেন বিচারক। তন্ত্রসাধনার নাম করে এক শিশুকন্যাকে তুলে এনে তাকে ধর্ষণ ও খুন করার দায়ে এক মহিলা তান্ত্রিক সাগরিকা পন্ডিত এর বিরুদ্ধে ফাঁসির সাজা ঘোষণা করলো আরামবাগ মহকুমা আদালত। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দেওয়া হয়েছে শিশুর দিদিমা সুশীলা মাঝিকেও। অন্যদিকে মুখ্য আসামি মুরারি পন্ডিত চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে জেলে থাকাকালীন হৃদরোগে মারা যান।
পুলিশ সূত্রের খবর, ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১৮ সালের ২ ফেব্রুয়ারি। ওই দিন ৪ বছরের শিশুকন্যাটি হঠাৎ নিজের বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে যায়। কোথাও খুঁজে না পেয়ে ৩ ফেব্রুয়ারি খানাকুল থানায় একটা মিসিং ডায়েরি করেন ওই ৪ বছরের শিশুকন্যার অভিভাবকরা। ৭ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় একটি নির্মীয়মাণ বাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে ওই শিশুটির পচাগলা দেহ উদ্ধার হয়। আদালত সূত্রে জানা যায়, ঘটনাটি ঘটেছিল আরামবাগের একটি গ্ৰামে। সুশীলা মাঝি নামে এক মাঝবয়সী মহিলা তন্ত্রসাধনার প্রতি আকৃষ্ট ছিলেন। ওই গ্রামের এক তান্ত্রিক পরিবার মুরারি পণ্ডিত ও সাগরিকা পন্ডিতের সঙ্গে যোগাযোগ করেন সুশীলা। তন্ত্রে সিদ্ধিলাভ করতে হলে কোন শিশুকে নরবলি দিতে হবে এই প্রস্তাবে রাজি হয়ে যায় সুশীলা। আশেপাশে কোনও শিশুকে না পেয়ে নিজের নাতনিকেই মেয়ের অজান্তে ফুঁসলিয়ে ওই তান্ত্রিকের কাছে নিয়ে যায়।
এরপর ওই শিশুকন্যাকে তন্ত্র সাধনার নাম করে হাত বেঁধে এবং মুখে কাপড় বেঁধে ধর্ষণ করে খুন করা হয়। তারপর এলাকারই ঘন্টু সিং-এর বাড়ির পাশে সেপটিক ট্যাংকের ভেতর ফেলে দেয় মুরারী পন্ডিতের দলবল। মেয়েকে দেখতে না পেয়ে শিশু কন্যার পরিবারের সদস্যরা খোঁজাখুঁজি করে, কোথাও না পেয়ে খানাকুল থানার দ্বারস্থ হন। তদন্তে নেমে খানাকুল থানার পুলিশ সেপটিক ট্র্যাঙ্ক থেকে শিশু কন্যার দেহ উদ্ধার করে।
আরও পড়ুন- Eastern Rail: পুজোর মুখে বাম্পার সুখবর! রেলের এই শাখায় পরপর নতুন ট্রেন
আরও পড়ুন- Durga Puja 2024: স্বপ্নে পাওয়া বাসনে ভোগ নিবেদন মা দুর্গাকে! প্রাচীন এই পুজো ঘিরে চর্চা সীমাহীন!
আরও পড়ুন- Junior Doctor's Cease Work: ফের পূর্ণ কর্মবিরতিতে জুনিয়র ডাক্তাররা, সরকারের কাছে ১০ দফা দাবি
এরপরেই নানা সাক্ষ্য প্রমাণ ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে তান্ত্রিক দম্পতি মুরারি পন্ডিত ও তার স্ত্রী সাগরিকা পন্ডিতকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার করা হয় শিশুকন্যার দিদিমাকেও। সেই মামলা চলতে থাকে আরামবাগ মহকুমা আদালতে। মঙ্গলবার দুপুরে আদালতের বিচারক কে কে আগরওয়াল মুরারির স্ত্রী সাগরিকাকে ফাঁসির সাজা দেন। দিদিমা সুশীলাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দেন। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে জেল হেফাজতে থাকাকালীন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায় তান্ত্রিক মুরারি পণ্ডিত। সরকারি আইনজীবী বিকাশ রায় জানান, রায় দেওয়ার পাশাপাশি বিচারক মৃত শিশুকন্যার পরিবারকে ৩ লক্ষ টাকা সরকারি সাহায্যের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।