বন্ধুত্বেও লাগল রাজনীতির রং। পাহাড়ে পিকনিকে গিয়ে তৃণমূল নেতার নগ্ন ছবি তুলে পরে তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করে দেওয়ার অভিযোগ বিজেপি সমর্থক বন্ধুর বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় এলাকারই এক প্রভাবশালী বিজেপি নেতার মদত রয়েছে বলেও অভিযোগ।
মালদহের রতুয়া বিধানসভা কেন্দ্রের বাহারাল পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্যা তনুশ্রী মিশ্রের স্বামী বিশু মিশ্র। এলাকায় তৃণমূল নেতা হিসেবেই পরিচিত এই বিশু মিশ্র। তাঁরই নগ্ন ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। এই ঘটনায় মালদহের রাজনৈতিক মহলেও শোরগোল পড়ে গিয়েছে। ওই তৃণমূল নেতা তাঁর খুবই কাছের এক বন্ধু ইমাদ শেখ-সহ রতুয়ার এক প্রভাবশালী বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছেন।
রতুয়ার তৃণমূল নেতা বিশু মিশ্র বাহারাল অঞ্চল কমিটির আহ্বায়ক পদেও রয়েছেন। তিনি তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক আব্দুর রহিম বক্সীর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। বিশুবাবুর স্ত্রী তৃণমূল পরিচালিত বাহারাল গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যা এবং শসাকদলের এলাকার দাপুটে নেত্রী হিসেবে পরিচিত। এই বিষয়টি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই বিজেপির বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন বলেই দাবি করেছে দলের জেলা নেতৃত্ব।
রতুয়ার তৃণমূল নেতা বিশু মিশ্র জানান, কিছুদিন আগে উত্তর পূর্ব-ভারতে ভ্রমণে বন্ধুদের সঙ্গে বেড়াতে গিয়েছিলেন তিনি। তিনি বলেন, ''আমি যেমন তৃণমূল করি, তেমনই আমার কয়েকজন বন্ধু বিজেপি করে। আমার সঙ্গে চক্রান্ত করে এরকম আচরণ করা হবে তা ভাবতেই পারিনি। পাহাড়ে ঘুরতে যাওয়ার পরেই ঠাণ্ডা পানীয়ের সঙ্গে নেশার দ্রব্য মিশিয়ে আমাকে খাওয়ানো হয়। তারপরে বিজেপি কর্মী ইমাদ শেখের থেকে নেতৃত্বে আমার পোশাক খুলে নেওয়া হয়। সে সময় আমি অপ্রকৃতস্থ অবস্থায় ছিলাম। নিজেও বুঝতে পারিনি ওরা কি করতে চলেছে। পরে যখন স্বাভাবিক হই, তখন ওরা আমাকে সেই ছবি দেখায়। আমি বারবার বলি এটা বড় অন্যায় হয়েছে। বন্ধুত্বের মধ্যে রাজনীতির রং রাখা মোটেই ঠিক নয়। ইমাদ ও আমার সঙ্গে যে আরও দু'তিন জন ছিল ওরা বিজেপি করে। আমি তৃণমূল করি। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশেই এই ধরনের আচরণ করেছে ওরা।''
আরও পড়ুন- জোগান কমেই দাম চড়া, সাধের ইলিশ ছুঁতেই যেন হাত কাঁপে আম-বাঙালির
তৃণমূল নেতা বিশু মিশ্রের আরও অভিযোগ, ''আমিও একসময় বিজেপি করতাম। বিধানসভা নির্বাচনের পর তৃণমূলে যোগ দিই। এতেই ওদের মাথাব্যাথার কারণ হয়ে উঠেছিলাম। এভাবে আমাকে নগ্ন করে মোবাইলে ভিডিও করে পরে যে সেটা ভাইরাল করে দেবে তা আমি ভাবতেই পারছি না। আমি যাকে বন্ধু বলে মনে করতাম তার বিরুদ্ধে এবং রতুয়ার প্রভাবশালী এক বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে মানহানির মামলার অভিযোগ জানিয়েছি। আমি মর্মাহত। এখন তো প্রাণনাশেরও আশঙ্কা করছি।''
আরও পড়ুন- পুজোর মুখে ফের তৈরি হচ্ছে নিম্নচাপ, প্রবল বৃষ্টিতে ভেসে যাবে একাধিক জেলা
যদিও এপ্রসঙ্গে বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক অম্লান ভাদুড়ী বলেন, ''এটা তৃণমূলের অপসংস্কৃতি। নিজেরা উত্তেজক পানীয় সেবন করে কোথায় কি করে বেড়াবেন, আর তার দোষ বিজেপির ঘাড়ে এসে পড়বে। সেটা মেনে নেওয়া যায় না। এটা ওদের দলের গোষ্ঠী কোন্দোলের জের। যে ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে তা দেখে মানুষ বুঝছে তৃণমূলের আচরণ এবং চরিত্র।''
আরও পড়ুন- আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন রেজাউলের, ফাইভের গণ্ডি পেরনো যুবকই বানাচ্ছেন আস্ত হেলিকপ্টার
অন্যদিকে, তৃণমূলের জেলা মুখপাত্র শুভময় বসু বলেন, ''বন্ধু হয়ে বন্ধুর সঙ্গে যদি রাজনীতি করে তাহলে মানবিক বলে সমাজে আর কিছু থাকবে না। এই ধরনের ঘটনার আমরা তীব্র নিন্দা করছি। পিকনিকের আসরে দলের একজন নেতার এরকম অশ্লীল ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করে দেওয়া হল। তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।''