Kesto vs kajal AI Video: 'বীরভূমকে বাঘ' অনুব্রতকে ধাওয়া 'সিংহ কাজলের', গোষ্ঠীদ্বন্ধে 'সরগরম' বীরভূম

Kesto vs kajal AI Video: বীরভূমে তৃণমূলের দুই হেভিওয়েট নেতা অনুব্রত মণ্ডল ও কাজল শেখের 'গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব' এবার পৌঁছেছে সোশ্যাল  মিডিয়ায়। ভাইরাল হয়েছে দুটি AI ভিডিও—একটিতে বাঘ জড়াচ্ছে কেষ্টকে, আরেকটিতে সিংহ জড়িয়ে আছে কাজলকে। রাজনৈতিক মহলে চর্চা, জনপ্রিয়তায় কিছুটা এগিয়ে অনুব্রত শিবির। 

বীরভূম জেলার রাজনীতিতে তৃণমূলের দুই হেভিওয়েট নেতা অনুব্রত মণ্ডল ও কাজল শেখের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নতুন কিছু নয়। মাঠে-ময়দানে, ব্লকে-বুথে দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছে বহুবার। আর এবার সেই লড়াই আরও রঙিন রূপে হাজির সোশ্যাল মিডিয়ায়—তাও আবার বাঘ ও সিংহের ‘আর্টিফিশিয়াল’লড়াইয়ের মাধ্যমে।

সদ্য ১৪ তারিখ কলকাতায় ডেকে দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি, ববি হাকিম সহ তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব অনুব্রত মণ্ডল ও কাজল শেখকে সতর্ক করে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ভুলে একসাথে কাজ করার বার্তা দিচ্ছে, ঠিক তখনই কেষ্ট-কাজলের অনুগামীরা 'দাদাদের' বাঘ-সিংহ বানাতে ব্যস্ত। 

তৃণমূলের প্রাক্তন জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে তাঁর অনুগামীরা দীর্ঘদিন ধরেই ‘বাঘ’ বলে আখ্যা দিয়ে এসেছেন। সম্প্রতি এক ভিডিও ভাইরাল হয়েছে যেখানে একটি বিশালাকৃতির বাঘ এসে জড়িয়ে ধরছে অনুব্রত মণ্ডলকে। ভিডিওটি যে AI বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মাধ্যমে বানানো, তা বলাই বাহুল্য।দু দিন ধরেই এই ভিডিও ভাইরাল হতেই এবার পাল্টা তৈরি হল নতুন এআই ভিডিও। 

এবার পাল্টা জবাব এসেছে কাজল শেখের পক্ষ থেকেও। অনুগামীরা পোস্ট করেছেন আরেকটি এআই ভিডিও, যেখানে একটি সিংহ এসে জড়িয়ে ধরছে বর্তমান জেলা সভাধিপতি তথা কোর কমিটির সদস্য কাজল শেখের ভিডিও । তা ভাইরাল হয়ে যায়। সোশ্যাল মিডিয়াতে অনুব্রতর ভিডিয়োতে কেউ লিখছেন, 'বাঘের বাচ্চা অনুব্রত মণ্ডল', কেউ লিখছেন, 'বীরভূমে একজনই বাঘ, তিনি অনুব্রত মণ্ডল'। আবার কাজলের ভিডিয়োতে কেউ লিখছেন, 'সিংহের গর্জন কাজলের', কেউ লিখছেন, 'ওদের বাঘ থাকলে আমাদের ভাইজান সিংহ'।

অনুব্রত মন্ডল অনুগামী সিউড়ি ২ নং ব্লক এলাকার বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম দুদিন আগে অনুব্রত মণ্ডল কে নিয়ে এআই ভিডিওটি বানান। এদিন তিনি বলেন, "অনুব্রত মন্ডল মানে আবেগ, তিনি বীরভূমের রাজনীতির মহাগুরু। শুধু জেলার মানুষ নয়, রাজ্যের বহু নেতাই প্রকাশ্যে অনুব্রত কে রাজনীতির বাঘ বলে ঘোষনা করেছে। তিনি সিপিএম মত দলকে বীরভূম থেকে শেষ করেছে। তিনি বীরভূমের বাঘ।" তবে এখানেই না থেমে কাজল শেখের ছবি এআই হওয়া নিয়ে নাম না করে কটাক্ষ করছেন তিনি। আমিনুল বলেন," কাক মযূরের পেখম লাগালে ময়ূর হয় না।"

যদিও পাল্টা যুক্তি দিয়েছেন কাজল শেখ অনুগামী মীর রাজ। তিনি আবার তৃণমূলের সাইবার সেলের এডমিন সেক্রেটারি।তার কথায়," বনের রাজা সিংহ। যাকে দেখে বাঘ সহ অন্য জন্তুরাও পালিয়ে যায়। কাজল শেখ এমনই একজন নেতা যিনি সবাই রাজা। রাজনীতি তিনি মহান ব্যক্তিত্ব। "

সোশ্যাল মিডিয়ায় এই বাঘ বনাম সিংহের প্রতীকী লড়াই বেশ আলোড়ন ফেলেছে। পোস্ট, শেয়ার, কমেন্টে ছড়াচ্ছে দুই শিবিরের কথার লড়াই। তবে অনেকের মতে, পুরনো ও পরীক্ষিত নেতা অনুব্রত মণ্ডলের জনপ্রিয়তা এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে। তাঁর অনুগামীদের সক্রিয়তা ও সোশ্যাল মিডিয়ার দখল কিছুটা হলেও বেশি—এমনটাই মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের।

সব মিলিয়ে, রাজনীতির ময়দানে যেমন প্রতিযোগিতা তীব্র, ঠিক তেমনই ডিজিটাল দুনিয়াতেও এখন তৃণমূলের দুই শিবিরের লড়াই বেশ জমজমাট! আগামী দিনে এই প্রতিযোগিতা কোন দিকে মোড় নেয়, সেদিকেই তাকিয়ে বীরভূমবাসী।যদিও কাজল শেখ নিজে দাবি করছেন, আমার কোন অনুগামী নেই। আমি এই ভিডিও দেখিনি। আমি আমার এই ধরনের প্রচার পছন্দ করি না। আবেগের বসে কেউ করে থাকতে পারে। "

অনুব্রত মন্ডলের অবশ্য সাফ কথা, "দারুণ বানিয়েছে কিন্তু, পাশ থেকে বিকাশদা দেখছে বাঘটাকে ৷" 
অনুব্রতর জেল থেকে প্রত্যাবর্তনের পরেও দূরত্ব কমেনি কাজল-কেষ্টর ৷ ইদানিং সেই দূরত্ব যেন অনেক বেশি ৷ শুধুই যে দুই নেতার মধ্যে মতানৈক্য তা নয়, দুই নেতার অনুগামীদের মধ্যেও সোশাল মিডিয়ায় বাকযুদ্ধ অব্যাহত ৷ কখনও ব্যাঙ্গাত্মক পোস্ট, কখনও নিজ নিজ পছন্দের নেতাকে বড় করে দেখানো, কখনও বা কটাক্ষমূলক পোস্ট, এই নিয়েই সরগরম বীরভূমের রাজনীতি ৷