offbeat destinations: মহিষাদলে শীতের মিঠে রোদ গায়ে মেখে রূপনারায়ন নদীর মনোরম শান্ত হাওয়ার সাথে রাত্রিবাস। এ যেন এক স্বর্গসুখ! ভ্রমণপিপাসুদের কাছে নদীর পাড়ে থাকার সুযোগ যেন অন্যতম আকর্ষণের। তার ওপর যদি তাঁবুতে রাত্রিবাস হয়, সে যেন এক উপরি পাওনা বলা চলে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মহিষাদল (Mahishadal) ব্লকের গেঁওখালিতে নদীর পাড়ে তাঁবুতে রাত্রিবাসকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে বাড়ছে আকর্ষণ। বছর শেষে পিকনিকের আনন্দ নিতে এবং শান্ত নদীর উদারতা উপভোগ করতে ভিড় জমছে গেঁওখালিতে (Geonkhali)। হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের তরফ থেকে ইতিমধ্যে গেঁওখালিকে ঢেলে সাজানো হয়েছে। গত কয়েক বছরে একপ্রকার ভোল বদলে গেছে গেঁওখালির। হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের অন্তর্গত ত্রিবেণী সঙ্গমের ঠিক পিছনেই ব্যবস্থা করা হয়েছে তাঁবুর।
সেই তাঁবুতেই রাত্রিবাস করতে পারবেন দূর-দূরান্ত থেকে আসা পর্যটকেরা। হুগলি, হলদি ও রূপনারায়ন এই তিন নদীর সংযোগস্থলে অবস্থিত গেঁওখালি। আর সেখানেই গড়ে উঠেছে পর্যটন কেন্দ্র। তাঁবুতে রাত্রি বাসের জন্য ইতিমধ্যে পর্যটকদের বিশেষ আকর্ষণ লক্ষ্য করা গেছে। হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের ওয়েবসাইট থেকে বুক করা যাবে তাঁবুগুলি। প্রত্যেকটি তাঁবুতে দু'জন করে থাকতে পারবেন। তাঁবুর ভাড়া থাকছে ২০০০ টাকা। বছর শেষের সময় এখন প্রায় প্রত্যেকদিন তাঁবু গুলির বুকিং কমপ্লিট বলা চলে। বিশেষ করে শহুরে মানুষজন ছুটির দিনগুলি কাটাতে বেছে নেন শান্ত নিরিবিলি নদীর ধারে কোনও পর্যটন কেন্দ্রকে। দিঘাতে (Digha) পর্যটকদের ভিড় জমলেও সেখানে অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে অনেকেই বেড়াতে আসেন গেঁওখালিতে। ইতিমধ্যে পর্যটকদের ভিড় সামাল দিতে তাঁবুর পাশাপাশি নতুন ভাবে আরও একটি গেস্ট হাউস তৈরি হয়েছে। আগেও একটি গেস্ট হাউস ছিল।
তার ঠিক পাশেই আরও একটি গেস্ট হাউস তৈরি করা হয়েছে। তাঁবুতে রাত্রি বাসের পাশাপাশি থাকছে খাবারের এলাহি আয়োজন। অর্ডার মতো সরবরাহ করা হবে জিভে জল আনা সব পদ। এছাড়াও আগামী দিনে গেঁওখালিতে আগত পর্যটকদের নিয়ে বিশেষ ট্যুর প্যাকেজ করারও পরিকল্পনা রয়েছে হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের। সেখানে যুক্ত করা হবে মহিষাদল রাজবাড়ি, মীরপুর পর্তুগিজ পাড়া, তমলুক রাজবাড়ীর মত দর্শনীয় স্থান।
আরও পড়ুন- Kolkata Metro: পাতাল পথে কবে জুড়বে এসপ্ল্যানেড-শিয়ালদহ? কাজ দেখে সন্তুষ্ট মেট্রোকর্তারা
আরও পড়ুন- West Bengal News Highlights: রেশন দুর্নীতি মামলায় ED-র জালে জ্যোতিপ্রিয়র CA সহ ৩
হাওড়ার আমতা থেকে গেঁওখালিতে বেড়াতে এসেছিলেন সুবিকাশ ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “নদীর কাছে তাঁবুতে থাকার সুযোগ খুবই আকর্ষণের। এতে শান্ত নদীর সৌন্দর্য্য উপভোগ করা যায়। কংক্রিটের তৈরি গেস্ট হাউসের থেকে এই ধরনের তাঁবুতে রাত্রি বাস করা অনেক বেশি মনকে নাড়া দেয়।”
আরও পড়ুন- Kolkata Metro: বড়দিনে বাম্পার সার্ভিস কলকাতা মেট্রোর, গভীর রাতেও পরিষেবা, জানুন বিশদে
হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান জ্যোতির্ময় করের কথায়, “তাঁবুকে কেন্দ্র করে পর্যটকদের ভালোই সাড়া মিলছে। তাঁবুর পাশে রয়েছে পুকুর। সেখানে রংবাহারি আলো দিয়ে সাজানোর পাশাপাশি ছাড়া হয়েছে মাছ। এছাড়াও কিছুটা দূরেই তৈরি করা হয়েছে মনোরম উদ্যান। আর এসব মিলিয়ে বর্তমানে পর্যটকদের তাঁবুতে রাত্রি বাসের আকর্ষণ অনেকটাই বেড়েছে বলা চলে।”
কীভাবে যাবেন?
সড়ক পথে ও জলপথ দিয়ে আসা যায়। যারা কলকাতা বা অন্যান্য এলাকা থেকে গাড়িতে আসবেন তাদের ক্ষেত্রে ১১৬ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে কাপাসেড়িয়ায় নেমে মহিষাদল সিনেমামোড়। সেখান থেকে মহিষাদল গেঁওখালি রোড ধরে ৬ কিমি গেলেই পৌঁছে যাবেন ত্রিবেণী সংগমে। আবার কেউ যদি হলদিয়া মেচেদা রাজ্য সড়ক ধরে আসেন তাহলেও তাকে সিনেমা মোড়ে নেমে একই ভাবে মহিষাদল গেঁওখালি সড়ক ধরে পৌঁছাতে হবে। যদি কেউ কলকাতা থেকে জলপথে আসতে চান তাহলে কলকাতা থেকে নূরপুর আসতে হবে। সেখান থেকে নূরপুর গেঁওখালি ফেরি সার্ভিস ধরে গেঁওখালী পৌঁছাতে হবে। সেখান থেকে পায়ে হেঁটে মাত্র ১৫ মিনিট পৌঁছে যাবেন ত্রিবেণী সংগমে।