Teacher Protest: হটাতই গোলাপ ফুল হাতে চাকরিহারাদের পাশে রবীন্দ্রনাথ। ছদ্মবেশে আন্দোলনকারীদের সমর্থনে পাশে এসে পৌঁছলেন বিকাশ ভবনের সামনে। চাকরিহারা শিক্ষক- শিক্ষিকাদের আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে তাদের পাশে দাঁড়ালেন কংগ্রেসের আইএনটিইউসি সেবা দল। এদিন তারা মিছিল করে এসে বিকাশ ভবন এর সামনে চাকরিহারা শিক্ষক শিক্ষিকাদের আন্দোলন মঞ্চের সামনে এসে জমায়েত করেন। আইএনটিইউসি সেবা দলের এক কর্মী রবীন্দ্রনাথের ছদ্মবেশে গোলাপ ফুল হাতে নিয়ে দাঁড়ায় পুলিশ আধিকারিকদের সামনে। পুলিশ আধিকারিকদের ফুল দিতে গেলে তারা তা নিতে অস্বীকার করে।
চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে লাগাতার বিকাশ ভবনের সামনে চলছে অবস্থান বিক্ষোভ। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই আন্দোলনের ঝাঁঝ বাড়তে থাকে। বিকাশ ভবনের গেট ভেঙে ফেলে জোর করে ভিতরে ঢুকে পড়েন আন্দোলনকারীরা। সন্ধ্যার পর পরিস্থিতি রীতিমত উত্তপ্ত হয়ে পড়ে। আন্দোলনকারীদের হটাতে লাঠিচার্জ করা হয়। পুলিশের মারে গুরুতর জখম হয়েছেন বেশ কয়েকজন শিক্ষক। অভিযোগ, শিক্ষকদের লাথি, ঘুষি এমনকী জুতো দিয়েও মারা হয়। সকাল থেকে অবস্থানে বসা শিক্ষকদের হটাতে রাত আটটা নাগাদ সাইরেন বাজিয়ে অ্যাকশন শুরু করে পুলিশ।
একদিকে হকের চাকরি যাওয়ার যন্ত্রনা। অপরদিকে পুলিশের লাঠির আঘাত। কান্নায় ভেঙে পড়েন চাকরিহারা শিক্ষকরা। এবার বিধাননগর পুলিশের পক্ষ থেকে আন্দোলনকারী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে স্বতঃ প্রণোদিত মামলা রুজু করা হয়। চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষকদের বিরুদ্ধে সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর, সরকারি কাজে বাধা দেওয়া এবং সরকারি কর্মীদের হেনস্থা সহ একাধিক অভিযোগ আনা হয়েছে।
ঠিক কী কারণে কোন পরিস্থিতিতে লাঠিচার্জ করতে হয়েছে পুলিশকে তার ব্যাখ্যায় এডিজি দক্ষিনবঙ্গ সুপ্রতিম সরকার জানিয়েছেন, "গত ১০ দিন ধরে আন্দোলনকারীরা শান্তিপূর্ণ অবস্থানে ছিলেন, পুলিশ কোনও হস্তক্ষেপ করেনি। তবে বৃহস্পতিবার পরিস্থিতি হঠাৎ করেই পাল্টে যায়"। তিনি আরও জানান, “বিকাশ ভবনের মূল গেটে জোর করে ব্যারিকেড ভেঙে ঢুকে পড়েন বিক্ষোভকারীরা। গেট ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে তাঁরা অবস্থান শুরু করেন এবং ঘোষণা করেন কাউকে বেরোতে দেওয়া হবে না। একাধিকবার মাইকিং করে সতর্ক করা হলেও তাঁরা অনড় থাকেন।”
পুলিশের তরফে বলা হয় "বিকাশ ভবন প্রাঙ্গণে ৫৫টি অফিস এবং ৫০০-৭০০ কর্মী কাজ করেন। সাত ঘণ্টা ধরে তাঁরা অবরুদ্ধ ছিলেন। একজন গর্ভবতী মহিলা সহ অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। পুলিশ বহুবার অনুরোধ করেছিল ভিতরে যাঁরা কর্মরত, তাঁদের বাইরে বেরোতে দেওয়ার জন্য। কিন্তু আন্দোলনকারীরা তাতে কর্ণপাত করে নি"। পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে এবং বাধ্য হয়ে পুলিশ বলপ্রয়োগ করে"। এডিজি দক্ষিনবঙ্গ আরও বলেন, “আন্দোলনের অধিকার যেমন আন্দোলনকারীদের আছে, তেমনই যারা সারাদিন কাজ করেছেন, তাঁদেরও বাড়ি ফেরার অধিকার রয়েছে।” পুলিশ জানিয়েছে, পরিস্থিতি যাতে আর উত্তপ্ত না হয়, তার জন্য সংযতভাবেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।
যদিও পুলিশের তরফে যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে আন্দোলনকারীদের তরফে। কোনও রকম অসহযোগিতার কথা রীতিমত উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আন্দোলনকারীদের সাফ দাবি, বিভিউ পিটিশন নিয়ে তাদের কোর কমিটির সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। সরকারের তরফে অবস্থান স্পষ্ট করার কথাও বলা হয়েছে।