/indian-express-bangla/media/media_files/2025/09/05/teachers-day-special-2025-09-05-11-03-41.jpg)
‘ধর্ম নয়, কর্মই হোক আসল পরিচয়’-বার্তা অমরেশের- গ্রাফিক্স -অংশুমান মাইতি
Teachers Day 2025: ‘ধর্ম নয়, কর্মই হোক আসল পরিচয়’— নদীয়ার স্কুল শিক্ষক অমরেশ আচার্যের মানবিক উদ্যোগে মুগ্ধ সকলেই।
কিছু মানুষ তাঁদের কর্মের মধ্য দিয়েই মৃত্যুর পরেও মানুষের মনে বেঁচে থাকেন। সমাজের অন্তরে জায়গা করে নেন। নদীয়ার কৃষ্ণনগরের পদার্থবিদ্যার শিক্ষক অমরেশ আচার্য সেই বিরল উদাহরণের মধ্যে অন্যতম। করোনা মহামারির সময় থেকে তিনি দুঃস্থ, অসহায় মানুষরা যাতে অনাহারে না থাকেন তার জন্য নিজের সঞ্চয় থেকে শুরু করেছিলেন খাবার বিলির বিশেষ উদ্যোগ। আজও প্রতিদিন সেই মানবিক কর্মকান্ডকে অব্যাহত রেখেছেন অমরেশ। পাশে রয়েছেন তাঁর স্কুলশিক্ষিকা দিদি মন্দিরা আচার্য।
আরও পড়ুন- কীভাবে শুরু হল 'শিক্ষক দিবস', জানুন এই বিশেষ দিনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য!
অমরেশের প্রতিদিনের রুটিন যেন মানবসেবার এক পাঠশালা। ভোর সাড়ে চারটেয় ঘুম থেকে ওঠে। বাজার সেরে স্কুটির দু’পাশে ১৩ কেজির দু’টি দুধের ক্যান বেঁধে রওনা দেন ভূতপাড়ার উদ্দেশে। সেখানে অপেক্ষায় থাকে একঝাঁক দুঃস্থ শিশু। তাঁদের হাতে নিজে তুলে দেন দুধ-বিস্কুট। এরপর স্কুলের দায়িত্ব সামলে সন্ধ্যা নামতেই ফের শুরু করেন মহৎ কর্মকান্ড । রাতের খাবার রান্না করে কৃষ্ণনগর রেলস্টেশন চত্বরে উপস্থিত হন অমরেশ। সেখানে প্রতিদিন ৪০ জনের বেশি অভুক্ত মানুষকে নিজের হাতে খাওয়ান তিনি। গত তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে এই কাজ অব্যাহত রেখেছেন তিনি। প্রতি সপ্তাহে প্রায় ১২-১৩ হাজার টাকা খরচ হয় এই কর্মযজ্ঞে।
আরও পড়ুন-শিক্ষকের আকালে স্কুলে তালা পড়ার জোগাড় হয়! পড়ুয়াদের স্বার্থেই 'আপোষহীন সংগ্রাম' ছিয়াত্তরের 'তরুণের'
শিক্ষক অমরেশ আচার্যের এই মহান উদ্যোগে সঙ্গী হয়েছেন তাঁর দিদি ছাড়াও সমাজের একাধিক মানুষ—মনোজিত, সৌমিক, পলাশ, কুন্তলা, মনিকা, সাহেব ও জয়দেবসহ আরও অনেকে। তাঁদের সহায়তায় এগিয়ে চলেছে এই মানবিক উদ্যোগ। অমরেশের কথায়, “আমাদের দেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা অপুষ্টি ও শিক্ষা। আমি যদি আমার কর্মের মাধ্যমে কিছু মানুষকে এই সংকট থেকে মুক্ত করতে পারি, তবে তারাই আগামী দিনে অন্যদের পথ দেখাবে। সেভাবেই দেশ এগিয়ে যাবে।”
আরও পড়ুন- এগিয়ে রামকৃষ্ণ মিশন, 'শিক্ষক দিবস' উপলক্ষে ৭৩ শিক্ষককে 'শিক্ষারত্ন' পুরস্কার
সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যে ভাইরাল হয়েছে অমরেশের এই মহান কর্মকাণ্ড। দেশ-বিদেশ থেকে অগণিত মানুষ তাঁর এই মানবিক উদ্যোগকে কুর্নিশ জানিয়েছেন। অমরেশ আচার্য এবং তাঁর দিদি মন্দিরার এই নিরলস প্রচেষ্টা আজ সমাজে এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।