Thailand-Cambodia war: ভারতের প্রতিবেশী অঞ্চলে 'যুদ্ধ শুরু', তীব্র গোলাগুলির পর বিমান হামলা, এফ-১৬ যুদ্ধ বিমান ব্যবহার করে সামরিক ঘাঁটি ধ্বংস, নিহত ৯, তুঙ্গে উত্তেজনা।
দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দুই প্রতিবেশি দেশের মধ্যে বহুদিনের সীমান্ত বিরোধ ফের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আকার ধারণ করল। বৃহস্পতিবার থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে নতুন করে সশস্ত্র সংঘর্ষ শুরু হয়েছে, যা কয়েক মাস ধরে চলা উত্তেজনাকে চরম পর্যায়ে নিয়ে গেছে। থাই সেনাবাহিনী জানিয়েছে, কমপক্ষে ৯ জন থাই নাগরিক নিহত এবং আরও ১৪ জন আহত হয়েছেন। সীমান্ত এলাকায় গোলাগুলি, শেলিং এবং রকেট হামলা অব্যাহত।এর জবাবে থাইল্যান্ড F-16 যুদ্ধবিমান দিয়ে বিমান হামলা চালিয়েছে সীমান্তবর্তী এলাকায়। থাই প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, অন্তত ছয়টি স্থানে সংঘর্ষ চলছে।
থাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়ার মধ্যে দীর্ঘদিনের সীমান্ত বিরোধ নতুন করে রক্তক্ষয়ী সংঘাতে পরিণত হয়েছে। থাইল্যান্ড সম্প্রতি কম্বোডিয়ার বিতর্কিত সামরিক ঘাঁটিতে F-16 যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে বিমান হামলা চালিয়েছে। থাই সেনাবাহিনীর দাবি, কম্বোডিয়ার রকেট হামলার জবাবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। থাইল্যান্ডের সেনাবাহিনীর উপ-মুখপাত্র রিচা সুকসুয়ানান জানান, “পরিকল্পনা অনুযায়ী হামলা চালানো হয়েছে। ছয়টি F-16 বিমানের মধ্যে একটি কম্বোডিয়ার একটি সামরিক ঘাঁটি সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দেয়।” সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ৯ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
দ্বাদশ শতাব্দীর হিন্দু মন্দির প্রিয়া বিহারকে কেন্দ্র করে এই উত্তেজনার ইতিহাস বহু পুরনো। ১৯৬২ সালে আন্তর্জাতিক আদালত মন্দিরটিকে কম্বোডিয়ার অংশ ঘোষণা করলেও থাইল্যান্ডের একাংশ এখনও সেই রায় মেনে নিতে নারাজ। এই এলাকায় ২০০৮, ২০১১ সালের পর আবার ২০২৫-এ নতুন করে সংঘর্ষ শুরু হল। শুধু সামরিক ঘাঁটি নয়, এই হামলা আঘাত হেনেছে জনবসতি এলাকাতেও। থাইল্যান্ডের দাবি, কম্বোডিয়ার সেনারা একটি হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে। এদিকে দু'দেশের মধ্যে বিরোধের ঘটনায় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে, সংঘাত এখন আর শুধুমাত্র সীমান্তে সীমাবদ্ধ নেই, সাধারণ নাগরিকরাও এই সংঘর্ষে প্রভাবিত হচ্ছে। রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে এই বিষয়ে জরুরি বৈঠকের দাবিও উঠেছে।
সংঘর্ষের আবহে উভয় দেশ একে অপরের রাষ্ট্রদূতদের বহিষ্কার করেছে। থাইল্যান্ড হুঁশিয়ারি দিয়েছে, “আক্রমণ চললে পালটা পদক্ষেপ আরও জোরালো হবে।”মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চিন এই উত্তেজনার মাঝে মধ্যস্থতার পথে এগিয়ে আসতে পারে বলে জল্পনা বাড়ছে। কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেত জাতীয় ভাষণে স্পষ্ট করেছেন, “এই অস্থির পরিস্থিতিতে আমাদের সশস্ত্র প্রতিক্রিয়াই একমাত্র উপায়।” তিনি দেশের সামরিক বাহিনীতে নিয়োগ পুনরায় চালুর ঘোষণা করেন, যা থেকে স্পষ্ট —কম্বোডিয়া দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
দুই দেশের মধ্যে সীমান্ত উত্তেজনা এ বার পূর্ণাঙ্গ সামরিক সংঘাতে রূপ নিচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, এখনই কোনও তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতা না এলে এই সংঘাত আরও ব্যাপক ও দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের সক্রিয় ভূমিকা নেওয়া জরুরি।